বাংলাভূূমি ডেস্ক ॥
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভাইসহ তিনজন নিহত হন
২০১৮ সালে সড়কে ৫ হাজার ৫১৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ২২১ জন। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৬৬ জন। সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথের মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা ৬ হাজার ৪৮টি। এসব দুর্ঘটনায় মোট নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৯৬ জন। আহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৯৮০।
শুক্রবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে (ভিআইপি লাউঞ্জ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলেন ধরে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী গেল বছরে মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা, নিহত ও আহতের সংখ্যার পরিসংখ্যান তুলেন ধরেন। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার কারণ ও সুপারিশমালাও তুলে ধরেন তিনি।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘৫ হাজার ৫১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ২২১ জন। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৬৬ জন। আহতদের মধ্যে ১২৫২ জন চালক-শ্রমিক, ৮৮০ জন শিক্ষার্থী, ৩২১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৭৮৭ জন নারী, ৪৮৭ জন শিশু, ১০৬ জন শিক্ষক, ৪৩ জন সাংবাদিক, ৩৩ জন চিকিৎসক, ৯ জন প্রকৌশলী, ২ আইনজীবী, ১৯২ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী রয়েছেন।’
সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৭ হাজার ৩৫০টি যানবাহনের পরিচয় পাওয়া গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘এসব যানবাহনের মধ্যে ১৮.৯২ শতাংশ বাস, ২৮.৬৮ শতাংশ ট্রাক ও কাভ্যার্ডভ্যান, ৭.৯৩ শতাংশ কার জিপ ও মাইক্রোবাস, ৯.৬১ শতাংশ অটোরিকশা, ২৫.৩০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৩.৭২ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৫.৮০ শতাংশই ছিল নছিমন, করিমন ও হিউম্যান হলার।’
৪১.৫৩ শতাংশ গাড়ি চাপায়, ২৯.৭২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষে, ১৬.১৮ শতাংশ খাদে পড়ে, ০.৫৫ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ০.৮৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে এসব দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে বলে জানান যাত্রীকল্যাণ মহাসচিব।
২০১৮ সালের সড়ক দুর্ঘটনার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, ‘গত বছরের জানুয়ারি মাসে ৪৯৯ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫১৪ জন, আহত ১৩৫৩ জন। ফেব্রুয়ারিতে ৪৩৯ দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জন নিহত, আহত ১৫২১ জন; মার্চে ৪৯১ দুর্ঘটনায় নিহত ৫০৩ জন ও আহত ১৫০৬ জন; এপ্রিলে ৪৫১ দুর্ঘটনায় ৪৭১ জন নিহত ও আহত ১২২৩ জন; মে মাসে ৪৫৮ দুর্ঘটনায় ৪৮৪ জন নিহত ও আহত ১১২৭ জন; জুনে ৫২২ দুর্ঘটনায় নিহত ৬১৫ জন নিহত ও আহত ১৭৯০ জন; জুলাইয়ে ২৭৬ দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৫ জন ও আহত ১১২২ জন; আগস্টে ৪৯১ দুর্ঘটনায় নিহত ৫১৯ জন ও আহত ১৬৩৮ জন; সেপ্টেম্বরে ৪২৩ দুর্ঘটনায় নিহত ৫১৪ জন ও আহত ১১৬৬ জন; অক্টোবরে ৩৯৫ দুর্ঘটনায় ৪৯৫ জন নিহত, ৭৭০ জন আহত; নভেম্বরে ৪৩২ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৩ ও আহত ৯৭৯ জন এবং ডিসেম্বরে ৫৩৭ দুর্ঘটনায় ৫৮৪ জন নিহত ও আহত হন ১২৭১ জন।
দুর্ঘটনার পর ৬টি বিভাগীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২০৫ জন মারা যান বলেও উল্লেখ করেন যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, ফ্যামিলিজ ইউনাইটেড অ্যাগেনিস্ট রোড অ্যাক্সিডেন্ট (এফইউএআরএ) এর প্রধান এবং সাবেক পিএসসির চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ, বিএফইজের সহ-সভাপতি ইশতিয়াক রেজা, বিশিষ্ট সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ।