শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > রাজনীতি > শুরু থেকে শেষ > খালেদার চার দিনের রোহিঙ্গা সফর

শুরু থেকে শেষ > খালেদার চার দিনের রোহিঙ্গা সফর

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥

প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে গত মঙ্গলবার বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে সড়ক পথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রাত ৯ টায় গুলশানের বাসভবন (ফিরোজা) পৌছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) কক্সবাজারের উখিয়াতে তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণ ও একটি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্ধোধন করে প্রায় ২৪ ঘণ্টা কক্সবাজারে অবস্থানের পর রাত সাড়ে ৭ টায় কক্সবাজার সার্কিট হাউজ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে রাত সাড়ে ১১ টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌছান বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে রাত্রিযাপন শেষে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ২ টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

দীর্ঘ প্রায় ৩ মাস লন্ডন সফরে শেষে গত ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরে এটাই তার প্রথম সফর।

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ফেরার পথে ফেনীর মহিপাল পার হওয়ার সময় বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে উল্টাপথে শান্ত পরিবহন ও যমুনা ক্লাসিক নামের দুটি গাড়ি ঢাকার দিকে ঢুকলে কে বা কার আগুন দেয়। ওই গাড়ি দুটিতে অগ্নি সংযোগ করা হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রত্যাক্ষ দর্শী সূত্র থেকে জানা গেছে ছাত্র লীগের ২০-২৫ জন ছেলেরা ৩ টি পেট্রোল বোমা হামলা করে গাড়ি দুটিতে অগ্নিসংযোগ করে।

এর আগেও, গত শনিবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ফেনী সার্কিট হাউজে পৌঁছানোর পর বিকেল ৫ টার দিকে সার্কিট হাউজ থেকে লালপুর এলাকায় পৌঁছালে ওই বহরের সঙ্গে থাকা সাংবাদিকদের গাড়ি মোহাম্মদ আলী বাজার লালপুর এলাকায় অতিক্রম করার সময় স্থানীয় একদল যুবক ব্যারিকেড বহরে হামলা চালায়। এ সময় সাংবাদিকদের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। বহরে থাকা ৭১ টেলিভিশন, বৈশাখী, চ্যানেল আই টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়।

শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ফেনী ত্যাগ করে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌছান বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে রাত্রিযাপন শেষে পরদিন রবিবার সকাল ১২ টার দিকে কক্সবাজার সার্কিট হাউজের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রাত ৮ টার দিকে কক্সবাজার সার্কিট হাউজে পৌছান বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে রাত্রিযাপন শেষে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে হিলটপ সার্কিট হাউস ত্যাগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

গাড়িবহর নিয়ে খালেদা জিয়া সড়কপথে প্রথমে উখিয়ার ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা শিবিরে আসেন দুপুর ১টার দিকে। তিনি ক্যাম্পে পৌঁছার আগে থেকে সেখানে হাজারো রোহিঙ্গা শরণার্থী অপেক্ষা করছিলেন ত্রাণ নিতে। বিএনপি নেত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো ক্যাম্পে তখন নেতাকর্মী, স্থানীয় মানুষ আর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিলে সমাবেশস্থলের রূপ নেয়। ভিড় ঠেলে খালেদা জিয়া ত্রাণ দেয়ার নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে অপেক্ষারত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন। পরে তিনি আরও তিনটি স্থান-হাকিমপাড়া, বালুখালী-১ ও বালুখালী-২ ক্যাম্প পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ করেন এবং বালুখালী পানবাজারে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) পরিচালিত রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী একটি মেডিকেল ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কক্সবাজার সার্কিট হাউসে পৌঁছান বিএনপি নেত্রী। বিকেলে কক্সবাজার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সেখানে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন বেগম খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির, শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, গোলাম আকবর খন্দকার, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, নাজিমউদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, মাহবুবুর রহমান শামীম, শ্যামা ওবায়েদ, আবদুস সালাম আজাদ, স্থানীয় সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমান কাজল, হাসিনা আহমেদ, জেলা সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্না, বিএনপি নেত্রী হেলেন জেরিন খান, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, সাইফুল ইসলাম সেকুল প্রমুখ।