বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
শব্দদূষণ একটি মারাত্মক সমস্যা। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে শিশুদের স্কুল ও হাসপাতালের সামনে প্রতিদিনই শব্দদূষণ বেড়েই চলেছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে বর্তমানে যে হারে শব্দ দূষণ হচ্ছে তাতে করে এই ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রা বজায় থাকলে দেশের অনেক শিশু বধির হয়ে যেতে পারে।
পরিবেশ অধিদফতরের এক জরিপে জানা যায়, দেশের কোথাও কোথাও শব্দের মাত্রা সর্বনিম্ন ৪০ ডেসিবল ও সর্বোচ্চ ১৩০ ডেসিবল পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।সাধারণত দিনে ১২০ ডেসিবলের আকস্মিক শব্দ ১০ হাজার বার একজন মানুষের জন্য সহনীয়। সেখানে কোনও কোনও স্থানে ১০ মিনিটেই প্রায় ৯০০ বারের বেশি হর্ন বাজার চিত্র উঠে এসেছে ওই জরিপে। এসব স্থানের বাসিন্দারা আছেন মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাদের মধ্যে অন্যতম ক্ষতির শিকার হচ্ছে শিশুরা।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. চৌধুরী ইয়াকুব জামাল বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট ডেসিবলের ওপর শব্দ গেলে তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এটা শিশুদের বিরক্তি বাড়িয়ে দেয়। একটা বয়স পরে এসব শিশুর কানে বধিরতা দেখা দিতে পারে। শব্দ যখন সহ্যক্ষমতার বাইরে যায় তখন তা কানে সমস্যা বাঁধায়।’
তিনি আরও বলেন, গাড়িতে যেসব হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করা হচ্ছে তা কানের শ্রবণক্ষমতার জন্য আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। শিশুদের যথাযথ বেড়ে ওঠার জন্য অবশ্যই হর্নের যত্রতত্র ব্যবহার বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সরকার ও গণমাধ্যমের সহযোগিতায় এটা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। আমাদের সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তাহলেই শব্দদূষণ কমে আসবে ও শিশুদের জন্য সুন্দর আগামীর পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হবে।’
বাপা’র জাতীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ সাইফুল আলম শব্দদূষণ প্রতিরোধে করণীয় প্রসঙ্গে বলেন, ‘শব্দদূষণ প্রতিরোধে গাড়িচালকদের পাশাপাশি অবশ্যই যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, তারা যে গাড়িতে যাতায়াত করছেন তা থেকে উৎপন্ন শব্দ তাদের নিজেদের জন্যই ক্ষতিকর। তাই হর্ন বাজালেই প্রতিবাদ করতে হবে।’ এছাড়া শব্দদূষণ রোধে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।পাশাপাশি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদফতরকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে বলেন।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউনে