বিনোদন ডেস্ক ॥
হুররাম সুলতানের পর অটোম্যান সাম্রাজ্যের অন্যতম মহিয়সী নারী হয়ে উঠে সুলতান আহমেদের সহধর্মিণী কোসেম সুলতান। এক সাধারণ গ্রীক বণিকের কোমলমতি মেয়ে ‘আনাস্তাসিয়া’ যে পরবর্তীতে ‘মাহপেইকার’ এবং সর্বশেষ ‘কোসেম’ উপাধি লাভ করে। হুররাম সুলতানের মতই বারবার প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের শিকার হয় কোসেম এবং সর্বশেষ পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিজেকে শক্তিমান করে তোলে।
ধীরে ধীরে কোসেম সুলতান এতটাই প্রভাবশালী হয়ে উঠে যে হুররাম সুলতানের মত লুকিয়ে নয় বরং প্রকাশ্যে সাম্রাজ্যের নানা বিষয়াদি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখে। এক পর্যায়ে কোসেমই সাম্রাজ্য পরিচালনা করে। দাসী আনাস্তাসিয়া থেকে কোসেম সুলতান হয়ে উঠা এই নারীর গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে মেগা সিরিয়াল ‘সুলতান সুলেমান : কোসেম’।
তুরস্কের ভাষায় নির্মিত সিরিয়ালটির বাংলায় ডাবিং করে দীপ্ত টিভিতে প্রচার শুরু হয়েছিলো গেল ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে। সুলতান সুলেমানের সপ্তম সিজন হিসেবে এটি ডপ্রচার হচ্ছিলো। আগের সিজনলোর মতোই জনপ্রিয়তা পেয়েছে নতুনটিও।
নতুন খবর হলো, আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুন) প্রচার হবে এই সিজনের সর্বশেষ পর্ব। দীপ্ত টিভির সিইও জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ‘শুরু থেকেই টিভি অনুষ্ঠানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ‘সুলতান সুলেমান’। আজ ৭টা ৩০ মিনিটে সপ্তম সিজনের শেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। যারা মিস করেছেন তাদের জন্য আগামী শনিবার, ২৩ জুন থেকে পুনঃপ্রচার করা হবে ‘সুলতান সুলেমান : কোসেম’। আর নতুন গল্পে পরবর্তী সিজন শুরু হবে প্রায় এক মাস পর।’
এই সিজনে দেখা গেছে সুলতান আহমেদ অল্প বয়সে ক্ষমতালাভ ও ভাইহত্যা নিষিদ্ধ করণের ফলে ঐতিহাসিকভাবে বিতর্কিত ও বিখ্যাত। তার মহানুভবতা, ক্ষমাশীল দৃষ্টিভঙ্গি, ন্যায়বিচার তাকে স্মরণীয় করে তোলে। কাহিনীর চিত্রায়নে দেখা যাবে তার এই ঔর্দাধ্যের পেছনে পরোক্ষভাবে রয়েছে তার সহধর্মিণীর প্রভাব। তিনিই হলেন কোসেম সুলতান।
তিনি তার স্বামীর মাধ্যমে ক্ষমতা অর্জন করে উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন এবং সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। কোসেম রাজপ্রাসাদে আসার পর থেকে মৃত্যু অবধি ছয়জন সুলতানের শাসনকাল দেখেছেন। তার মধ্যে তার নিজের দুই পুত্র চতুর্থ মুরাদ, ইব্রাহিম ও নাতি চতুর্থ মুহাম্মাদও ছিলেন। কোসেম ইস্তাম্বুলসহ তুরস্কের বিভিন্ন স্থানে নানা রকম স্থাপনা গড়ে তুলেছিলেন। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন গরীব প্রজাদের। বিশেষ করে গরীব মেয়েদের শিক্ষা ও বিয়ে দেয়ার কোসেমের অবদান অনেক।
আনুমানিক ১৫৮৯ সালে জন্ম নেয়া কোসেমের মৃত্যু হয় ১৬৫১ সালে। তিনি পাঁচ শাহজাদা ও চার শাহজাদীর জন্ম দিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর তাকে স্বামী সুলতান আহমদ খানের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
অটোমান সাম্রাজ্যে এই নারীর কীর্তি নিয়ে তুরস্কে নির্মিত সিরিয়ালটির নাম ‘মুহতেশেম ইউজিয়েল : কোসেম’। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে এটি প্রচার হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রচার হচ্ছে ‘সুলতান সুলেমান : কোসেম’ নামে।
এখানে কোসেমের জীবনকে দেখানো হয়েছে তিনটি পর্যায়ে। বালিকা আনাস্তাসিয়া, যুবতী কোসেম এবং পরিণত বয়সের কোসেম সুলতানা। তিনটি পর্যায়ে অভিনয় করেছেন আনাস্তাসিয়া চরিত্রে আনাস্তাসিয়া টিসিলিম্পু, কোসেম চরিত্রে তুরস্কের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বেরেন সাত এবং কোসেম সুলতানা চরিত্রে অভিনয় করেছেন নূরগুল।