শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > সীমানা পুনঃনির্ধারণের নতুন আইনের খসড়া প্রস্তুত > বিদ্যমান সীমানায় আগামী নির্বাচন!

সীমানা পুনঃনির্ধারণের নতুন আইনের খসড়া প্রস্তুত > বিদ্যমান সীমানায় আগামী নির্বাচন!

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
নির্বাচন কমিশন (ইসি) যেভাবে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন প্রণয়নের প্রস্তাব প্রস্তুত করেছে তা বাস্তবায়ন হলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিদ্যমান সীমানাতেই অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী এলাকার আয়তন, অবস্থান অপরিবর্তিত রেখে শুধুমাত্র প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলো অন্তর্ভুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি আকারে সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে।

গতকাল বুধবার আইন ও বিধিমালা সংক্রান্ত কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট আইনের খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়। ‘বিদ্যমান নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ১৯৭৬’ রহিত করে ‘নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০১৭’ এই আইন প্রণয়নের প্রস্তাব রাখতে যাচ্ছে কমিশন। আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত হলে কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। এরপর তা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয় পাঠাবে ইসি।

কমিশনের প্রস্তাবিত সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ আদমশুমারির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সীমানা পুনর্র্নিধারিত হইবার পর হইতে পরবর্তী আদমশুমারির প্রতিবেদন প্রাপ্তির মধ্যবর্তী সময়ে বা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে চূড়ান্তভাবে প্রকাশের পর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হইলে উহা সর্বশেষ সীমানার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হইবে। এক্ষেত্রে কমিশন নির্বাচনী এলাকার আয়তন, অবস্থান হুবহু ঠিক রাখিয়া নির্বাচনী এলাকার শুধুমাত্র প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলো অন্তর্ভুক্ত করিয়া বিজ্ঞপ্তি আকারে সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।’

এ ছাড়া প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে জনসংখ্যা বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশের তারিখ হইতে অনূর্ধ্ব ১২ মাসের মধ্যে সীমানা পুনঃনির্ধারণ কাজ সম্পন্ন করতে হইবে। তবে শর্ত থাকে যে, আদমশুমারির প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বেই যদি নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো তফসিল ঘোষণা করা হইয়া থাকে এবং ওই সময়সূচি যদি সীমানা নির্ধারণে সময়সূচির সাথে সাংঘর্ষিক হয় তবে ঘোষিত নির্বাচন সম্পন্ন হইবার পরবর্তী ১২ মাসের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করিতে হইবে।’

দেশের সর্বশেষ আদমশুমারির প্রতিবেদন প্রকাশ হয় ২০১১ সালে। দশ বছর পরপর আদমশুমারি হয়। আদমশুমারির প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০১৩ সালে বিগত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দশম সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদের আসনগুলোর সীমানা পুনর্র্নিধারণ করে। পরবর্তী আদমশুমারি এখনো শুরু হয়নি। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি মধ্যে। এর মধ্যে কমিশনের প্রস্তাবিত আইন সংসদে পাস হলে এ নির্বাচনের আগে সীমানা পুনর্র্নিধারণের কোনো প্রয়োজন হবে না।

এর আগে নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তাদের রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনায় সীমানা পুনর্র্নিধারণে ভোটার সংখ্যার পাশাপাশি এলাকার পরিমাণ বিবেচনায় আনতে আগ্রহ প্রকাশ করে। রোডম্যাপের প্রস্তাবনায় কমিশনের বক্তব্য হচ্ছে, সময়ের পরিবর্তনে এবং জনগণের শহরমুখী প্রবণতার কারণে বড় বড় শহরগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জনসংখ্যার আধিক্য বা ঘনত্ব বিবেচনা করা হলে শহর এলাকায় সংসদীয় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে পল্লী অঞ্চলে আসন সংখ্যা কমে যাবে। ফলে শহর ও পল্লী অঞ্চলের আসনের বৈষম্য সৃষ্টির সুযোগ হবে। সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় শুধু জনসংখ্যার উপর ভিত্তি না করে ভোটার সংখ্যা এবং সংসদীয় এলাকার পরিমাণ বিবেচনায় নেওয়ার জন্য আইনি কাঠামোতে সংস্কার আনা প্রয়োজন। কেননা ভোটার তালিকা প্রতিবছর হালনাগাদ করা হয়। জনসংখ্যা, মোট আয়তন ও ভোটার সংখ্যা এ সবগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে বড় বড় শহরের আসন সংখ্যা সীমিত করে দিয়ে আয়তন, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও উপজেলা ঠিক রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি কমিশন সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছে। ইত্তেফাক