সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > সিটি নির্বাচন প্রার্থীদের হলফনামা কতটা বিশ্বাসযোগ্য

সিটি নির্বাচন প্রার্থীদের হলফনামা কতটা বিশ্বাসযোগ্য

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: বাংলাদেশে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কজন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্রের সাথে হলফনামায় সম্পদের বিবরণ সহ যেসব তথ্য দিয়েছেন সেগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন যাচাই করে কোন তথ্য অসত্য পাওয়া গেলে কমিশন আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশে এখন নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্রের সাথে প্রার্থীদের সাত ধরণের তথ্য দিতে হয় যাতে মামলা, ব্যবসা বা পেশা, প্রার্থী ও তার উপর নির্ভরশীলদের আয়ের উৎস, সম্পদ ও দায়ের বিবরণী, ঋণ ইত্যাদি বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হয়।
এসব তথ্য জনসম্মুখে প্রচারেরও বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীরাও তাদের হলফনামায় এসব তথ্য দিয়েছেন।
তবে তাদের কিছু তথ্য ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশেষ ভাবে আলোচনায় এসেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হকের দেয়া তথ্য নিয়ে।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় এ ব্যবসায়ী তার হলফনামায় তার বাড়ী ও গাড়ির তথ্যের স্থানটি শূন্য রেখেছেন যাতে মনে হয় যে তার গাড়ী বা বাড়ী নেই।
মিস্টার হক বলেছেন, “আমার বাড়ী আছে কিন্তু আমি সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছি। আমার কোম্পানির অনেক গাড়ী সেগুলোই আমি ব্যবহার করি। আমার ব্যক্তিগত গাড়ী নেই। নির্বাচন কমিশনের প্রেসক্রিপশনে কোম্পানির ঋণের বিষয়টি থাকলেও সম্পদ সম্পর্কে লেখার জায়গা নেই। ফলে আমার স্টেটমেন্ট কোন ফাঁকি নেই”।
একটি সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে আনিসুল হকের আরও বিশজন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে রয়েছেন বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বাংলাদেশের আরেকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার ছেলে তাবিথ আউয়াল।
নির্বাচন কমিশন আজই আবদুল আউয়াল মিন্টুর মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করলেও বহাল রয়েছে তার ছেলের প্রার্থিতা।
মি মিন্টুর নামে মামলা থাকায় কথা বলতে পারবেননা বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা। তবে তার ছেলে তাবিথ আউয়াল জানিয়েছেন হলফনামায় তারা দুজনই স্বতঃস্ফূর্তভাবে সঠিক তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “কর দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা যেভাবে সব তথ্য দেই তার সাথে সম্পর্ক রেখেই হলফনামায় সব তথ্য দিয়েছি আমরা”।
তার বাবা ও মায়ের নামে বাড়ীর মূল্য হলফনামায় কম দেখানো হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “ এতে বাড়ি ক্রয় করার সময়কার মূল্য দেখানো হয়েছে”।
আনিসুল হক ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু দুজনই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে হলফনামায় তাদের সম্পদ বা আয়ের উৎস বা ঋণের বিষয়গুলো নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে গণমাধ্যমে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন ২৬জন। এর মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাইদ খোকন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম।
তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যবসা থাকলেও রাজনৈতিক পরিচয়ই তাদের প্রধান পরিচয়। আর সে কারণেই হলফনামায় তাদের দেয়া তথ্যের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে মামলার প্রসঙ্গ নিয়েই।
মীর্জা আব্বাসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এ মূহুর্তে তার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা রয়েছে। তিনটি মামলা রয়েছে মি সালামের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাইদ খোকনের নামে আগে পাঁচটি মামলা থাকলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পাওয়ায় আপাতত তিনি মামলা-মুক্ত।
প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে
হলফনামায় দেয়া তথ্য যাচাই করা বা কোন ভুল তথ্য পেলে কোন ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নির্বাচন কমিশনের রয়েছে কিনা- এ পশ্নে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, ভুল তথ্যে প্রার্থিতা বাতিল পর্যন্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, “সত্যতা যাচাইয়ের জন্যই সেগুলো ওয়েবসাইটে তুলে দেয়া হয়েছে। যে কেউ দেখে আমাদের জানাতে পারে। কেউ ভুল তথ্য দিলে মামলা হতে পারে, এমনকি তিনি প্রার্থী হলে তার প্রার্থিতাও বাতিল হতে পারে”।
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে সময় কয়েকজন প্রার্থীর হলফনামায় দেয়ার তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছিলো।
-বিবিসি