বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সার্জারির পর গভীর ঘুমে রয়েছেন তিনি। পোস্ট অপারেটিভে আরও একদিন তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হবে।
মাউন্ড এলিজাবেথ হাসপাতালে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পোস্ট অপারেটিভে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে কেউ দেখতে পারছেন না। এমনকি বাংলাদেশ থেকে ভিআইপি পদমর্যাদার কেউ গেলেও দেখতে যেতে পারছেন না। ওবায়দুল কাদেরের ঘুমে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সে জন্য এমনটি করা হয়েছে।
আরও অন্তত ২২ ঘণ্টা না পেরোনো পর্যন্ত তার পরিবারের কেউ তাকে দেখতে পারবেন না বলে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
মেডিকেল বোর্ড জানায়, সফল অস্ত্রোপচারের পর ওবায়দুল কাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা পার হলেই তাকে জাগানো হবে। এরই মধ্যে প্রায় ২৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারে নিরবচ্ছিন্ন ঘুমে রয়েছেন।
তবে ওবায়দুল কাদেরের স্বাস্থ্যের এবং শরীরের সব শেষ অবস্থা জানিয়ে সিঙ্গাপুর সময় আজ বিকাল ৫টায়, বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় চিকিৎসকদের ব্রিফ করার কথা রয়েছে।
এর আগে বুধবার সফল সার্জারির পর মাউন্ট এলিজাবেথের থোরাসিক সার্জন ডা. সিবাস্টিন কুমার সামি ওবায়দুল কাদেরের অস্ত্রোপচার-পরবর্তী অগ্রগতি পরিবারের সদস্যদের ব্রিফ করেছেন। তখনই তিনি জানান, সার্জারির পর তাকে ৪৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে লবিতে ওবায়দুল কাদেরের ভিজিটরদের জন্য একটি রেজিস্টার বই রাখা হয়েছে। স্বজন-শুভানুধ্যায়ীসহ যারা যাচ্ছেন, তারা সেই বইতে স্বাক্ষর করে যেতে পারছেন। পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার থেকে তাকে কেবিনে নেয়ার পর তার সঙ্গে স্বাভাবিক অবস্থায় সাক্ষাৎ করার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভীর বরাত দিয়ে বুধবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা আবু নাছের গণমাধ্যমকে জানান, বাইপাস সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সার্জারির পর তাকে পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারে রাখা হয়েছে। তার পরিবার দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি শুরু হয়। মাউন্ট এলজাবেথ হাসপাতালের সিনিয়র কার্ডিওথোরাসিক সার্জন সিবাস্টিন কুমার সামি সেতুমন্ত্রীর বাইপাস সার্জারি করেন।
সেখানে মন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন সহধর্মিণী বেগম ইশরাতুন্নেসা কাদের, ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম।
৬৭ বছর বয়সী ওবায়দুল কাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ছাড়াও শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ সিওপিডিতে (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) ভুগছেন। ৩ মার্চ ভোররাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
সেখানে এনজিওগ্রামে তার হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে তিনটি মেজর ব্লকসহ একাধিক ব্লক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি ব্লক স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করেন চিকিৎসকরা।
অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে ৪ মার্চ বিকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেদিন রাতেই একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা শুরু করেন মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।