সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > শঙ্কা কেটেছে, এবার সফরে বেরুবেন এরশাদ

শঙ্কা কেটেছে, এবার সফরে বেরুবেন এরশাদ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ দলের নেতৃত্ব নিয়ে স্ত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে নীরব দ্বন্দ্ব, দলের অস্তিত্ব নিয়ে টানাপোড়েন, কৌশলে নির্বাসনে পাঠানোর শঙ্কা কাটিয়ে উঠেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে বিদেশ সফরে বের হওয়ার মনস্থির করেছেন।

দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রায় তিন মাস কেটে গেছে দূত হিসেবে তেমন কোনো দায়িত্বই পালন করেননি এরশাদ। কিন্তু এখন তিনি নিয়মিত অফিস করছেন। আগামী মাসেই মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশ সফর করবেন। পরে আরও চারটি দেশ সফর তালিকায় যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এরশাদের এ সফরে প্রাধান্য পাবে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও জনশক্তি রপ্তানির বিষয়গুলো। সফরের প্রথমেই যাবেন কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ সফর আগামী মাসের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে হতে পারে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে হতে পারে বলেও জানিয়েছেন অনেকে। কিন্তু এখনও এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাননি এরশাদ। সুতরাং প্রস্তুত হয়ে বসে থাকলেও সবুজ সংকেতের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে।

জানা গেছে, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে মূলত বাংলাদেশ থেকে শ্রমশক্তি আমদানি বাড়ানোর তাগিদ নিয়ে যাবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে এটাই হবে তার প্রথম বিদেশ সফর। পুরো সফরে জনশক্তি রপ্তানিসহ বিদেশিদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা ছাড়াও মুসলিম দেশগুলোতে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা চালাবেন তিনি। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলেও কাজ করবেন।

পার্টির সূত্র আরও জানায়, এরশাদ এ সফর নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছিলেন। পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও। মধ্যপ্রাচ্যসহ কয়েকটি দেশে তার সফরের কথা জানিয়ে তিনি ইতোমধ্যে চিঠিও দিয়েছেন। পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের জন্য কয়েকদিন আগে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, সৌদি আরবের সরকার প্রধানদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন এরশাদ। তাদের সাড়া মিললে আগামী মাসেই সফর শুরু করবেন। তবে এখনও কারো পক্ষ থেকে সাড়া মেলেনি।

এদিকে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর বেশ বিপাকে রয়েছে সরকার। ফলে এই মুহূর্তে বিদেশ নিয়ে তেমন মাথা ঘামানো সময় পাচ্ছে না তারা। ফলে এ মাসে এরশাদকে সরকার বাইরে পাঠাচ্ছে না বলে জানান জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পাওয়ার এরশাদের ভয় ছিল সরকার তাকে বিদেশে পাঠিয়ে নির্বাসন দিতে পারে। এই সুযোগে পার্টিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাকার করে ফেলে এই আশঙ্কায় তিনি এতদিন দেশের বাইরে যেতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু এখন সেই ভীতি অনেকটাই কেটে গেছে।

পার্টির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশেষ দূতের দায়িত্ব দেয়ার পরই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এরশাদকে যাওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বেশ চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল। সেই চাপ এখনো অব্যাহত রয়েছে। তবে এ চাপ তাকে নির্বাসিত করার জন্য নয় সরকারের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার জন্য।

পার্টির নেতারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ফলে রেমিট্যান্সে দারুণভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এখন সম্পর্ক উন্নয়নে এরশাদকেই কাজে লাগাতে চাইছে সরকার। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হিসেবে কুয়েত ও কাতারের সঙ্গে এরশাদের বেশ ভালো সম্পর্ক।

গত ২২ জানুয়ারি এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে পার্টি প্যাডে একটি বিবৃতি দেন। ওই বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে আমার প্রথম এবং প্রধান কাজ হবে একটি আধুনিক মুসলিম প্রধান গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুমহান ভাবমূর্তি বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেয়া।’

এ ব্যাপারে পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘তিনি তার দায়িত্বে অংশ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠক করেছেন। তাদের সাথে প্রতিদিন তার দেখা হয়। তাদের সাথে কথাও বলছেন।’

আগামী মাসে সফরে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তিনি মধ্যপ্রাচ্য যাবেন তবে এ মাসে নয়। তিনি গেলে অবশ্যই জানতে পারবেন।’ বাংলামেইল২৪ডটকম