শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > স্যামসাংয়ের ভিআর নিয়ে তরুণদের উন্মাদনা

স্যামসাংয়ের ভিআর নিয়ে তরুণদের উন্মাদনা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: দেখতে একটু অদ্ভুত, কিন্তু গেমের জগতে হারিয়ে যেতে কিংবা পরাবাস্তব সিনেমার জগতে উপলব্দি করতে অসাধারণ যন্ত্র ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর)। এটি দিয়ে কৃত্রিম জগতকে সহজেই উপভোগ করা যায়। এই কৃত্রিম জগৎকে বাস্তবতার আরো কাছাকাছি নিয়ে আসতে মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এবং বিভিন্ন ধরণের ভিআর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অকুলাস নিয়ে এলো গিয়ার ভিআর হেডসেট। স্যামসাং ও অকুলাসের এই গিয়ার ভিআর হেডসেটটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ভবিষ্যৎ সর্ম্পকে ধারণা দেয়।

এই হেডসেটটি বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় শুরু হতে যাওয়া পঞ্চম স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপো-২০১৬ তে উন্মোচন করা হয়েছে। তবে হেডসেটটি দেশের বাজারে আসতে আরো কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। দেশের বাজারে এই হেডসেটটির মূল্য এখন ও নির্ধারণ করা হয়নি যদিও অ্যামাজন ডট কমে এর মূল্য দেওয়া আছে ৯৯ ইউএস ডলার।

স্যামসাংয়ের এই গিয়ার ভিআর হেডসেটটি বাজারের সর্বপ্রথম হেডসেট নয়। তবে এরই মধ্যে মাথায় পরিধানযোগ্য এই ভিআর হেডসেটটি মূলধারার মানুষের আগ্রহের বিষয়বস্তু হয়ে দাড়িয়েছে। অন্যান্য কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগীতায় এগিয়ে থাকতে স্যামসাং অকুলাসের সাথে একত্রিত হয়ে গিয়ার ভিআর হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার লাইব্রেরি তৈরি করেছে।

স্যামসাং গিয়ার ভিআর হেডসেটটির ডাইমেনশন হচ্ছে ২০১.৯ * ১১৬.৪ * ৯২.৬ মিলিমিটার । হেডসেটটি সহজেই বহনযোগ্য হওয়ায় স্মার্টফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন মুভি ও গেমস খেলা যাবে। তবে হেডসেটটি স্যামসাং এর গ্যালাক্সি নোট ৫, গ্যালাক্সি এস৬, গ্যালাক্সি এস৬ এজ, গ্যালাক্সি এস৬ এজ প্লাস সহ ২০১৬ সালে উন্মুক্ত হতে যাওয়া গ্যালাক্সি এ৫ এবং এ৭ এর মত কয়েকটি নির্দিষ্ট মডেলে ব্যবহার করা যাবে।

হেডসেটটিতে রয়েছে অ্যামোলিড ডিসপ্লে। হেডসেটটি জাইরো, এক্সিলেরোমিটার ও প্রক্সিমিটি সেন্সর ব্যবহার করে কৃত্রিম জগৎকে বাস্তবতার কাছাকাছি নিয়ে আসে। হেডসেটটি ওজনে খুবই হালকা। এর ওজন মাত্র ০.৭ এলবি।
হেডসেটটিকে মাথায় বাঁধার জন্য এতে আছে দুটি স্ট্রাইপ। স্ট্রাইপসহ হেডসেটটির ওজন হয় মাত্র ৩২০ গ্রাম।

গিয়ার ভিআর হেডসেটটির গঠন খুবই শক্ত। এর মূল অংশটি সাদা প্লাষ্টিকের তৈরি।এই সাদা অংশটির ডান পাশে রয়েছে টাচ সেনসেটিভ ডি প্যাড এবং রিসেট বাটন। টাচ প্যাডের মধ্যস্থলেই রয়েছে একটি অতিরিক্ত বাটন যা বাটনটি খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। এই বাটনটি মেনু আইটেম নির্ধারণে ব্যবহৃত হয় এবং গেইমস এর ক্ষেত্রে অ্যাকশন বাটন হিসেবে কাজ করে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি উপভোগের জন্য নির্দিষ্ট মডেলের স্মার্টফোনটিকে হেডসেটটির কালো প্লাষ্টিকের অংশটিতে প্রবেশ করাতে হবে। হেডসেটটির এই অংশটি সহজেই খোলা ও লাগানো যায়। হেডসেটের কালো অংশটি খুলে স্মার্টফোনটি বসিয়ে আবার কালো অংশটি আটকে দিতে হবে। চোখে চশমা দিয়ে ভিআর হেডসেটটি ব্যবহার না করাই ভালো।
তবে লেন্স ব্যবহার করে হেডসেটটি ব্যবহার করা যাবে। ডানদিকের টাচপ্যাড ও রিসেট বাটনের সামনেই আছে ভলিউম কন্ট্রোলার।

হেডসেটটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে গ্যালাক্সি এস৬, এস৬ এজ, এস৬ প্লাস এবং নোট ৫ ব্যবহারে কোন ধরণের অ্যাডজাস্টমেন্ট এর প্রয়োজন নেই। এর চার কোণায় রয়েছে তিনটি ভিন্ন ধরণের রাবার ট্যাব যা ফোনটিকে নিরাপদ রাখবে। ফোনের মাইক্রো ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে ফোনটিকে হেডসেটের সাথে যুক্ত করা হবে। গিয়ার ভিআর এর ডান দিকে রয়েছে একটি মেইল মাইক্রো ইউএসবি প্লাগ যা ফোনের ইউএসবি পোর্টের সাথে যুক্ত থাকবে। প্লাগযুক্ত সেকশনটিতে রয়েছে এ ও বি নামের দুটি অপশন।

এ অপশনটি রাখা হয়েছে নোট ৫ ও এস৬ এজ + এর জন্য এবং বি অপশনটি হচ্ছে এস৬ এবং এস৬ এজ এর মত ছোট ফোনগুলি ব্যবহারের জন্য। ভিডিও দেখার পাশাপাশি শব্দ শুনতে হেডসেটটির ভলিউম টোগল বাটনের পাশেই রয়েছে আলাদা একটি গ্যাপ যা দিয়ে ফোনের হেডফোনটি সরাসারি গিয়ার ভিআরের ভিতরে থাকা ফোনটির সাথে যুক্ত করা যাবে।

হেডসেটটির নিচের ডানদিকে রয়েছে একটি মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট যা দিয়ে হেডসেটের ভিতরে থাকা স্মার্টফোনটিকে চার্জ দেওয়া যাবে। গিয়ার ভিআর এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা সহজেই যে কোন মুখের সাথেই মানিয়ে যাবে।

হেডসেটটির ভিতরে রয়েছে দুটি লেন্স যার মধ্য দিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকাতে হবে। এই লেন্সগুলো ব্যবহারকারীকে ৯৬ ডিগ্রিতে দেখার অভিজ্ঞতা দেবে। ৩.৫ সেন্টিমিটার চওড়া এই লেন্সগুলোর মধ্যবর্তী ব্যবধান হচ্ছে ২ সেন্টিমিটার। লেন্সগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে একটি ছোট সেন্সর যা অব্যবহৃত সময়ে গিয়ার ভিআরের ভিতরে থাকা ফোনটিকে পাওয়ার সেভিং মোডে পাঠিয়ে দিয়ে ব্যাটারির চার্জ সংরক্ষনে সাহায্য করে।

স্যামসাং তাদের গিয়ার ভিআর হেডসেটটিকে লাইফস্টাইল প্রোডাক্ট হিসেবে অভিহিত করছে। প্রাত্যাহিক জীবনে এই হেডসেটটি নিকট ভবিষ্যতে টিভি, কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যদিও এটি একটি এন্টারটেইনমেন্ট ডিভাইস তবে হেডসেটটিকে মুভি দেখা ও গেম খেলার পাশাপাশি বিমান প্রশিক্ষণের মত বিভিন্ন ধরণের সিম্যুলেশনের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে। যাদের মোশন সিকনেস আছে তাদের টেম্পল রান এর মত গেম গুলো খেলার সময় সাবধান থাকা উচিত যেহেতু হেডসেটটি এর ব্যবহারকারীকে ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে দেখার অভিজ্ঞতা দেবে। বাংলামেইল২৪ডটকম