রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > সংসদীয় কমিটিতে দুদকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ

সংসদীয় কমিটিতে দুদকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা : এবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে সংসদীয় কমিটিতে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা আগে জানানো সত্ত্বেও ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে দুদকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, নূরুল ইসলাম সুজন, মো. আব্দুল ওদুদ ও আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম, বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংকে অনিয়ম, দুর্নীতি আর জালিয়াতির সব ধরনের প্রক্রিয়াই প্রয়োগ করেছেন ব্যাংকটির তৎকালীন অর্থলোভী পরিচালনা পর্ষদ ও সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি শাখায়ই কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেট ঋণের নামে বিলিয়ে দিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শুধু রিলেশনশিপের ভিত্তিতে কোনো ধরনের কাগজপত্র কিংবা জামানত ছাড়াই মাত্র এক দিনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বড় অঙ্কের এসব ঋণ। ঋণ আবেদনপত্রের সঙ্গে সিকিউরিটি ফরমের ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ফরম আংশিক পূরণ করা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে একদমই ফাঁকা রাখা হয়েছে। অনেক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আবেদনপত্র গ্রহণ না করারও নজির রয়েছে। জামানত দেখানোর ক্ষেত্রে জাল দলিল, অনেক ক্ষেত্রে আগে ঋণ উত্তোলন করে সেই টাকায় জমি কিনে তা বন্ধক রাখার ঘটনাও ঘটেছে। মূলত প্রতিষ্ঠানটিতে এমন কোনো জালিয়াতি আর লুটপাট নেই যা করা হয়নি। এ বিষয়ে আগেই দুদক কর্মকর্তাদের জানানো হলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে দাবি করেছে ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংসদীয় কমিটি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে অতিদ্রুত অনুসন্ধান চালানোর তাগিদ দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে। একই সঙ্গে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করারও সুপারিশ করা হয়েছে। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শওকত আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, নাম-পরিচয়হীন লোকদের ঋণ দিয়েছে বেসিক ব্যাংক। ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে ১০ জনের কোনো ঠিকানাই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এটা কিভাবে সম্ভব? নাম-পরিচয়হীন লোকদের কিভাবে ঋণ দেওয়া হলো তা বাংলাদেশ ব্যাংককে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিল গুটিকয়েক লোক। আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে বৈঠকে সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে যোগ্য, পেশাদার, স্বচ্ছ লোক নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট আপত্তিগুলো সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়েছে। বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম ডেস্ক