বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
শৈত্যপ্রবাহের কারণে একটি মানুষও যাতে শীতে কষ্ট না পায় সেজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শৈত্যপ্রবাহ ও সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি জানুয়ারি মাসে আরও তিনটি শৈত্যপ্রবাহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।
শৈত্যপ্রবাহ আসছে, সরকারের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যাতে শীতে কষ্ট না পায় সেজন্য পোশাক ও খাদ্য বিতরণের কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষরা শীতে বেশি কষ্ট পায়, তাদেরকে বিতরণের জন্য এগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিতরণ অনেক জায়গায় শুরু হয়েছে। বিতরণ কাজ চলতে থাকবে যাতে একটি মানুষও শীতে কষ্ট না পায়। এই সতর্কতাটা আমরা নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া আমাদের অর্থ, কম্বল ও শুকনো খাবারের মজুত আছে, কোথাও যদি জরুরি প্রয়োজন হয় সেটা মেটানোর সক্ষমতাও আমাদের আছে।’
এনামুর রহমান বলেন, ‘গত মাসের মাঝামাঝি থেকে সারা দেশে তীব্র শীত জেকে বসেছে। অক্টোবরে শীতের পূর্বাভাস পাওয়ার পর প্রত্যেক জেলায় শীতবস্ত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের চাহিদা মোতাবেক শীতবস্ত্র সরবরাহ করেছি।’
ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৬৪ জেলায় ৭ লাখ ২১ হাজার ৮০০ পিস কম্বল বরাদ্দ দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডার থেকে ৬৪ জেলার জন্য ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ১০০ পিস কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
শীত ও শৈত্যপ্রবাহ শুরুর পর শীতার্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য শীতবস্ত্র কিনতে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, ফরিদপুর এবং গোপালগঞ্জে এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া শিশুদের শীতবস্ত্র কিনতে, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ- এই ২০ জেলায় ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের খাবার কিনতে এই ২০ জেলায় ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
‘রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলার প্রতিটিতে ২ হাজার করে মোট ১৬ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের কার্টুন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের কর্মকর্তারা উত্তরাঞ্চল থেকে সফর শুরু করে শীতার্ত মানুষের পরিস্থিতি দেখবেন এবং শীতবস্ত্র বিতরণ করবেন বলেও জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আগামী ১১ জানুয়ারি দল থেকে উত্তরাঞ্চল সফরের আয়োজন আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মহসীন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।