স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিতর্কিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে ২২ অক্টোবর রামপালে অবস্থান কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। থাকছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচিও।
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার জন্য তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার ১১টায় মুক্তি ভবনে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।
তেল-গ্যাস কমিটির ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২২ অক্টোবর রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
যদিও ৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় রামপালের ফলক উন্মোচন করেন।
২২ অক্টোবর রামপালে অবস্থান কর্মসূচি আসতে পারে। আর অবস্থান কর্মসূচি থেকে হরতালসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে চায় জাতীয় কমিটি।
সূত্রটি জানান, ঈদের আগেই সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি। আর ঈদের পরে থাকছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি।
এ বিষয়ে তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ জানান, ঈদ ও পূজাকে বিবেচনায় নিয়ে কর্মসূচি দেওয়া হবে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) পুরোপুরি সংবাদ সম্মেলনেই বলতে চাই।
২২ অক্টোবর কোন কর্মসূচি থাকছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি কর্মসূচি পরিকল্পনায় আছে। দেখি কি হয়।
তিনি জানান, সরকার জনগণের ভাষাকে বুঝতে চেষ্টা করছে না। তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমরা সুন্দরবনের জন্য হুমকি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে দিতে পারি না। প্রতিরোধ করতে যে ধরণের কর্মসূচি প্রয়োজন, দেওয়া হবে।
রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সুন্দরবন ধ্বংসকারী উল্লেখ করে প্রতিবাদে সোচ্চার রয়েছে তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
এরই মধ্যে সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠনটি। ওই কর্মসূচিতে জনতার অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো। কিন্তু সরকার তাদের পরিকল্পনা থেকে একচুলও নড়েনি। বরং যখন লংমার্চ চলছিলো ঠিক সেই সময়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে ২২ অক্টোবর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের তারিখ ঘোষণা দেয়।
সরকার বরাবরই বলে আসছে তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ বিরোধিতাকারীদের বক্তব্য তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক নয়। তারা না জেনেই বিরোধিতা করছে।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে পরিবেশ ও সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না। আবেগের ভিত্তিতে নয়, বাস্তবতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী।
বাংলাদেশ- ভারত সরকারের যৌথ উদ্যোগে খুলনা ১৩২০ মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৮’শ ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ-ভারত ফেন্ডশীপ কোল পাওয়ার জেনারশন কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। প্রথম ইউনিট নির্মাণ কাজ শেষ হলে সেখানে সমান ক্ষমতার আরেকটি ইউনিট স্থাপন করা হবে। এতে মোট বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়বে প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর ভারতে সফরের সময় এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। আর আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় ২০১২ সালের জানুয়ারিতে।