বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: অনলাইনে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে বেশি পরিমাণ কর পরিশোধে ই-পেমেন্ট সফটওয়্যারকে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সক্ষমতা বাড়লে সব তফসিলি ব্যাংকের একাউন্টে যে কোনো করদাতা, যে কোনো পরিমাণ কর পরিশোধ করতে পারবেন বলে এনবিআর’র একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) তথ্য কেন্দ্রে সফটওয়্যার হোস্টিংয়ের পরই ই-পেমেন্ট সিস্টেম আধু্নকিায়নের কাজ শেষ হবে।
ই-পেমেন্ট আধুনিকায়ন হলে যে কোনো করদাতা বাসা কিংবা অফিসে বসে ব্যাংক একাউন্ট থেকে যে কোনো পরিমাণ আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক পরিশোধ করতে পারবেন।
সূত্র জানায়, বর্তমান ই-পেমেন্ট সিস্টেমে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে যে সব সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা দূর করে বেশ কিছু সুবিধা সন্নিবেশ করা হবে। বর্তমানে কিউ ক্যাশ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ২৬টি তফসিলি ব্যাংকের একাউন্ট বা কার্ড ব্যবহার করে ই-পেমেন্ট সিস্টেমে অল্প পরিমাণ কর পরিশোধ করা যায়।
এই ই-পেমেন্ট সিস্টেমে একাউন্ট থেকে একাউন্টে বড় পরিমাণ কর পরিশোধ করা যায় না। তবে ই-পেমেন্ট সিস্টেম আধুনিকায়ন হলে তা সম্ভব হবে।
তথ্য-প্রযুক্তি বিয়ষক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কিউ ক্যাশ, সোনালী ব্যাংক ও এনবিআর যৌথভাবে ই-পেমেন্ট সিস্টেম পরিচালনা করে আসছে।
ই-পেমেন্টে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেন্ট ফান্ড (বিআইসিএফ) ও আন্তর্জাতিক ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে।
২০১২ সালে ই-পেমেন্ট সিস্টেম চালুর পর গত তিন বছরে অল্প পরিমাণ ব্যক্তিগত করদাতা আয়কর পরিশোধ করতে পারতেন। বড় সীমাবদ্ধতা ছিল করপোরেটের ক্ষেত্রে। ই-পেমেন্ট সিস্টেম আধুনিকায়ন হলে করপোরেট ও ব্যক্তিগতসহ যে কোনো পরিমাণ আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক অনলাইনেই পরিশোধ করা যাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শুধু সোনালী ব্যাংক নয়, সব তফসিলি ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে ই-পেমেন্ট সিস্টেমে কর পরিশোধ’র উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। অনলাইনে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে কর নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ইতোমধ্যে সিটি ব্যাংক ও স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে।
শিগগিরই সব তফসিলি ব্যাংকের সঙ্গে এ চুক্তি করা হবে। সব তফসিলি ব্যাংকের সঙ্গে যতো দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে বলেও জানান তারা।
ই-পেমেন্টে সিস্টেম আধুনিকায়নের সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, এ বিষয়ে আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে প্রস্তুতি নিতে ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করা হবে। এ সিস্টেম আধুনিকায়ন হলে সব ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে সব করই অনলাইনে নেওয়া হবে। সেজন্য ব্যাংকগুলোর প্রস্তুতি নিতে হবে।
সিস্টেম বিসিসি’র সার্ভারের স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে তা চালুর সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
সূত্র জানায়, বিআইসিএফ’র চুক্তি অনুয়াযী আগামী সেপ্টেম্বরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড’র আইটি বিভাগের কাছে ই-পেমেন্ট সিস্টেমের টেকনোলজি হস্তান্তর করবে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড’র আইটি বিভাগ ই-পেমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যার ও এর টেকনিক্যাল প্রযুক্তি সম্পর্কে কিছুই জানে না। কারণ গত তিনবছরে এ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে এনবিআর’র আইটি বিভাগের কর্মকর্তাদের রাখা হয়নি।
আইটি বিভাগ ই-পেমেন্ট সিস্টেমের প্রযুক্তি সম্পর্কে না জেনে তা বুঝে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে জানা যায়।
এনবিআর সফটওয়্যারের এ প্রযুক্তির ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে আরও দু’বছর বৃদ্ধির জন্য বিআইসিএফ সময় বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছে।
একই সঙ্গে এনবিআর এ দু’বছরের মধ্যে আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের ছয় কর্মকর্তাকে ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম