শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > হঠাৎ করে উচ্ছেদ অমানবিক

হঠাৎ করে উচ্ছেদ অমানবিক

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: রেল লাইনের দুধারে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সব ধরণের স্থাপনা শুক্রবার উচ্ছেদ করেছে কর্তৃপক্ষ। রাজধানীল কাওরানবাজার এলাকায় ঐদিন সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। ট্রেনে কাটা পড়ে ৪ জন নিহত হবার পর এই কার্যক্রম শুরু হয়। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে তারা শুধু অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করেছে কিন্তু বস্তিগুলো উচ্ছেদ করেনি। এবিষয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেন ‘সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ’ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, হঠাৎ করেই কর্তৃপক্ষের এমন উচ্ছেদ কর্মকান্ড অমানবিক। কিন্তু উচ্ছেদ তো করতেই হবে তবে তাদেরকে সময় দিয়ে এবং সব সময় সঠিকভাবে তদারকি করা উচিত।
বিবিসি : রেললাইনের ধারের স্থাপনাগুলো বার বার উচ্ছেদ করার পরেও কিছু দিন পর পর তারা আবার কেন ফিরে আসেন, গবেষণায় আপনারা কি দেখছেন?
নজরুল ইসলাম : আমরা গবেষণায় দেখেছি যে, ঢাকায় রেলের কোন জমিতে হোক বা অন্য কোন জমিতে হোক এসব স্থানে দরিদ্র মানুষের বসতি, বাজারসহ নানা স্থাপনা গড়ে ওঠে। মাঝে মাঝেই সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে তুলে দেবার চেষ্টা করে। তবে রেল কর্তৃপক্ষের তদারকি খুবই দুর্বল। তারা এটাকে সঠিকভাবে সামাল দিতে পারছে না। গত কয়েক বছরে এটার অবস্থা আরো ঢিলা হয়ে গেছে সেকারণে সেই নারায়ণগঞ্জ থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে কাওরানবাজার এবং কমলাপুর এলাকায় এমন অবৈধ স্থাপনার কর্মকান্ড চলছে। বিশেষ করে বাজার। এগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
বিবিসি : আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বস্তি উচ্ছেদ করা যায়নি। কিন্তু তাদের পুনর্বাসনের জন্য কি পদক্ষেপ নেয়া দরকার?
নজরুল ইসলাম : এটা অত্যন্ত আকস্মিক হয়ে গেছে যা খুবই দুঃখ জনক। একটা দুর্ঘটনা হল তার পর পরই রেলের পক্ষ থেকে এইভাবে পতিক্রিয়া দেখানো এটা মানবিক নয়। উচিত ছিল এটাকে সব সময় খেয়াল রাখা এবং বসতি গড়ে উঠতে না দেয়া। আর এই মুহূর্তে তাদেরকে না সরিয়ে কিছু দিন সময় দিয়ে নটিশ দিয়ে তার পর পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল। শক্ত হস্তক্ষেপ করা যায়, কিন্তু এইভাবে অমানবিকভাবে ভেঙে-চুরে নেয়া খুবই দুঃখ জনক। তবে হ্যা তাদেরকে সরাতেই হবে এটা ঠিক। আর একটা বস্তিতে শিশু মহিলারা সকলে মিলে একসঙ্গে বসবাস করে সেগুলোকে একটু সময় দিয়ে সরানোর নিয়ম আছে। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী তাদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে এবং যথেষ্ট সময় দিয়ে নটিশ করতে হবে।
বিবিসি : তাহলে মানবিক দিকসহ নানা বিষয় বিবেচনা করে রেল লাইন নিরাপদ রাখতে কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত?
নজরুল ইসলাম : এটাই আমি বলতে চাই যে সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি জরুরি। বেশ কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগের প্রথম সরকারের সময় তখন মো. নাসিম ছিলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই সময় একই ধরণের কাজ করা হয়েছিল। বিশ্বে সব দেশেই সিটি সেন্টারে যে রেল আসে তার দুই দিকেই যথেষ্ট প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। হয় দেয়াল দেয়া হয় বা অন্যকোন ব্যবস্থা নেয়া হয় যাতে কোন ঝুঁকি না থাকে। এখন বাংলাদেশ সরকারের যে গৃহায়ণ নীতিমালা আছে সেখানে রেল লাইনের ধারে এই ধরণের বসতি স্থাপন একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এর ব্যাবস্থা আগেই গ্রহণ করতে হবে। হঠাৎ করে অমানবিকভাবে উচ্ছেদ করা ঠিক না। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেই এটা করা উচিত তবে একই সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি করা উচিত যাতে করে এমন বসতি, বাজার বা অন্যকোন স্থাপনা না গড়ে ওঠে।