শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > স্যার আমি গরিব মানুষ, আমার কাছে টিকিট আছে টাকা নেই

স্যার আমি গরিব মানুষ, আমার কাছে টিকিট আছে টাকা নেই

শেয়ার করুন

ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলে ফেরা ট্রেন যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিট থাকা সত্ত্বেও অবৈধ ভাবে টাকা আদায়ের ঘটনায় রাজবাড়ী রেলওয়ে থানা পুলিশের (জিআরপি) সহকারী উপ পরিদর্শক (এ এস আই) আকসাতুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।গত মঙ্গলবার তাকে প্রত্যাহার করা হয়। একই সঙ্গে পাকশী রেলওয়ের পুলিশ সুপার মোঃ নজরুল ইসলামের নির্দেশে এ এস আইআকসাতুর রহমানকে রাজবাড়ী থেকে প্রত্যাহার করে পাকশীতে নেয়া হয়েছে।জানা যায়, রাজশাহী থেকে গোয়ালন্দঘাট রেলপথে চলাচলকারী আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেসের

টিকিট থাকা সত্ত্বেও যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা আদায় করেন রাজবাড়ী রেলওয়ে থানা পুলিশের ওই কর্মকর্তা।এ ব্যাপারে স্থানীয় সূত্র জানায়, রাজশাহী থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাটগামী আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহে চলাচল করে ছয় দিন। প্রতি বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বন্ধ থাকে। ঈদ পরবর্তী রোববার কালুখালী রেলস্টেশনে ট্রেনটি থামার পর নামতে শুরু করেন যাত্রীরা।এ

সময় ট্রেনের বাইরে প্লাটফর্মে এক যাত্রীর সঙ্গে টাকা নিয়ে বাগ-বিতণ্ডায় জড়ান যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এএসআই আকসাতুর। ট্রেন যাত্রী তাকে ৫০ টাকা দিতে চাইলে তা নিতে অস্বীকৃতি জানান।ওই সময় ট্রেন যাত্রী বলেন, স্যার, আমি গরিব মানুষ। টিকিট আছে। আমার কাছে অতিরিক্ত টাকা নেই। আজকের মতো এই টাকাই নেন।এ সময় ট্রেনের যাত্রীরা জানান, এএসআই আকসাতুর

রোববার টাকা তুলতে এসেছেন। একেক দিন একক পুলিশ সদস্য টাকা তোলেন। তারা সবাই রাজবাড়ী রেলওয়ে পুলিশের সদস্য।এ সময় ট্রেনযাত্রী মোঃ বাচ্চু বলেন, ‘আমি পাংশায় থাকি। রাজবাড়ীতে যাওয়ার জন্য দুটি টিকিট সংগ্রহ করেছি। আমার কাছে ২০০ টাকা চেয়েছে পুলিশ। টাকা দেইনি। তাই আমাকে কালুখালীতে নামিয়ে দিয়েছে ওই পুলিশ।এ সময় কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থেকে আসা যাত্রী আসাদুজ্জামান জানান, তারা গোয়ালন্দের টিকিট কেটেছেন। প্রতিটি টিকিটের দাম ৬২ টাকা করে রাখা হয়েছে। কোথাও জায়গা না পেয়ে

মালামালের বগিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। তাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছে পুলিশ। টিকিট দেখালে পুলিশ জানায়, এর কোন দাম নেই। টাকা দিতে হবেই আপনাদের বাধ্য হয়েই দিয়েছি। এদিকে টিকিট থাকা সত্ত্বেও ট্রেন যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা আদায়ের পর বিষয়টি কালুখালী রেলস্টেশনের মাস্টার ও রাজবাড়ী রেলওয়ে থানা পুলিশের ওসিকে জানান যাত্রীরা।এ বিষয়ে আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে ওই দিন দায়িত্বে থাকা পরিচালক মোক্তার হোসেন বলেন, ‘ঈদ পরবর্তীতে যাত্রীদের প্রচুর চাপ থাকায় আমি ব্যস্ত ছিলাম। কালুকালী স্টেশনে আসার পর যাত্রীদের থেকে এএসআই আকসাতুর রহমান টাকা নিয়েছেন বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। পরে জিআরপি ওসিকে বিষয়টি জানান যাত্রীরা।ওই সময় এ এসআই আকসাতুর টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তিনি ওই যাত্রীকে সিট দেখিয়ে দেয়ার জন্য সহযোগিতা করেছেন।’এদিকে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজবাড়ী রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর হোসেন বলেন, ‘আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এ এসআই আকসাতুর রহমানের বিরুদ্ধে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। যার প্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এ এসআই আকসাতুর রহমানকে রাজবাড়ী থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।এ ঘটনার দিন রাজবাড়ীর কালুখালী স্টেশনে জেলা প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনিই প্রথম এই ছবি তোলেন এবং একটি ভিডিও অনলাইনে প্রচারিত হয়। জেলা প্রতিনিধি বলেন, আমি পেশাগত কাজে ওই স্টেশন এলাকায় অবস্থান করছিলাম হঠাৎ এ কর্মকান্ড আমার চোখে পড়ে।