রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > সিম নিবন্ধনে আঙুলের ছাপ কি বেহাত হয়ে যাচ্ছে?

সিম নিবন্ধনে আঙুলের ছাপ কি বেহাত হয়ে যাচ্ছে?

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: সম্প্রতি সিম নিবন্ধনে ব্যবহৃত ফিঙ্গার প্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে যে ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়া হচ্ছে তা বাইরের দেশে পাচারের মাধ্যমে বেহাত হয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশে এই প্রকল্প শুরু হয়নি।

দেশে আঙুলের ছাপে সিম রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি বাতিল করতে বলা হয়েছে। মূলধারার সংবাদমাধ্যম এই নিয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ না করলেও অনেক অনলাইনে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করতে দেখা গেছে। এসব দেখে মুখ খুলেছেন স্বয়ং টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি এ বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। ‘দেশ ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিম বা রিম রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ও কিছু কথা’ শিরোনামে তারানা হালিম লিখেছেন, আঙুলের ছাপ এনআইডি-তেও আছে, ছিল আগের সিম বা রিম রেজিস্ট্রেশন ফর্মেও এবং এগুলো সব অপারেটেরের কাছেও ছিল। এখন কোন সিম কার সেই নিয়ম মেনে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ ভেরিফিকেশন করতে আপনাদের ভয় কিসের? সন্ত্রাসী এবং অপরাধী ছাড়া এই পদ্ধতিতে ভয় পাওয়ার কথা না।

আপনার সিমের মালিক যে আপনি সে জন্যই এনআইডির ডাটাবেজের সঙ্গে এখন বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে শুধু আপনার আঙুলের ছাপটি মিলিয়ে নেয়া হচ্ছে। সিম কিনলে আপনি সিমের মালিকানা কেন স্বীকার করবেন না? এই পদ্ধতি বাংলাদশের সব নাগরিকের জন্যই প্রযোজ্য।

সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ সব নাগরিকের জন্যই প্রযোজ্য। সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য থাকলে এটা সবার জন্য প্রযোজ্য হতো না। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন এই ডাটাবেজে প্রবেশ করতে পারবে। যা ইতিমধ্যে আপনার এনআইডিতেও আছে। এখন শুধু এই আঙুলের ছাপের সঙ্গে আপনারটা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। ১টি এনআইডির বিপরীতে পূর্বে যেমন ৬০ হাজার বা এর অধিক সিম পাওয়া গেছে সেটা এড়াতেই এখনকার এই বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। সুতরাং দেশ ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে আপনারা সবাই এ পদ্ধতিতে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন করুন। কোনো মিথ্যা সংবাদে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনারা আমাদের জনগণ, আমরা আপনাদের জনপ্রতিনিধি, আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

এ বিষয়ে জানতে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই ডেটাবেজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। স্পর্শকাতর বিষয় বলে এ ব্যাপারে খুঁটিনাটি হিসাবনিকাশ করে অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। তারা শুধু জাতীয় পরিচয়পত্রে দেয়া আঙুলের ছাপ ভেরিফিকেশন করছে; কোনো ছাপ স্টোর করছে না। এদিকে এমপিদের জন্য জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে মোবাইল সিম-রিম নিবন্ধনের ডেস্ক খোলা হয়েছে।

সোমবার সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় তিনি সবাইকে নিরাপত্তার স্বার্থে এ কার্যক্রমে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, হুইপ মাহবুব আরা গিনি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়েজুর রহমান চৌধুরী, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ প্রমুখ অংশ নেন।

এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, অনিবন্ধিত সিমের অপব্যবহার আমাদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যা আমাদের বিব্রত অবস্থায় ফেলে দেয়। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সব নাগরিকের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিম-রিম নিবন্ধন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধিদের সিম-রিম বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে যাবে- আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের সিম-রিম নিবন্ধন করেছি, আপনারাও এই প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আসুন। এ জন্য তিনি সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী এলাকায় ক্যাম্পেইন চালানোর আহ্বান জানান।