শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > শিবিরকর্মীদের লক্ষ্য করে অর্থমন্ত্রীর এপিএসের ভাইয়ের গুলি

শিবিরকর্মীদের লক্ষ্য করে অর্থমন্ত্রীর এপিএসের ভাইয়ের গুলি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করছে অর্থমন্ত্রীর এপিএসের ভাই মাসুম আহমদ -নিজস্ব ছবি হঠাৎ বাসা থেকে বেরিয়ে এলেন মাসুম। হাতে কালো রঙের রিভলবার। এমন সময় তার বাড়ির সামনের বেসিক ব্যাংকে ভাঙচুর করছিল শিবির কর্মীরা।

মাসুম দুই হাত দিয়ে রিভলবার তাক করে একের পর এক গুলি ছোড়েন। পর পর কয়েকটি গুলি। গুলির পরপরই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে দুই শিবির কর্মী। এ সময় মাসুমের রিভলবারের গুলিও ফুরিয়ে আসে। আত্মরক্ষার্থে মাসুম দৌড়ে গিয়ে আশ্রয় নেন বাসার ভেতর। এ সময় শিবির কর্মীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে বাসার দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। গতকাল দুপুরে সিলেট নগরীর শিবগঞ্জের দাদাপীরের মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলি বর্ষণকারীর নাম মাসুম আহমদ। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা ও লন্ডনপ্রবাসী। অর্থমন্ত্রীর সাবেক এপিএস ও মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আ স ম রাশেদের বড় ভাই। পূর্ব মিরাবাজারে তাদের বাসা। তাদের বাসার সামনে বেসিক ব্যাংকের শাখা ও মার্কেট রয়েছে। কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজের পরপরই সিলেটে সহিংস হয়ে ওঠে শিবিরকর্মীরা। তারা একযোগে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় তাণ্ডব চালায়। এ সময় শিবিরের ২৫-৩০ জন কর্মী পূর্ব মীরাবাজারে রাস্তায় বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড দেয়। প্রায় ৫টি যানবাহন ভাঙচুর করে এবং বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।

এক পর্যায়ে তারা বেসিক ব্যাংকের শাখাতে ইটপাটকেল ছোড়ে। ৩টি পেট্রলবোমাও ছোড়ে। এতে বেসিক ব্যাংকের ভেতরে আগুন ধরে যায়। ব্যাংকের ঠিক পিছনে অর্থমন্ত্রীর সাবেক এপিএস ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আ স ম রাসেদের বাসা। হামলা ও ভাঙচুরকালে রাশেদের লন্ডন প্রবাসী বড় ভাই মাসুম আহমদ বাসাতে ছিলেন। যখন শিবির কর্মীরা ব্যাংক ভাঙচুর করছিল তখন মাসুম রিভলবার হাতে দৌড়ে বের হন।

তিনি বাসার ঠিক সামনে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে শিবির কর্মীদের লক্ষ্য করে পরপর কয়েকটি গুলি চালান। এ সময় তার অবস্থান থেকে খুব বেশি দূরে ছিল না শিবির কর্মীদের অবস্থান। মাসুমের ছোড়া পর পর কয়েকটি গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শিবির কর্মী শাহান ও সায়েম। এর মধ্যে তাদের একজনের চোখের উপরে এবং অপরজনের পিঠে গুলি লাগে। গুলির শব্দ শুনে শিবির কর্মীরা পিছু হটলে মাসুম আবারও গুলি ছোড়েন। এক পর্যায়ে যখন তার গুলি শেষ হয়ে যায় তখন উপস্থিত শিবির কর্মীরা তার ওপর চড়াও হয়। কিন্তু তার আগেই মাসুম দৌড়ে বাসার ভেতরে অবস্থান নেন।

পেছনে ধাওয়া করে শিবির কর্মীরা তার বাসায় ইটপাটকেল ছোড়ে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে পালিয়ে যায় শিবির কর্মীরা। গুলি বর্ষণে আহত সায়েম ও শাহানকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন জামায়াতের এক শীর্ষ নেতা। তিনি জানান, দুই জনের মধ্যে যার পিঠে গুলি লেগেছে তার অবস্থা গুরুতর। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।

সিলেট মহানগর শিবিরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আনোয়ারুল ওয়াদুদ টিপু জানিয়েছেন, গুলিতে তাদের দুই কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ উল্টো ওই শিবির কর্মীদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে, অর্থমন্ত্রীর সাবেক এপিএস আ স ম রাশেদ জানিয়েছেন, শিবির কর্মীরা তার বাসায় আগুন দেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা বাসা ভাঙচুর করে। তিনি বলেন, রিভলবার লাইসেন্স করা। আত্মরক্ষার্থে গুলি করা হয়েছে। নতুবা শিবির কর্মীরা তার বাসা জ্বালিয়ে দিতো। এদিকে, সিলেট মহানগর পুলিশের এডিসি মিডিয়া মুহাম্মদ আইয়ূব জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই তিনি সেখানে গিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাসুমের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তবে, মাসুম গুলি ছোড়ার ব্যাপারে কিছুই বলেননি। তবে, অস্ত্রটি বৈধ না অবৈধ সেটি অনুসন্ধান করা হচ্ছে।