বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: রাজশাহীর সাহসী সাংবাদিক, যমুনা টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান শিবলী নোমানকে অপদস্থ করতে সোশ্যাল মিডিয়ার আশ্রয় নিয়েছে একটি চক্র। ধারণা করা হচ্ছে, এজন্য তারা শিবলী নোমানের ছোট বোনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
শিবলী জানিয়েছেন, তার বোনের একটি পারিবারিক ছবির ওপর ফটোশপ সম্পাদনা করে নগ্ন নারীর ছবি জুড়ে দিয়ে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে এই অপচেষ্টা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
কে-বা কারা এ ঘৃণ্য কাজটি করেছে সে ব্যাপারে তিনি এখনো নিশ্চিত নন জানিয়ে শিবলী নোমান বাংলানিউজকে বলেন, এ-ব্যাপারে বোয়ালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি মামলা আকারে নিতে পুলিশ আইনগত দিকগুলো খতিয়ে দেখছে।
শিবলী নোমান জানান, গত শনিবারই এমন একটি নোংরা ছবি দিয়ে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে তা প্রথমে তার পরিবারের সদস্যদের নজরে আনা হয়। এতে আইডিতে দেওয়া তথ্যের সাথে তার বোনের শিক্ষা ও পারিবারিক সকল তথ্যের মিল রয়েছে। পরিবারের সদস্যের তালিকায় শিবলী নোমান ও তার স্ত্রীর নামই কেবল উল্লেখ করা হয়েছে।
শিবলী জানান, কেবল তার ও তার স্ত্রীর নাম উল্লেখ করায় এই ধারণা না স্পষ্ট হয়েছে যে, তাকেই টার্গেট করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আর এই নোংরামির বলি হয়েছেন ছোট বোনটি।
শিবলী জানান, অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের বোনটি এই ঘটনার আকস্মিকতায় একেবারেই মুষড়ে পড়েছেন। বিষয়টি তাকে সামাজিকভাবে হেয় করেছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
শিবলীর বোনটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করেন। রাজশাহীতে ভাইয়ের বাসায় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গেই বাস করেন তিনি।
বাংলানিউজকে শিবলী বলেন, পেশাগত জীবনে বিভিন্ন সময় রিপোর্টিংয়ের জন্য নানাভাবে হুমকি-ধমকি পেয়েছি, কিন্তু পিছপা হইনি। কিন্তু এই ঘটনায় আমার পুরো পরিবারকে একটি দুঃসহ যাতনার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমার পেশাগত অবস্থানের কারণে কারো মনে যদি আমার উপর ক্ষোভ বা দু:খ থেকে থাকে, তবে তিনি বা তারা আমার সঙ্গেই ব্যাপারে বোঝাপড়া করতে পারেন; আমার নির্দোষ বোনটিকে কেন সামাজিক ও মানসিকভাবে অপদস্থ করছেন তা আমি বুঝতে পারছি না।’
বিষয়টি সাহসিকতার সঙ্গেই মোকাবেলা করতে চান বলে জানান শিবলী নোমান। তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বিষয়টিতে দ্রুত প্রতিকার চেয়ে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
এছাড়াও ফেসবুক পেজটি বন্ধ করতে বিটিআরসির কাছেও একটি আবেদন জানিয়েছেন শিবলী নোমান। তিনি জানান, ৭ সেপ্টেম্বর বিটিআরসি চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন পাঠানো হয়েছে, আশা করি সংস্থাটি সদয় হয়ে দ্রুতই সেটি বন্ধ করার ব্যবস্থা নেবে।
তবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পেজটি বন্ধ হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে যারা এই অপরাধ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত তারা যে এখনো সক্রিয় তা ফেসবুকের ওই ভুয়া পেজটির আপডেট থেকে স্পষ্ট হওয়া যাচ্ছে। শিবলী জানান, ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম যখন পেজটি নজরে আসে তখন এর একটি নাম রাখা ছিলো যা ৭ সেপ্টেম্বর পাল্টে দেওয়া হয়। তবে প্রোফাইল পিকচার হিসেবে একই নগ্ন ছবি রয়ে গেছে।
বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইন চার্জকে দেওয়া অভিযোগপত্রে শিবলী নোমান পুরো বিষয়টির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হতে পারে পেশাগত কারণেই তার উপর ক্ষুব্ধ কোনো চক্র একাজ করছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম