রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ১৪ বছরের যৌন দাসত্ব থেকে মুক্ত পলিন

১৪ বছরের যৌন দাসত্ব থেকে মুক্ত পলিন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: উগান্ডার বিদ্রোহী গ্রুপ দ্যা লর্ডস রেজিস্টেন্স আর্মি বা এলআরএ শিশুদের অপহরণ করে শিশু সৈন্য ও যৌনদাস হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কুখ্যাত। এলআরএ’তে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আটক থাকার পর সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে পলিন নামের একটি মেয়ে। বিবিসির কাছে বর্ণনা করেছেন তার অভিজ্ঞতার কথা।

পলিনকে যখন তার বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয় তখন তার বয়স চিল ১২বছর। আর যখন তিনি সেখান থেকে পালিয়ে আসেন তখন তিনি ২৬ বছরের তরুণী। বাবা মা, ভাইবোন, স্কুলের সহপাঠীদের ছেড়ে হঠাৎ করে যে এক পরিবেশে পড়লেন সেটা ছিল পলিনের কাছে একেবারেই ভিন্ন একটা জগৎ। যেটা মোটেও তার কাম্য ছিল না।

পলিন বলেন, একযুগের বেশি সময় আমাকে সেখানে কাটাতে বাধ্য করা হয়। সেসব দিনগুলোতে আমি একেবারেই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আমাকে রান্না করতে বাধ্য করা হতো। আর তাদের যৌন সঙ্গী হতে বাধ্য করত। আমার ওই বয়সে সেই অভিজ্ঞতা ছিল ভয়ঙ্কর।

সেন্ট্রাল আফ্রিকা, বিশেষ করে উগান্ডায় লস রেজিস্টেন্স আর্মি বা এলআরএ বেশি সক্রিয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে তাদের নেতা জোসেফ কোনিকে খুঁজছে আন্তর্জাতিক আদালত। সেই জোসেফ কোনেকে কাছ থেকে দেখেছেন পলিন। অনেকে বলেন, এই ব্যক্তির একটা আধ্যাত্মিক ক্ষমতা অছে। কিন্তু পলিন কীভাবে দেখেছেন তাকে।

পলিন বলেন, সবাই বলে পলির পবিত্র একটা ক্ষমতা আছে। কিন্তু আমি একেবারেই তা বিশ্বাস করি না। এমন কোন নোংরা কাজ নেই সে করে না। মাঝেমাঝে সে নির্দেশ দেয় হত্যা করার জন্য। পশুপাখি, মানুষ সবকিছু। আর তার লোকেরা সমানে জীবিত সবকিছুর ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

দিনের পর দিন এভাবেই কাটছিল পলিনের জীবন। কিন্তু হঠাৎ করে এক দুর্ঘটনার মধ্যে পড়ে যান তিনি। সেই দুর্ঘটনা জীবনের মোড় বদলে দেয় তার।

তিনি বলেন, আমার একটা দুর্ঘটনা হয়। আমার চিকিৎসার জন্য নাইরোবির একটা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে আমি একদিন পালিয়ে আসি। পরে কোনি আমার সাথে যোগাযোগ করে বলেন ফিরে যেতে। সে আমাকে বোঝাতে চায় আমি তার গ্রুপের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

পলিনকে তারা ফিরে পেতে চাচ্ছিল কারণ তাদের ভয় সরকারের কাছে পলিন তাদের সবকিছু ফাঁস করে দেবে। তারা বারবার তাকে ফোন করে এবং ফিরে যেতে বলে। এটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার আজ আমি যখন নিজেকে দেখি তখন আমার নিজেরই বিশ্বাস হয় না।

শিশু বয়সে যৌনদাসী হিসেবে অনেকে ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু লজ্জায় মুখ খোলেনি। তার জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো বিভিন্ন দেশের স্কুলগুলোতে গিয়ে শোনাচ্ছেন। শিশু অপহরণ সম্পর্কে সচেতন করা তার লক্ষ্য। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘে তার এ বিষয়ে বক্তৃতা দেয়ার কথা আছে। সূত্র: বিবিসি