রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > বিনোদন > ‘হাতে কাজ নেই, আমাকে একটা পার্ট দিন’

‘হাতে কাজ নেই, আমাকে একটা পার্ট দিন’

শেয়ার করুন

বিনোদন ডেস্ক ॥
সাম্প্রতিক সময়ের কাজ নিয়ে কলকাতার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন গুণী অভিনেত্রীও সুদীপ্তা চক্রবর্তী। সাক্ষাৎকারের বিষয় ছিল মূলত কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত আসন্ন ছবি ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’। কিন্তু সামনে চলে এলো আরো অনেককিছুই।

ঠিকই। মূলত দুই ভাইয়ের গল্প। আমাকে যখন কৌশিকদা ফোন করেছিল, বাবাকে (প্রয়াত অভিনেতা বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী) বাঁচানোর যুদ্ধ চলছে। এই গল্পের ঋতুদা (ঋতুপর্ণ ঘোষ) যে লাইনআপটা রেডি করেছিল, সেখানে তিন ভাই ছিল। মেজ ভাই ছিল এক জন। কৌশিকদা বলেছিল, আমি সেটাকে ভাই রাখব না। বোন করেছি। মজা পাবি রোলটা করে। আমি চাই তুই কর। ডেট নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। সেটা সলভ করেছিলাম। কৌশিকদা ‘কেয়ার অব স্যার’-এর অনেক দিন পরে ডাকল। কৌশিকদার এই ছবিটা করব বলে অন্য একটা ছবি ছেড়ে দিয়েছিলাম। অনেক পরে স্ক্রিপ্ট পেয়েছিলাম। তখন বুঝেছিলাম কেন করতে বলছিল। অথবা আপনার প্রশ্ন অনুযায়ী, আমি কতটা গুরুত্বপূর্ণ (হাসি)।

হ্যাঁ। তবে তার পর সেটা নিয়ে বসার আর সময় পাইনি। কারণ আমার জীবনে একটা সাংঘাতিক সময় চলছে তখন। বাবা চলে গেলেন ৩০ নভেম্বর ভোরে। ৪ ডিসেম্বর থেকে ডেট দেওয়া ছিল। ৩ তারিখ বাবার কাজ, যেটুকু নিয়ম মা চেয়েছিলেন আমরা তিন বোন করেছিলাম। সেটা শেষ করে ৪ তারিখ ভোরে রওনা হয়ে গেলাম। শান্তিনিকেতন। তখন মাথা প্রায় কাজ করছে না। আসলে কোনও কিছু নিয়ে শারীরিক, মানসিক ভাবে ব্যস্ত থাকার পর হঠাত্ করে ফাঁকা হয়ে যায় নাৃ। বাবা চলে যাওয়ার পর আমারও তাই হয়েছিল। ফলে লোকেশনে পৌঁছনোর আগে স্ক্রিপ্টটা রিয়ালাইজ করারই সময় পাইনি।

বাবার মৃত্যুর কাজ সেরে লোকেশনে পৌঁছলাম। সিন। সেখানেও বাবার মৃত্যু। সেখান থেকে ছবিটা শুরু। সুদীপ্তা আর ইলা (‘জ্যেষ্ঠপুত্র’-এ সুদীপ্তার চরিত্রের নাম) মিলে গিয়েছিল একেবারে! একদম। আমাদের জীবনটাই খুব অদ্ভুত। প্রথম সিনটাতেই আমি জানতে পারছি আমার বাবা মারা গিয়েছে। বাবা বলে চিত্কার করে কাঁদছি। শটে বাবা বলার পরের আধ ঘণ্টা কী হয়েছে, আমি জানি না। ইউনিট জানে। সেই একই ঘটনা আবার ডাবিং করার সময়েও হয়েছিল।

আসলে আমি বাবার কনিষ্ঠা কন্যা হলেও বাড়ির জ্যেষ্ঠপুত্র। অনেক সময় অনেক ইমোশন দেখানো যায় না। বাবা চলে যাওয়ার পর সে সময়টা সবাইকে ঠাণ্ডা মাথায় সামলে রাখা কাজ ছিল আমার। ইমোশন কন্ট্রোলে রাখতে হয়েছিল। কৌশিকদা তো বুদ্ধিমান পরিচালক। আমাকে বলেছিলেন, এই চার-পাঁচ দিন ধরে যেটা করতে পারিসনি, সেটা করে ফেল। যেটা আটকে আছে সেটা বের করে দিস সিনে।

আমি একেবারেই ওই স্কুলের নই যে টক্কর দিতে অভিনয় করব। ‘মেরে বেরিয়ে যাব’, এমন একটা মনোভাব থাকবে, এটা নয়। এই যে ‘বসু পরিবার’-এ এত চরিত্র রয়েছে। কিন্তু দর্শক এত নামী অভিনেতাদের মাঝেও আমার কাজ পছন্দ করেছেন। কী ভাবে সুদীপ্তা আউটশাইন করে গেলেন, বলছেন সবাই। সেটা করার আমার কোনও ইনটেনশন ছিল না, বা থাকে না। সুমন ঘোষ (‘বসু পরিবার’-এর পরিচালক) বলছেন, আমি ভাবতেই পারিনি তোমার রোলটা নিয়ে এত কথা হবে। আমিও এক্সপেক্ট করিনি। কারণ এটা সৌমিত্র-অপর্ণা নিয়ে কথা হওয়ার কথা। তার পর তার ছেলেমেয়ে। সেখান থেকে ‘পম্পি’ (‘বসু পরিবার’-এ সুদীপ্তার চরিত্রের নাম)-কে নিয়ে এত কথা। কিন্তু এখানে ‘ইলা’ যত ক্ষণ আছে সিনে, তত ক্ষণ ওর দিকেই চোখ থাকবে।

শুটিংয়ে আমি যে ক’দিন ছিলাম, কৌশিকদাকে বলে গিয়েছি, মনে হচ্ছে ঋতুদার স্ক্রিপ্টে কাজ করছি। কিন্তু স্ক্রিপ্ট ঋতুদার নয়। কৌশিকদার লেখা। বাড়িটাতেও মনে হয়েছিল ঋতুদার ছবির শুটিং করছি। ছবির গতিটা এত সহজৃ।

আমার জীবনে বুম্বাদার সঙ্গে প্রথম অভিনয় করতে গিয়ে, সেটা টেলিভিশনের জন্য, ওই চোখের দিকে তাকিয়ে ডায়লগ ভুলে গিয়েছিলাম। পরে বুম্বাদাকে বলেছিলামও সে কথা। আমার হিরো ছিল। এই রকম চোখ! এ কি মানুষের চোখ! যখনই কোনও ইমোশনাল ইনটেন্স সিন করতে হয়, বুম্বাদার চোখের দিকে তাকালেৃশেষ! নারীরা কী ভাবে বেঁচে থাকে আমি জানি না (হাসি)। অবিশ্বাস্য চোখ! চোখ দিয়েই অর্ধেক কথা বলে দেয়।

এপ্রিলেই দুটো ছবি হল আপনার। আর কী কী আসছে? না আপাতত কাজ নেই। এমনটাই জানালেন সুদীপ্তা। শুধু তাই নয়, প্রতিবেদকের নিকট কাজও চেয়ে বসলেন।