শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > রাজনীতি > ‘সরকার কতটা অমানবিক হলে অপরাধীদের বাঁচাতে নির্যাতিত মানুষকে জেলে রাখে’

‘সরকার কতটা অমানবিক হলে অপরাধীদের বাঁচাতে নির্যাতিত মানুষকে জেলে রাখে’

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ভিয়েতনামফেরত প্রবাসীদের কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় সদস্য সাকিবের পাঠানো বিবৃতিতে মান্না বলেন, ‘১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আর এদিনই ভিয়েতনামফেরত ৮১ প্রবাসীকে জেলে পাঠানো হলো। সাথে রয়েছে কাতারপ্রবাসী আরও দুইজন। সরকার কতটা অমানবিক হলে অপরাধীদের বাঁচাতে নির্যাতনের শিকার মানুষকে জেলে পুরে রাখতে পারে! এই ৮১ জনের প্রত্যেকে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে যাওয়ার জন্য যত নিয়ম-কানুন আছে সব প্রক্রিয়া শেষ করে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ছাড়পত্র নিয়ে ভিয়েতনামে যান। প্রতারণার শিকার এই প্রবাসীরা ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়েছিলেন প্রতিকারের আশায়। আর সেটিকে দূতাবাস দখলের চেষ্টা বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কী বিস্ময়কর ঘটনা!’

তিনি বলেন, ২০১ ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইন অনুযায়ী, বিদেশে কোনো সমস্যা হলে প্রবাসীরা নিজ দেশের দূতাবাসে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক। অথচ বলা হলো তারা দূতাবাস দখল করতে গেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত দালাল, এজেন্সি বা জনশক্তি প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ভুক্তভোগীদের জেলে পাঠানো হলো।’

মান্না বলেন, ‘এর আগে কুয়েত, কাতার ও বাহরাইন থেকে আসা ২১৯ জনকে দিয়াবাড়ির কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে জেলে নেয়ার সময় যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, এবারও সেই একই অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিটি শব্দ, বাক্য, একই। সেই একই অভিযোগ, কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য শলাপরামর্শ করছিলেন। পুলিশ গোপন সূত্রে ওই শলাপরামর্শের খবর জানতে পেরেছে। পত্রিকান্তরে প্রকাশ, সেই মামলার এজাহার আর এবারের মামলার এজাহার হুবহু এক, এমনকী বানান এবং বাক্যবিন্যাসের ভুলগুলোও।’

তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা অভিবাসীরা বিভিন্ন অপরাধে সেখানে জেলে থাকলেও ভিয়েতনাম থেকে ফেরত আসাদের কেউই সেদেশে কোনো অপরাধে অভিযুক্ত বা কারাগারে ছিলেন না। দেশে এসে তারা হঠাৎ করে অপরাধী হয়ে গেল। ভিয়েতনামফেরত প্রবাসীরা দালালচক্রের হোতা, জড়িত রিক্রুটিং এজেন্সি এবং এদের সাথে কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কতিপয় কর্মকর্তা এবং দূতাবাসের সুসম্পর্কের কথা বারবার বললেও তাদের ব্যাপারে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

মান্না আরও বলেন, ‘একটি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী সরকারের কাছ থেকে সত্যিকার অর্থে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না। তাদের কাছে ন্যায্যতা প্রত্যাশা করা অরণ্যে রোদনের শামিল। যে প্রবাসীদের রক্তে-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ওপর দেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল, তাদের সাথে এই ধরনের অন্যায়-অবিচার কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে এই জবাবদিহিতাহীন ফ্যাসিবাদকে প্রতিহত করার জন্য সকল বিরোধী রাজনৈতিক, সামাজিক শক্তি এবং জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’