স্টাফ রিপোর্টার ॥
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের মামলায় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের প্রটোকল অফিসারকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামির নাম এবি সিদ্দিক দিপু। সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইল শহরে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক মঙ্গলবার সকালে সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল এই মামলায় গ্রেফতার হন -ইরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী মো. জাহিদ ও গাড়িচালক মিজানুর রহমান।
ধানমণ্ডি থানায় দায়ের করা ওই মামলায় এ নিয়ে চারজন গ্রেফতার হলেন।
এর মধ্যে হাজী সেলিমের ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদ এবং তার গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়।
ইরফান ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে গতকাল সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি করেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ।
গত রোববার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খান। ধানমণ্ডিতে কলাবাগান ক্রসিংয়ের কাছে সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ওই গাড়িতে ছিলেন হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান এবং তার লোকজন।
ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিয়ে গাড়িটিকে থামতে ইশারা করেন ও কথা বলতে চান। তখন তাকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন ইরফান ও তার লোকজন।
পরে গতকাল সকালে ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। এরপর শুরু হয় পুলিশ ও র্যাবের তৎপরতা।
গতকাল সকালে ইরফানের গাড়িচালক মিজানুর গ্রেফতার হয়েছেন। গতকালই আদালত তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এরপর সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার থেকে সাড়ে ৮ ঘণ্টা হাজী সেলিমের চকবাজারের ২৬ দেবীদাস ঘাট লেনে ৯ তলা সুরম্য অট্টালিকা ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ি’-তে অভিযান চালায় র্যাব।
সেখান থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র (একটি পিস্তল ও আরেকটি একনলা বন্দুক), উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৩৮টি ওয়াকিটকি, ৫টি ভিপিএস সেট, একটি দুরবিন, শক্তিশালী ইলেকট্রিক ডিভাইস, ৪০০ পিস ইয়াবা, সাত বোতল বিদেশি মদ ও বিয়ার, একটি হ্যান্ডকাফ (হাতকড়া), একটি ড্রোন, একটি ব্রিফকেসসহ অন্যান্য অবৈধ জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
রাত সোয়া ৮টার দিকে দ্বিতীয় ধাপে অভিযান শুরু হয় আশিক মদিনা টাওয়ারের ইরফান সেলিমের ‘টর্চার সেলে’।
সেখান থেকে ইলেকট্রিক শক দিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, আরেকটি দুরবিন, একটি হাঁড়ের খণ্ড, ছোরা, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়। রাত ৮টা ৩৪ মিনিটে শেষ হয় অভিযান।
দিনব্যাপী অভিযানকালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। অবৈধ ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার অভিযোগে তাদের এ দণ্ড দেয়া হয়।
এ ছাড়া বাসা থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় আজ পৃথক মামলা করবে র্যাব।