সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > আন্তর্জাতিক > ১৪ বছরে একদিনও স্কুল ফাঁকি দেয়নি আনুশকা

১৪ বছরে একদিনও স্কুল ফাঁকি দেয়নি আনুশকা

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
একদিনের জন্যেও কিছুই তাকে দমাতে পারেনি। না রোদ, না বৃষ্টি, না ঝড়, না অসুস্থতা। টানা ১৪ বছর প্রতিদিন স্কুলে হাজির হয়েছে!

এমন নজিরবিহীন হাজিরায় সদ্যপ্রাক্তন ছাত্রী আনুশকা সাবুইকে পুরস্কৃত দিয়েছে ভারতের হাওড়ার চন্দননগরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে পুরস্কার পাওয়ার পর কিঞ্চিত আফসোস আনুশকার কণ্ঠে, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জন্য গত মাসে তিন-চার দিন কলেজে যেতে পারিনি। না হলে ছয় মাসে কলেজেও কোনও দিন কামাই হত না। তবে সে কলেজে যায়নি বিষয়টা এমন নয় । আনুশকা জানায়, হাওড়া পর্যন্ত গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে। কারণ কলেজের সামনে গিয়েও পানি জমেছিল।’
হাওড়ার চন্দননগরের বড়বাজারের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী সুজিত সাবুইয়ের দুই মেয়ের মধ্যে আনুশকা ছোট। বড় মেয়ে অনসূয়া ওই স্কুলেই পড়তেন। তিনিও কোনও দিন স্কুল কামাই করেননি। আট বছর আগে তিনি স্কুল থেকে পাস করে যান। তখন স্কুলে হাজিরার জন্য পুরস্কার চালু হয়নি।

দিদির দেখানো পথে হেঁটেই এবার পুরস্কার জিতে নেন আনুশকা। ২০০৫ সালে ওই স্কুলের নার্সারিতে ভর্তি হন তিনি। এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে ভর্তি হয়েছেন। সম্প্রতি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, নিয়মিত উপস্থিতি থাকায় সহপাঠীদের বড় ভরসার জায়গা ছিলেন আনুশকা। কারণ, তাদের কেউ স্কুলে গরহাজির হলেও জানতেন, আনুশকা আছে।

স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, ‘আনুশকার ১০০ শতাংশ হাজিরা দেখে আমরাও অবাক। স্কুলের প্রতি এ ভালোবাসা নজিরবিহীন। আনুশকা অন্য ছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা।’

মেয়ের শরীর খারাপ হলে স্কুলে যেতে বারণ করতেন বলে জানান বাবা সুজিত বাবু। সুজিতবাবু বলেন, ‘‘কতদিন ওকে অসুখ-বিসুখে বাড়িতে বিশ্রাম নিতে বলেছিলাম। কিন্তু ও ওষুধ খেয়ে চলে গেছে। নিজে থেকে কোনো দিন স্কুলে যাবে না বলেনি। শুধু হাজিরা নয়, পড়াশোনার ক্ষেত্রেও ও খুব নিয়ম মেনে চলে।’