স্পোর্টস ডেস্ক ॥ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের ছাড়াও কতটা সুশৃঙ্খল ক্রিকেট খেলা যায় তার দৃষ্টান্ত রেখে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। ওপেনার কুশাল পেরেরা ও দিনেশ চান্দিমালের প্রত্যয়ী ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৩ ওভারে ২ উইকেটে ১৬১ রান করে। জয়ের জন্য তাদেরকে অবশিষ্ট ১৭ ওভার থেকে আর মাত্র ৮০ রান করতে হবে।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের জোড়া শিকারের পরও দমে যায়নি শ্রীলঙ্কা। আস্থার সঙ্গে খেলে তারা জয়ের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩২ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৭ রান সংগ্রহ করেছে লঙ্কানরা।
ওপেনার কুশাল পেরেরা ৯৯ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৭২ রান করে এবং দিনেশ চান্দিমাল ৪৭ বলে ৪২ রানে ব্যাট করছিলেন। এর আগে লাহিরু থিরিমান্নের পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৯ রানে ফেরান কিথুরুয়ান ভিথানাগেকে। ফলে ৬০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সাবলীল অগ্রযাত্রা কিছুটা হলেও ব্যহত হয়।
বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া ২৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার লাহিরু থিরিমানে ও কুশল পেরেরা বেশ আস্থার সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন। তবে ইনিংসের ১১তম ওভারে থিরিমান্নে ১৮ রান করে মাহমুদুল্লাহর বলে শামসুর রহমানের হাতে ধরা পরেন।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে শেষ ওয়ানডেতে নিজেদেরকে কিছুটা হলেও মেলে ধরতে পেরেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে তারা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪০ রান করতে সক্ষম হয়। ফলে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করতে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য এখন ২৪১ রান।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ অত্যন্ত সাবধানী সূচনা করে। কিন্তু তারপরও দলীয় ১৭ রানে ফিরে যান আনামুল হক বিজয় মাত্র ২ রান করে। এরপর আরেক ওপেনার শামসুর রহমানের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন বাঁহাতি মুমিনুল হক। বেশ আস্থার সঙ্গেই ব্যাট করে যাচ্ছিলেন এ দুজন। তবে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন শামসুর রহমান।ধাস্মিকা প্রসাদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ২৫ রান করে আউট হন টাইগার এই ওপেনার। ইনিংসের ১৭তম ওভারে পেরেরার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। দলীয় সংগ্রহ তখন ছিল ৬২/২।
তৃতীয় উইকেটে চমৎকার খেলে সমর্থকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন মুমিনুল ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ২৪তম ওভারে অহেতুক দুই রান নিতে গিয়ে সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে যান মুমিনুল। ৬০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৬০ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে দুর্ভাগ্য বরণ করেন ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অর্ধশতক হাঁকানো মুমিনুল। এ সময় দলীয় সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১০৯ রান।
তার কিছু সময় পরেই দলকে বিপর্যয়ের পথে ঠেলে দিয়ে আউট হন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ইনিংসের ২৯.৪ ওভারে ধাম্মিকা প্রসাদের বলে কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাচিত্রা সেনানায়েকের তালুবন্দী হন তিনি ৩০ রান করে। এ সময় দলীয় সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১৩০ রান। এরপর নাঈম ইসলাম (৩২), নাসির হোসেন (৩৮) দলকে কিছুটা স্থিরতা দেন। তবে ইনিংসের শেষ ভাগে সোহাগ গাজী মাত্র ১৩ বলে ৩ ছক্কায় ২৩ রান তুলে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন দলকে। শফিউল ইসলামও ১৮ বলে ২ চারে ১৫ রান তুলে অপরাজিত থাকেন।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে দলে সুযোগ পাওয়া ধাম্মিকা প্রসাদ ৪৯ রানে ৩ উইকেট নেন। সুরঙ্গ লাকমাল চমৎকার নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ১০ ওভারে ৩ মেডেনসহ ২৪ রানে ২ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ৫০ ওভার ২৪০/৮ (মুমিনুল ৬০, নাসির ৩৮, নাঈম ৩২, মুশফিক ৩০, শামসুর ২৫, সোহাগ ২৩, শফিউল অপরাজিত ১৫, প্রসাদ ৩/৪৯, লাকমাল ২/২৪, থিসারা পেরেরা ১/৩৯)
বাংলাদেশ ওয়ানডে দল: শামসুর রহমান, আনামুল হক, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), নাসির হোসেন, আরাফাত সানি,মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ,নাঈম ইসলাম, শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও সোহাগ গাজী।
শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে দল: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (অধিনায়ক), দিনেশ চান্দিমাল (সহ-অধিনায়ক), কুশল পেরেরা, আশান প্রিয়াঞ্জন,কিথুরুয়ান ভিথানগে, অ্যাঞ্জেলো পেরেরা, ধাস্মিকা প্রসাদ, থিসারা পেরেরা,নুয়ান কুলাসেকেরা, সুরঙ্গা লাকমাল,সচিত্র সেনানায়েকে, অজন্থা মেন্ডিস ও থিসারা পেরেরা।