বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে নিজের গতিতে। সাম্প্রতিক সময়ের প্রযুক্তি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীকেও হার মানাতে চলেছে। গুগল ও মাইক্রোসফট এরই মধ্যে পরবর্তী প্রজন্মের স্পর্শবিহীন কম্পিউটার প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তি ব্যবহার করে আঙুলের স্পর্শ ছাড়াই কম্পিউটার পরিচালনা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটের সব কাজ করা যাবে। খবর মোটলি ফুলের।
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে দেখা যায় আঙুলের ছোঁয়া ছাড়াই যেকোনো প্রযুক্তি নিজের মনের ইচ্ছায় ব্যবহার করা যায়। হাত, চোখ এমনকি কণ্ঠের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে প্রায় সব ধরনের কাজই করা যায়। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বদৌলতে এখন এসব কাহিনী বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।
গুগলের তৈরি এ ধরনের একটি পণ্য হচ্ছে গুগল গ্লাস। গুগল গ্লাস পরিহিত গ্রাহকের চোখের সামনে যেকোনো বস্তুই স্পষ্ট হয়ে ধরা দেবে। বিশেষ এ চশমায় ওয়েব ব্রাউজিং থেকে শুরু করে মেইল চেক করা, ইন্টারনেটের যেকোনো চিত্র দেখা অর্থাত্ একটি কম্পিউটারের প্রায় সব কাজই করা যাবে। আর এটি চোখের সামনে থাকলেও যেকোনো বিষয়ের দর্শন হবে একদমই স্পষ্ট।
গুগল গ্লাসে যেকোনো বিষয় আট ফুট দূরে থাকা ২৫ ইঞ্চির এইচডি স্ক্রিনের মতো করে ধরা দেবে। এতে কোনো বিষয়ে নির্দেশ দেয়ার জন্য রয়েছে শব্দনির্ভর ব্লুটুথ প্রযুক্তি। মুখে বললেই গুগল গ্লাস গ্রাহকের প্রয়োজনীয় বিষয় সামনে হাজির করবে। যদিও এতে স্পর্শনির্ভর প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের পণ্যের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তির পথে যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। হাতের স্পর্শ ছাড়াই ব্যবহার করার সুবিধা থাকায় এ পণ্যের চাহিদা গ্রাহকদের কাছে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী সময়ে বাজারে এ পণ্যগুলোই রাজত্ব করবে বলে তাদের ধারণা।
সংবাদ মাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার তাদের এক জরিপে জানায়, আগামী সময়ে বাজারে গুগল গ্লাসের মতো স্মার্ট চশমার বিক্রি বিপুল হারে বাড়বে। ২০১৮ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে এ চশমার বার্ষিক বিক্রি ২ কোটি ১০ লাখে দাঁড়াতে পারে। এর মাধ্যমে বার্ষিক হিসাবে এ পণ্যের বাজার ১ হাজার ৫০ কোটি ডলার হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, স্মার্ট চশমা এখনো বাজারের মূল সে াতে আসতে পারেনি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই এ পণ্য প্রযুক্তি খাতের অন্যতম বাজারে পরিণত হবে। সেক্ষেত্রে শুধু এ চশমা দিয়েই গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল অর্থ উপার্জনে সক্ষম হবে।
এদিকে সফটওয়্যার কোম্পানি মাইক্রোসফটও এ ধরনের প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের গেমিং কনসোল এক্সবক্স ওয়ানের জন্য তৈরি মোশন সেন্সর ইনপুট ডিভাইস কাইনেক্টে পরবর্তী প্রজন্মের স্পর্শবিহীন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এ ডিভাইসের মাধ্যমে গেমাররা আরো উন্নত সেবা পাচ্ছেন বলে দাবি বিশ্লেষকদের।
ইনফোওয়ারস ডট কমের জানানো তথ্যমতে, এ পণ্যের মাধ্যমে এক্সবক্স ওয়ানে গেমিং কনসোলটি কোনো কক্ষে থাকা সর্বোচ্চ ছয়জনের কণ্ঠ শনাক্ত করতে পারবে এবং এ কণ্ঠগুলোর দেয়া আদেশ গেম কনসোলটি গ্রহণ করতে পারবে। কণ্ঠের মাধ্যমে চালিত এ কনসোল গেমারদের অভিজ্ঞতাকে আরো অনেক উন্নত করেছে। কারণ এর মাধ্যমে গেমাররা বিশ্বের আরো অনেক গেমারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কাইনেক্ট ডিভাইসের মাধ্যমে মাইক্রোসফটের গেম কনসোলগুলো শারীরিক যেকোনো অঙ্গভঙ্গি শনাক্ত করতে পারে। অর্থাত্ গেমারের আশপাশে কেউ এলে সে তথ্যও গেমারকে জানিয়ে দেবে। বিশ্লেষকদের মতে, কোন স্পর্শ ছাড়াই পরিচালিত নতুন এ প্রযুক্তি পণ্যগুলো খাতটিকে কয়েক ধাপ উপরে উঠিয়ে এনেছে। পরবর্তী প্রজন্মের স্পর্শবিহীন প্রযুক্তিগুলো এ খাতে বিপ্লব ঘটাবে।বি.বার্তা