সিংগাইরে আসামী ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ

সিপন আহমেদ, মানিকগঞ্জ থেকে ;


সিংগাইর উপজেলার ধল্লা এলাকায় মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের তিন সদস্য হামলার শিকার হয়েছেন। হামলার শিকার ওই তিন পুলিশ সদস্য হলেন- উপ-পরিদর্শক (এসআই) পার্থ শেখর ঘোষ, কনস্টেবল মাহবুবুর রহমান ও শহিদুল ইসলাম। গত শনিবার দুপুরে ধল্লা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনা ওয়াকিটকির মাধ্যমে থানায় জানালে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এসময় হামলায় জরিত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। আহত পুলিশ সদস্যদের সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- লক্ষীপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আক্তার হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার চায়না (৩৫), মৃত রুহুল শিকদারের ছেলে আল ইসলাম (২৯) ও মো. আব্বাস মিয়ার ছেলে আরিফ হোসেন (২৩)। গ্রেফতার চারজনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনকে আসামী করে এসআই পার্থ শেখর ঘোষ বাদী হয়ে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-২৯।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল সকালে সাংবাদিক মাসুম বাদশাহকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এতে তার হাতে ফ্র্যাকচার হয়। এ ঘটনায় মাসুম বাদশাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ২ নং আসামী ছিলেন হুমায়ুন। গত ১৯ এপ্রিল শনিবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পার্থ শেখর ঘোষ দু’জন পুলিশ সদস্য মাহবুবুর রহমান ও শহিদুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে হুমায়ুনকে গ্রেফতার করতে তার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর যান। এ সময় হুমায়ুনের পরিবারের লোকজন তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে বাধা দেন। তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা শুরু হলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তারা লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের উপর হামলা করে। এতে ওই তিন পুলিশ আহত হন। এ ঘটনা ওয়াকিটকির মাধ্যমে থানায় জানালে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পুলিশের উপর হামলার সময় হুমায়ুন পালিয়ে যায়।
পুলিশের উপর হামলার খবর শুনে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জান্নাতুল ওয়াসিম মো. তৌফিক আজম, ওসি তদন্ত স্বপন কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। এ নিয়ে লক্ষীপুর গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ওসি তদন্ত স্বপন কুমার সরকার বলেন, পুলিশের উপর হামলার খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নারী-পুরুষ মিলে ২৫ থেকে ৩০ জনের মতো পুলিশের উপর সংঘবদ্ধ হামলা চালায়। এ ঘটনায় জরিত থাকার অপরাধে ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌফিক আজম বলেন, আহত তিন পুলিশ সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় এসআই পার্থ শেখর ঘোষ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। চার আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, গত রোববার এসআই পার্থ শেখর ঘোষের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন আসামী হুমায়ুনের স্ত্রী সায়মা আক্তার সালমা। অভিযোগে দাবি করা হয়, সালমা আক্তার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এসআই পার্থ শেখর ঘোষ তার স্বামী হুমায়ুনকে আটক করার পর সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ কারণে এসআই পার্থ শেখর ঘোষ তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করে ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে সালমা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজন তাকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সালমা দাবি করেন, তার স্বামী হুমায়ুন আত্মসমর্পন না করলে পরিবারের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে বলে হুমকি দেন ওসি তৌফিক আজম। একইসঙ্গে তাকে সহযোগিতা করতে আসা সোনিয়া আক্তার ও আরিফ নামের দুজনকে আটক করা হয়। পরে সোনিয়াকে ছেড়ে দিলেও আরিফকে আদালতে চালান করা হয়।
পুলিশ সুপারের কাছে করা হুমায়ুনের স্ত্রী সায়মা আক্তার সালমার করা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি তৌফিক আজম বলেন, পুলিশ সদস্যদের উপর হামলার ঘটনা ভিন্নখাতে নিতেই সালমা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আটক সোনিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের উপর হামলার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোন তথ্য প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

Related News

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫