রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > আন্তর্জাতিক > স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধের জন্য ভারতীয় ফৌজকে তৈরি থাকার নির্দেশ

স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধের জন্য ভারতীয় ফৌজকে তৈরি থাকার নির্দেশ

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
গতবৎসরের সেপ্টেম্বরে উরিতে হামলার পরই জরুরি ও আপৎকালীন তৎপরতায় সেনাবাহিনীর জন্য গোলাগুলি ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেয় ভারত সরকার। আর এবার দেশের প্রায় ১৩ লক্ষ সেনাকে স্বল্পমেয়াদি তীব্র যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে বললেন দেশের উপ-সেনাপ্রধান। তার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের জোগানও দেবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। শত্রুর মোকাবিলায় যে কোনও অস্ত্র বা প্রযুক্তি কেনার জন্য যেন বাহিনী রুপির চিন্তা না করে, আশ্বাস দিল ভারত সরকার।
এমনিতেই এখন চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। সিকিম-ভুটান ও তিব্বতের সংযোগকারী লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই দেশেরই সেনা। কোনও কোনওদিন যে তাঁদের মধ্যে একটু হাতাহাতিও হচ্ছে না এমনটা নয়, যদিও দুই দেশের সেনাই এখন ‘নন-কমব্যাট মোড’-এ রয়েছে। চীনের সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন দেশের সেনাবাহিনীকে এই আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। আর একা চিন নয়, নয়াদিল্লির মাথাব্যথা বাড়িয়েছে ইসলামাবাদও। ‘লাইন অফ কন্ট্রোল’ বা নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে পাকিস্তান প্রায় প্রতিদিনই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের সেনাবাহিনীকে অল্প কয়েকদিনের তীব্র যুদ্ধের জন্য তৈরি রাখা তবে কী ইঙ্গিত দিচ্ছে?
উরিতে জঙ্গি হামলার পরই নড়েচড়ে বসেছিল দেশটির স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। জরুরি ভিত্তিতে রাশিয়া, ইজরায়েল ও ফ্রান্সের কাছ থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, সহজেই উড়িয়ে পর্বতের চূড়ায় নিয়ে যাওয়া যাবে এমন হালকা কামান, বুলেটপ্রুফ বর্ম ভেদ করতে পারবে এমন বুলেট ও দূরপাল্লার মিসাইল কেনার জন্য প্রায় ২০ হাজার কোটি রুপির চুক্তিতে স্বাক্ষর করে কেন্দ্র। নিশ্চিত করা হয়, অন্তত ১০ দিনের যুদ্ধের জন্য যেন রণতরী, যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক ও পদাতিক বাহিনী প্রস্তুত থাকে। কোনও বাহিনীকেই যেন গোলাগুলির চিন্তা না করতে হয়। অন্তত ৪৬টি ভিন্ন ধরনের গোলাগুলি, ২২ রকমের অস্ত্রশস্ত্র, হাফ ডজন মাইন ও ১০ রকমের সামরিক সরঞ্জাম কেনার সিদ্ধান্ত নেয় বাহিনী। যার জন্য আনুমানিক ৩৫-৪০ হাজার কোটি রুপি খরচ হবে। ইতিমধ্যেই ১২ হাজার কোটি রুপির ১৯টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গিয়েছে।
এবার ভারত সরকারের তরফে দেশের উপ-সেনাপ্রধানকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে অর্থের চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। যে কোনও সামরিক সরঞ্জাম কেনার দরকার হলে কিনতে পারে বাহিনীই। তার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই। দেশটির এই সিদ্ধান্তে খুশি সেনাও। ২০১৭-১৮ সাধারণ বাজেটে দেশের মিলিটারির জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ না করা হলেও এবার সামরিক সরঞ্জাম কিনতে ফাস্ট ট্র্যাক কাউন্সিল গঠনের খবরে খুশি জওয়ানরা। ক্যাগের একটি রিপোর্ট মোতাবেক, এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর কাছে একটানা ৬০ দিন যুদ্ধ চালানোর মতো পর্যাপ্ত গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম নেই। যা রয়েছে, তাতে বড়জোর ৪০ দিন পর্যন্ত তীব্র যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া যাবে। কিন্তু যে কোনওদিন চীন বা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের চরম অবনতি হতে পারে ও বেজিং বা ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে চরম পথ বেছে নিতে বাধ্য হতে পারে নয়াদিল্লি। তাই আগাম সতর্কতা নিয়েই এগোতে চায় দেশটির সরকার।
আমাদের সময়.কম