শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ফুটপাত দখল!

হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ফুটপাত দখল!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে গুলিস্তান জিপিও মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছেন অবৈধ দখলদাররা।

শুধু ফুটপাতই নয়, দখলদারদের দৌরাত্ম্যে দখল হয়ে গেছে এ রুটের এক তৃতীয়াংশ রাস্তাও। এতে রাস্তা সংকুচিত হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

আর এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ রুটে চলাচলকারী পথচারীরা। ফুটপাত দখল হওয়ায় পথচারীরা প্রধান সড়ক দিয়েই হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

পথচারীদের অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশেই গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ফুটপাত ফের দখল হয়েছে।

জানা যায়, একটি রিট আবেদনে গুলিস্তান জিপিও মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রাস্তা বাধাহীন করতে ২০১২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোট নির্দেশ দেন। পুলিশকে ৪৮ ঘণ্টার সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের নির্দেশে ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ফুটপাত ও রাস্তার ওপর গড়ে ওঠা সব দোকান, অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে পুলিশ।

উচ্ছেদের পর এক বছরের মধ্যে ফের দখল হয়ে যায় এ সব ফুটপাত। ফুটপাত দখলের সঙ্গে সঙ্গে যানজটের মাত্রাও বেড়েছে অসহনীয় পর্যায়ে। শুধু গুলিস্তান-সদরঘাটই নয়, দখলদারদের দখলে চলে গেছে নবাবপুর, ধোলাইখাল, গেণ্ডারিয়া, টিকাটুলী, বাংলাবাজার, ইসলামপুর, দয়াগঞ্জ, মিডফোর্ট, লক্ষ্মীবাজার, শাঁখারী বাজার, বাবুবাজার, চকবাজারসহ পুরান ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো।

স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফুটপাত দখল করে ব্যবসা ও গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে পুরান ঢাকার প্রতিটি সড়কে যানজট পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে। দখলের কারণে প্রধান সড়কের যানজট গিয়ে ঠেকেছে অলিগলিতে। এমন পরিস্থিতিতে এ এলাকার বাসিন্দারা অসহায় হয়ে পড়েছেন।

সড়কগুলো ঘুরে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে ‘বিহঙ্গ’, ‘ইউনাইটেড, ‘তানজিল’, ‘আজমেরী’, ‘সুপ্রভাত’, ‘ভিক্টর’, ‘স্কাইলাইন’ ও ‘সাত নম্বর’ পরিবহনের বাস কাউন্টার করা হয়েছে।

এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেট জুড়ে ও কলেজিয়েট স্কুলের সামনে করা হয়েছে লেগুনা (হিউম্যান হলার) স্ট্যান্ড। বাংলাবাজার ওভার ব্রিজের নিচে এবং সদরঘাটের প্রবেশধারে রয়েছে আরেকটি অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ড। রায়সাহেব বাজার মোড় ও নয়াবাজার মোড়ের মাঝামাঝি রাস্তার ওপর গড়ে উঠেছে অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড। উচ্ছেদ অভিযানের সময় স্ট্যান্ডটি তুলে দেওয়া হলেও রাস্তা দখল করে ফের স্ট্যান্ডটি বসিয়েছেন প্রভাবশালীরা।

বংশাল রাস্তার দুপাশে ফুটপাতের ওপর রাখা হয়েছে রড, সিমেন্ট, পাইপ, টিনশিট, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ নানান জিনিসপত্র।

এদিকে, সুরিটোলা থেকে ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত রাস্তাটি চলে গেছে স্যানিটারি ব্যবসায়ীদের দখলে। আর গুলিস্তান থেকে জিপিও মোড় পর্যন্ত ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে গড়ে উঠেছে কাপড়, জুতা, ফলসহ বিভিন্ন ব্যবসা।

এ কারণে গুলিস্তান-সদরঘাটের রাস্তায় যানজট পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

নবাবপুর থেকে গুলিস্তান সড়কটির দুই পাশে ফ্যান, ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন মেশিনারিজ ব্যবসায়ীদের দখলবাজিতে সাধারণ মানুষের চলাচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

নবাবপুরের বাসিন্দা হাজী সাইফুদ্দিন বাবুল বলেন, রাস্তা দখল করে ব্যবসা করায় কোনো গাড়ি এ এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে চলতে হয়।

নবাবপুরের মতো একই অবস্থা ইসলামপুর, চকবাজার ও মিটফোর্ডের এলাকার বিভিন্ন সড়কের। ইসলামপুরে কাপড়, চকবাজারে কসমেটিকস ও মিটফোর্ডে কেমিক্যালের ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও রাস্তায় মালামাল রেখে ব্যবসা করছেন।

এ ছাড়া সদরঘাট থেকে যাত্রাবাড়ী যাওয়ার পথে ধোলাইখালে লোহা ও পুরান গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী এবং দয়াগঞ্জ এলাকায় স্টিল ব্যবসায়ীরা সড়কটির বেশির ভাগ অংশ দখল করে ব্যবসা করছেন। অধিকাংশ সময় এ রাস্তায় দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে।

এ ব্যাপারে লালবাগ জোনের ডিসি হারুন বলেন, যানজট নিরসনের জন্য পুরান ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ট্রাফিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া এ সব এলাকায় যান চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা হচ্ছে।

হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফুটপাত দখলের ব্যাপারটি আমার নজরে নেই। দখল হয়ে থাকলে আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম