রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > সব দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন প্রয়োজন

সব দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন প্রয়োজন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী ১৮ দল৷ আর নির্বাচন সফল করায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছে আওয়ামী লীগ৷

তবে সুশীল সমাজ ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখন সব দলের অংশগ্রহণে যত দ্রুত আরেকটি নির্বাচন হয় ততই মঙ্গল, নয়তো এই সংকট আরো বাড়বে৷

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক রবিবারের নির্বাচনের পর সন্ধ্যায় এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবিতে সোমবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ তিনি জানান একই সঙ্গে লাগাতার অবরোধও চলবে৷ তিনি বলেন দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে একতরফা নির্বাচন বর্জন করেছে৷ তাঁরা ভোট কেন্দ্রে যাননি৷ তাঁরা এর মধ্য দিয়ে অবৈধ সরকারকেও প্রত্যাখ্যান করেছে৷ তিনি অভিযোগ করেন নির্বাচনি সহিংসতায় বিএনপি-জামায়াতের ২১ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন৷

তবে আওয়ামী লীগ নেতা ও শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, বিএনপি-জামায়াতের ডাকে সাড়া দেয়নি দেশের মানুষ৷ তারা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন৷ বিএনপি-জামায়াত আপ্রাণ চেষ্টা করেছে এই নির্বাচন বানচাল করতে৷ কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হয়েছে৷ সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে৷

আর দেশের সুশীল সমাজ ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এই নির্বাচন দিয়ে সরকার এগিয়ে যেতে পারবে বলে মনে হয় না৷ দেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি৷ তাই সরকারকে দ্রুত সব দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে, বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক, সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার৷ আর তার জন্য বিরোধী দলের সঙ্গে খুব দ্রুত সংলাপ শুরু করে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার ব্যাপারে সমঝোতায় আসতে হবে৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, এমনিতেই দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর যেন না হয়৷

নিরাপত্তা ব্যবস্থা

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল করতে সরকার ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করে৷ এজন্য ৫৯ জেলায় বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় সাড়ে চার লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়৷ বাকি পাঁচটি জেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি৷

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারের উচিত হবে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য এখনই একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা৷ এজন্য ২৪ জানুয়ারির পর নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ পর্যন্ত বসে থাকা ঠিক হবে না৷ তবে তিনি মনে করেন শুধু সরকার নয়, বিরোধী দলকেও তার অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে৷ সহিংসতা, হরতাল অবরোধ বাদ দেয়ার সঙ্গে জামায়াতের ব্যাপারেও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে৷ জামায়াতের ব্যাপারে বিএনপি পরিষ্কার অবস্থানে না গেলে বিএনপিকে আস্থায় নেবে না সরকার৷

রাজনীতির বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন দ্রুত সব দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন চায় বিদেশি বন্ধুরাও৷ তাঁরা এখন দেখবেন সরকার এব্যাপারে কি উদ্যোগ নেয়৷ তিনি বলেন, সরকারও বার বার বলেছে এটা সংবিধান রক্ষার নির্বাচন৷ পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা হবে৷ এখন এই আলোচনা কবে শুরু হয় তাই দেখার বিষয়৷

উল্লেখ্য, ১০ম সংসদ নির্বাচন নিবন্ধিত ৩৭টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিরোধী দল বিএনপিসহ ২৫টি রাজনৈতিক দল বর্জন করে৷ অংশ নেয় শাসক দল আওয়ামী লীগসহ ১২টি দল৷ ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনের প্রার্থীরা আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন৷ ব্যাপক সহিংসতা এবং কম ভোটারের উপস্থিতিতে ১৪৭টি আসনে রবিবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ডয়েচে বেল। সূত্র-বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম ডেস্ক