সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ॥
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় শনিবার রাতে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দেয়াল ধসে ও টিনের চাল পড়ে দুইজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের দুইজনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহতরা হলেন- দেবহাটার বালিয়াডাঙা গ্রামের শফিকুর রহমানের ছেলে মৎস্য ঘের শ্রমিক সাদ্দাম হোসেন (২৫) ও একই উপজেলার সেকেন্দারা গ্রামের করিম গাজীর ছেলে ইঞ্জিনভ্যান চালক ফরিদুল ইসলাম (১৮)।
হাসপাতালে ভর্তি আহত দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- সদর উপজেলার পদ্মশাখরা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র সাকিব (১৪) এবং আলিপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ইঞ্জিনভ্যান চালক মোশাররফ হোসেন (২৫) । তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন ডাক্তার।
এছাড়া বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তিদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার রাত ১০টার দিকে স্কুল মাঠে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলছিল। একপর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দেয়াল ও টিনের চালা ধসে পড়ে।
ঘটনায় আতংকিত হয়ে চারদিকে শোরগোল পড়ে যায়। উপস্থিত লোকজন এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। ওই সময় অনুষ্ঠানস্থলে প্রধান অতিথি হিসেবে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির উপস্থিত ছিলেন। তিনি ঘটনার পর দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
ভোমরা বন্দর এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ ও বিজিবি কর্মকর্তারা জানান, বঙ্গবন্ধু আদর্শ যুবসংঘের উদ্যোগে ভোমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান চলছিল। অসহায় ও দুস্থ মানুষের সহায়তার লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে শত শত মানুষ যোগ দেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন ভোমরা কাস্টমস সহকারী কমিশনার তারেক মাহমুদ, শিল্প ও বনিক সমিতির সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, ভোমরা সিএ্যান্ড এফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি নেসারউদ্দিন, সম্পাদক অহিদুল ইসলাম এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ইউনিয়ন সেক্রেটারি আনারুল ইসলাম।ি
শল্প ও বনিক সমিতির সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু জানান, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে এসে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সাতক্ষীরা থেকে ফায়ার ব্রিগেডের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায়। তার আগেই নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির জানিয়েছেন, স্কুলের ওই ভবনটি আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু উৎসুক মানুষ সেখানে উঠে পড়ায় দেওয়াল ও এসবেসটসের ছাদ ধ্বসে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মারুফ হোসেন জানান, আহত দুজনের অবস্থা এখন শংকামুক্ত ।
সদর থানার ওসি এমদাদ শেখ জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সবাইকে সরিয়ে নেয়। সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।