শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > জাতীয় > শিশুপার্কে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ বন্ধের দাবি

শিশুপার্কে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ বন্ধের দাবি

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

রাজধানীর ‘নবাবগঞ্জ পার্ক’ দখল করে কমিউনিটি সেন্টারের নামে বহুতল ভবন নির্মান বন্ধের দাবি জানিয়েছে ১৯টি পরিবেশবাদী সংগঠন।

সংগঠনগুলোর পক্ষে বক্তারা বলেন, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র বহুতল ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে যাচ্ছেন। ডিএসসিসির এ উদ্যোগ পরিবেশ বিপর্যয়সহ এলাকাবাসী বিশেষ করে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হুমকির মুখে ঠেলে দেবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই অনতিবিলম্বে নবাবগঞ্জ পার্কে কমিউনিটি সেন্টারের নামে বহুতল ভবণ নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১৯টি পরিবেশবাদী সংগঠন আয়োজিত ‘পার্ক-মাঠে কমিউনিটি সেন্টার বা বহুতল ভবন নয়- নবাবগঞ্জ শিশুপার্কে বহুতল ভবনের নামে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ বন্ধ কর’ শীর্ষক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

এ সময় বক্তারা বলেন, জনসংখ্যা অনুসারে প্রত্যেক এলাকায় পর্যাপ্ত পার্ক-মাঠ, ব্যায়ামাগার, কমিউনিটি সেন্টার, পাঠাগার ইত্যাদি সেবামূলক স্থাপনা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু কমিউনিটি সেন্টারে ব্যায়ামাগারসহ শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের সুবিধা থাকলেও মূলত তা বিবাহসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়। তাই ঢাকায় যেখানে খোলা জায়গার তীব্র সংকট সেখানে কখনই পার্ক-মাঠের জায়গা দখল করে এ ধরণের স্থাপনা নির্মাণ করা ঠিক নয়। ডিসিসির উচিত জনসংখ্যা অনুসারে এলাকা ভিত্তিক পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যায়ামাগার, পাঠাগার, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইত্যাদি সেবামূলক স্থাপনা গড়ে তোলা।

তারা বলেন, বর্তমানে একটি আদর্শ নগরীর জন্য ২৫ শতাংশ খোলা এলাকা রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। রাজধানীর স্ট্রাকচার প্ল্যান-১৯৯৫ অনুসারে পুরান ঢাকায় ৫ শতাংশ আর নতুন ঢাকায় ১২ শতাংশ জায়গা সবুজ ও খোলা দেখানো হয়েছে। ১৯৯৫ সালের পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের মধ্যে ঢাকায় ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ২০ শতাংশ খোলা এলাকা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দীর্ঘ ২২ বছরে এ লক্ষ্যে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি।

বক্তারা আরও বলেন, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা ঢাকার অনেকগুলো পার্ক ও উম্মুক্ত স্থান ইতোমধ্যে গ্রাস করেছে, যেমন- টিকাটুলি পার্ক, উত্তরা ১ নং সেক্টর পার্ক, মোহাম্মদপুরের শহীদ পার্ক, আজিমপুর পার্ক ইত্যাদি। এ ছাড়াও অনেকগুলো পার্ক ও উম্মুক্ত স্থানের অংশ বিশেষ ওয়াসার পাম্প স্টেশন, সিটি কর্পোরেশনের কমিউনিটি সেন্টার, কমিশনারের অফিস, ক্লিনিক ইত্যাদির জন্য দখল করা হয়েছে, যেমন-নবাবগঞ্জ পার্ক, যাত্রাবাড়ি ক্রসিং পার্ক, নয়াটোলা শিশু পার্ক, লালমাটিয়া নিউ কলোনি পার্ক, পান্থকুঞ্জ, সলিমুল্লাহ রোড মাঠ ইত্যাদি।

বক্তারা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ নিজেই ঢাকার মূল্যবান পার্ক ও উম্মুক্ত স্থানের বিষয়ে সচেতন নয়। সিটি কর্পোরেশনের পার্ক ও উন্মুক্ত স্থানে আরও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এভাবেই ছোট ও মাঝারি আকারের পার্ক, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থান বলপূর্বক দখলের ঝুঁকিতে রয়েছে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, সুবন্ধন সমাজ কল্যাণ সংগঠন, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, বিসিএইচআরডি, নোঙর, সচেতন নগরবাসী, ইয়ুথ সান, জন উদ্যোগ, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলন, পুস্পাসাহা পুকুর রক্ষা কমিটি, আদিবাসী যুব পরিষদ, মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশন, ডাব্লিও বিবি ট্রাস্ট, ঐবাঁক, হীল, হিউম্যান রাইটস ডিফান্ডারস ফোরাম নামে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।