শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > সিদ্দিকুরের চোখে টিয়ার শেল, সাত পুলিশ অভিযুক্ত

সিদ্দিকুরের চোখে টিয়ার শেল, সাত পুলিশ অভিযুক্ত

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
খুব কাছ থেকে ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল সিদ্দিকুর রহমানের চোখে লাগে বলে তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের সাত সদস্যের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। আজ সোমবার এই কমিটির প্রতিবেদন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দেওয়ার কথা আছে।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান যুগ্ম কমিশনার (অভিযান) মীর রেজাউল আলম বলেন, তদন্তে দায়িত্বরত থানার পুলিশ ও দাঙ্গা দমন বিভাগের পুলিশ সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলা পাওয়া গেছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তারা হলেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু জাফর আলী বিশ্বাস ও পরিদর্শক (অভিযান) আবুল কালাম আজাদ। এ ছাড়া দাঙ্গা দমন বিভাগের (পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট—পিওএম) পাঁচ কনস্টেবলের নামও আছে।

পুলিশের তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণার দাবিতে গত ২০ জুলাই শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছিল। এ সময় সেখানে কর্তব্যরত (পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট-পিওএম) দাঙ্গা দমন বিভাগের পাঁচ কনস্টেবল ছিলেন আক্রমণাত্মক। তারা হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। তাদের একজন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি খুব কাছ থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়েন। এতে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের চোখে লাগলে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলের কাছে শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আবু জাফর আলী বিশ্বাস ও পরিদর্শক (অভিযান) আবুল কালাম আজাদ থাকলেও তারা পুলিশ সদস্যদের নিবৃত্ত করেননি। এমনকি তারা পুলিশ সদস্যদের সঠিক নির্দেশনাও দেননি। পুলিশ সদস্যরা অপেশাদারসুলভ আচরণ করেন।

ডিএমপি সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, কমিটি তদন্তে জানতে পারে, খুব কাছ থেকে সিদ্দিকুরের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়েছিল। তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে কমিটি দেখেছে যে এই কাঁদানে গ্যাসের উপকরণ চোখের জন্য ক্ষতিকারক ছিল।

গত ২৩ জুলাই মীর রেজাউল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের এবং একই দিন রমনা বিভাগ থেকে ওই বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রশাসন) নাবিদ কামাল শৈবালকে প্রধান করে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ডিএমপি গঠিত তদন্ত কমিটি এক দফা সময় বাড়িয়ে গতকাল প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে।

রমনা বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও আজ জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কমিটির প্রধান জানিয়েছেন, তারা আরও দুই দিন সময় চেয়েছেন।

আহত সিদ্দিকুর বর্তমানে ভারতের চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসাধীন। গত শুক্রবার অস্ত্রোপচার শেষে শনিবার তার চোখের ব্যান্ডেজ খোলা হয়েছে।

সিদ্দিকুরের বন্ধু ও সহপাঠী শেখ ফরিদ বলেন, সিদ্দিকুরের সঙ্গে থাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহসান তাদের জানিয়েছেন, গতকালের অস্ত্রোপচারের পর সিদ্দিকুর বলেছেন, চোখের এক পাশ থেকে আলোর উপস্থিতি টের পাচ্ছেন। তিনি কতটুকু দেখবেন বা আদৌ দেখবেন কি না, তা জানতে আরও চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগবে।

প্রথম আলো থেকে