স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হয়েছে অনেক আগেই এর ফলে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পরেছে ৩০ জন মন্ত্রী ফলে মন্ত্রিসভা থেকে বাদপড়া ৩০ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে ২৬ জনই নির্ধারিত সময়ে সরকারি বাড়ি ছাড়েননি। এখনো তারা সেখানে বসবাস করছেন। কিন্তু মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার আইন অনুযায়ী, পদত্যাগের পর একমাস পর্যšত্ম তারা সরকারি বাড়িতে থাকতে পারেন।
মহাজোট সরকারের ৩০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে ২ মন্ত্রী ও ২ প্রতিমন্ত্রীকে আইন মানতে দেখা যায়। তারা সময় মত বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ‘ভিভিআইপি’ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং পরিদপ্তর তাদের বাড়ি ছাড়তে তাগাদা দেবে না বলে জানিয়েছে। গত ২১ নভেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন ১৬ জন মন্ত্রী ও ১৪ প্রতিমন্ত্রী। এদের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব চালিয়ে আসা দীলিপ বড়ুয়া ছাড়া বাকি সবাই আওয়ামী লীগের।
মন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়েন- মহীউদ্দীন খান আলমগীর, দীপু মনি, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, শফিক আহমেদ, দীলিপ বড়ুয়া, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, সাহারা খাতুন, রেজাউল করিম হিরা, আবুল কালাম আজাদ, এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, আফসারুল আমীন, আ ফ ম রুহুল হক, আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ।
এর মধ্যে দীলিপ বড়ুয়া ও শফিক আহমেদ মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়লেও মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হয়েছেন।
অন্যদিকে প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়েন- জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, এ বি তাজুল ইসলাম, ইয়াফেস ওসমান, আহাদ আলী সরকার, মো. শাহজাহান মিয়া, আব্দুল মান্নান খান, মো. মোতাহার হোসেন, মোহাম্মদ এনামুল হক, মজিবুর রহমান ফকির, ওমর ফারুক চৌধুরী, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আব্দুল হাই ও মেহের আফরোজ চুমকি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী নির্বাচনকালীন ‘সর্বদীয়’ সরকার গঠনে অন্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এরা পদত্যাগপত্র তুলে দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি এদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলে তারা মন্ত্রিসভা বাদ পড়েন।
আইন অনুযায়ী, গত ২১ নভেম্বরের (পদত্যাগের দিন থেকে এক মাস) মধ্যে পদত্যাগ করা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের সরকারি বাড়ি ছাড়ার কথা।
সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম রোববার বিকালে জানান, পদত্যাগ করা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে দুই-একজন সরকারি বাড়ি ছেড়েছেন।
এদের নাম না জানিয়ে তিনি বলেন, “বাকিরা বাড়ি ছাড়েননি। ছাড়বেন কি না, তাও জানান নি।”
তবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে আফসারুল আমীন এবং লতিফ বিশ্বাস আইন মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারি বাড়ি ছেড়েছেন।
প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে মোতাহার হোসেন এবং মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার সরকারি বাড়ি ছেড়েছেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি না ছাড়ায় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কোনো তাগাদা দেয়া হবে কি না- জানতে চাইলে আশরাফুল বলেন, “ভিভিআইপিদের রিমাইন্ডার দেয়া যায় না। রিমাইন্ডার দেয়াও হবে না।”
পদত্যাগ করা মন্ত্রীরা আইন মানছেন না- এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “সরকারি বাড়িতে তারা যত দিন বেশি থাকবেন, ইচ্ছে করলে তাদের ততদিনের জরিমানা করা যাবে।”
আশরাফুল জানান, নির্ধারিত সময়ে বাড়ি না ছাড়তে চাইলে বাড়ি ভাড়ার অতিরিক্ত ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যšত্ম অর্থ জরিমানা করা যায়।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব খোন্দকার শওকত হোসেন বলেন, “কেউ কেউ (মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী) বাড়ি ছেড়েছেন। কেউ কেউ ছাড়ছেন, কেউ কেউ বাড়ি ছাড়ার পর্যায়ে আছেন।”
২২ ডিসেম্বর পর্যšত্ম কতজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বাড়ি ছেড়েছেন সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানাননি সচিব।
যেসব মন্ত্রী সরকারি বাড়ি ছাড়েননি তাদেরকে তাগাদা দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় সেটা লাগবে না।”
