২২ কোটি টাকায় নদীর উপর নিচু ব্রিজ নির্মাণ, প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

সাদিকুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার
গাজীপুরে সবচেয়ে দ‚ষিত নদী লবনদহকে বাঁচাতে এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদীরা যখন প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে, ঠিক ওই মুহুর্তে নিচু ব্রিজ নির্মাণ করে নৌচলাচল বন্ধের মাধ্যমে নদীর অস্তিত্ব বিলিনের মত মারাত্মক আত্মঘাতী কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর।
সওজ এর প্রকৌশলীরা বলছেন, “লবনদহ তো কোন নদী না, ওটা একটা খাল”। অথচ বর্ষায় এই নদীই হয়ে ওঠে পণ্য পরিবহন, নৌকা ভ্রমণ ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের অভিবাসীদের বাড়ি ফেরার একমাত্র সহজ ও সাশ্রয়ী মাধ্যম। আর সেই নদীর নৌচলাচল বন্ধে যেন মরিয়ে সওজ গাজীপুর।
তারই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে “ব্রীজের উচ্চতা যেন নদীপথের বাঁধা না হয়” লেখা ব্যানারে মানববন্ধন কর্মস‚চি পালন করেছে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল ও এলাকাবাসী। সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমানের সঞ্চালনায় সদর উপজেলার পক্ষে বক্তব্য রাখেন সদর কমিটির উপদেষ্টা ও সাহিত্যিক শাহান শাহাবুদ্দিন, সার্ভেয়ার খোরশেদ আলম, সভাপতি কে,এম, জাহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাইসুল ইসলাম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আইয়ুব খাঁন, জহিরুল ইসলাম, হাসান আলী সরকার প্রমুখ। শ্রীপুরের পক্ষে প্রতিবাদি কথা বলেছেন শ্রীপুর কমিটির সভাপতি ও কলামিস্ট সাঈদ চৌধুরী। এছাড়াও মানববন্ধনে প্রতিবাদি কথা বলেছেন লবনদহ পারের সাধারণ মানুষ, জেলে, শিক্ষার্থী, নৌকাচালক সহ ওই এলাকার উত্তরাঞ্চলের অভিবাসীদের একটি অংশ। কবি শাহান শাহাবুদ্দিন আক্ষেপ করে বলেছেন, সওজ দখলে দ‚ষণে মৃতপ্রায় লবনদহের মুখে নিচু ব্রীজ করে যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ দিয়েছে। নিচু ব্রিজটি দেখে মনে হচ্ছে মৃত্যু নিশ্চিত করতে লবনদহের গলা টিপে ধরেছে সওজ।
মানববন্ধনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সরেজমিনে ব্রীজটিকে কোন ভাবেই নৌচলাচলের উপযোগী মনে হয়নি। মুঠোফোনে সব ঠিক আছে মন্তব্য করেছেন সওজ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী সালাম। তিনি জানান, প্রায় ৭৩ মিটার ব্রীজ ও ১২ শ মিটার সড়ক সহ কাজটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি টাকা।
নদী রক্ষা কমিশনের উপজেলার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। তবে সওজ এর নির্মাণ গতি বিফল করে দিতে পারে সকল আশ্বাস। প্রয়োজন জরুরি ভিত্তিতে পুনঃ বিবেচনার মত মহাগুরুত্বপ‚র্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
সওজ গাজীপুর এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে এম শরিফুল আলম মুঠোফোনে বলেন, আমরা সকল নিয়ম মেনেই কাজ করছি। ডিজাইনে আগের ব্রীজের চেয়ে বেশি উচ্চতাও রাখা হয়েছে। তাছাড়া লবনদহকে আসলে নদী বললেও এটি একটি খাল।