শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > ৬৪৩ ইউপিতে ভোট বৃহস্পতিবার

৬৪৩ ইউপিতে ভোট বৃহস্পতিবার

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

দ্বিতীয় ধাপে ৬৪৩টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট হবে আগামী (বৃহস্পতিবার) ৩১ মার্চ। নিয়ম অনুযায়ী, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই সব ধরনের প্রচার বন্ধ থাকবে। ভোট প্রার্থনায় শেষ মুহূর্তের ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। প্রথম ধাপে নির্বাচনী সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় শঙ্কিত সাধারণ মানুষ।

ইসি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৩১ প্রার্থী ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অবশিষ্ট ৬১২ ইউপির মধ্যে আড়ইশ ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। শতাধিক ইউপিতে বিদ্রোহীদের অবস্থান শক্তিশালী। প্রথম ধাপে বেশিরভাগ সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ক্ষমতাসীনদের মাঝে হওয়ায় দ্বিতীয় ধাপে বিদ্রোহীদের এই সংখ্যা আবারও সহিংস নির্বাচনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সরকার বিশ্লেষকরা।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাংগঠনিক নিয়মে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে প্রথম চিঠি দেয়া হয়েছে। দলের স্বার্থ যারা না ভাবে, তাদের ঠিকানা দলে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।

এদিকে দ্বিতীয় ধাপে ৭৯ ইউপিতে বিএনপির কোন প্রার্থী নেই। দলটির অভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হুমকি এবং বাধার মুখে সত্তরের বেশি ইউপিতে বিএনপি প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি।

অন্যান্য ইউপিতে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদেরও প্রচারে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। চাপের মুখে পঞ্চাশের অধিক ইউপিতে বিএনপি প্রার্থীরা মৌখিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে কয়েকটিতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে বসে পড়ার অভিযোগও উঠেছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘন, হুমকি, প্রচারণায় বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগী প্রার্থীরা। ইসির দাবি, অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ অভিযোগ ভিত্তিহীন হওয়ায় ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। সত্যতা পেলে, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে দলীয় (স্বতন্ত্র প্রার্থীও আছে) এবং মেম্বার (সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য) পদে নির্বাচন হচ্ছে নির্দলীয়। চেয়ারম্যান পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ২ হাজার ৬৮৪ জন এবং মেম্বার পদে প্রায় ত্রিশ হাজার প্রার্থী রয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫০৭ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ১ হাজার ১৭৭ জন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৬৪২ জন, বিএনপির ৫৬৪ জন, জাতীয় পার্টির ১৫৬ জন, জাসদের ২৪ জন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের ১ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ৬ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৯২ জন, জেপির ৫ জন, এনপিপির ২ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের ২ জন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৫ জন প্রার্থী।

এছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ১ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ১ জন, খেলাফত মজলিসের ১ জন, বাসদের ১ জন, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের ১ জন ও জাকের পার্টির ৩ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রচারণার শেষ মুহূর্তে এসে বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। দিনভর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হচ্ছেন। মাইকিং ও গণসংযোগ করে ব্যস্ত দিন পার করছেন কর্মী-সমর্থকরা। হাটবাজার, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই নির্বাচনের আলোচনা। তবে প্রথম ধাপে সহিংসতার ঘটনায় এবং দ্বিতীয় ধাপে বিভিন্ন স্থানে চলমান সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বিগ্ন ভোটাররা।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ব্যালট পেপারসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকছে আগের মতোই। তবে সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য ভ্রাম্যমাণ ও বিশেষ বাহিনীকে আরও একদিন বেশি অর্থাৎ ৫ দিন রাখার চিন্তা চলছে।