শুক্রবার , ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ , ১২ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > শিক্ষাঙ্গন > শিক্ষায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের প্রায়োগিক সমস্যা ও সমাধান

শিক্ষায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের প্রায়োগিক সমস্যা ও সমাধান

শেয়ার করুন

মোঃ নাজমুল হাসান ॥
আমি আনন্দিত হয়েছিলাম যখন জানতে পারলাম আমাদের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাসরুমগুলো মাল্টিমিডিয়া হবে, কারণ আমরা যখন লেখা-পড়া করতাম তখন আমাদের শ্রেণিকক্ষে যে বোর্ডটিতে লিখা হত তা ছিল কালো, এবং যা দিয়ে লিখা হত তা ছিল সাদা, দিনবদলের আধুনিকতার ছোঁয়ায় শিক্ষাউপকরণ হিসাবে যুক্ত হলো ব্ল্যাক বোর্ড ও চকের জায়গায় হোয়াইট বোড ও মার্কার, বিবর্তন হলো রঙের, কালোর পরিবর্তে সাদা (হোয়াইট বোর্ড), সাদার পরিবর্তে কালো (মার্কার)। ভাবলাম কাগজ-কলম, বোর্ড, চক আর মার্কারের দিন শেষ। যখন দেখলাম সরকার প্রথম ধাপে ২০ হাজার ৫০০ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করেছেন তখন আমার আনন্দ আর দেখে কে। কিন্তু হতবাক হলাম সরকারের এই বিশাল অংকের রাজস্ব ব্যয়ে স্থাপিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমগুলি কাদের দ্বারা পরিচালিত হবে উত্তর পেলাম, ২০ হাজার ৫০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ক্লাসরুম এবং ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে পাঠদান কর্মকান্ড নিশ্চিত করতে মাস্টার ট্রেইনারের দায়িত্ব পালন করবেন সারেচার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষকগণ। সরকারি অর্থব্যয়ে বিশাল উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রায়োগিক সমস্যা মোকাবেলা করে আলোর মুখ দেখবে এমন প্রত্যাশাই ছিল, কারণ যে দেশের শিক্ষা পদ্ধতি যতবেশি উন্নত যে জাতি ততবেশি উন্নত। আধুনিক বিশ^ প্রতিনিয়তই পরিবর্তন ও উন্নত হচ্ছে, উন্নত হচ্ছে মানুষের জীবন যাত্রার সামাজিক ও সংস্কৃতির চিন্তা চেতনায় জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে। তাই আমাদের মতো একটি উন্নয়শীল দেশে সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাতেই হয়।
আমরা যারা একুশ শতকের শিক্ষক, আমাদের মাধ্যমেই ডিজিটালযুগ বিনির্মাণ হবে এটা কি আমরা উপলব্ধি করেছি? বিংশ শতকের শিক্ষা আর একুশ শতকের শিক্ষার মধ্যে যে তথ্যগত, প্রযুক্তিগত, শিক্ষণ-শিখন পদ্ধতি, কারিকুলামসহ বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষের শিক্ষণ পরিবেশের মধ্যে যে পার্থক্য আছে, এটা হয়ত আমরা অনেকেই জানি না।
এ শতক বিদ্যালয়ে আদর্শ শিক্ষণ পরিবেশ সৃষ্টির কথা বলে, যেখানে বিশ^ জ্ঞানভান্ডরের সাথে শিক্ষার্থী- শিক্ষক অভিবাবকের মধ্যকার সেতুবন্ধন বা সংযোগ টিকে থাকার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের আয়ত্বে রাখতে হবে একুশ শতকীয় সাক্ষরতা- যার মধ্যে পড়ে মাল্টিকালচারাল, অর্থনৈতিক ও সাইবার সাক্ষরতা।
এখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পজেক্টভিত্তিক কাজের মাধ্যমে নিজেরাই শিখন দক্ষতাগুলো অর্জন করবে।
আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৪৫ মিনিটের নির্ধারিত ক্লাসের সময়ে বিষয়ভিত্তিক তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিকের হাতে কলমের শিক্ষা ঠিক কতখানি ফলপ্রসূ হয়, এই ব্যাপরে খানিকটা সন্দেহ আছে।
অন্যদিকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম গুলোর ব্যাপারে অধিকাংশ শিক্ষকের উদাসিনতার কারণে বেহালদশা আমরা সকলেই জানি। এক্ষেত্রে উত্তোরণের জন্য মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম মনিটরিং ব্যবস্থা অ্যাপসের ব্যবহার যথেষ্ট হয়। প্রয়োজন ম্যান্টরিং ব্যবস্থা জোরদার করা।
লেখক:
সুপারিনন্টেনডেন্ট,
লাখপুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসা,
শিবপুর, নরসিংদী।