লাইফস্টাইল ডেস্ক ॥ নারীরা সাধারণত ফ্যাশনের জন্য ঠোঁটে লিপস্টিক ও লিপগ্লস ব্যবহার করে থাকে৷ বর্তমানে এগুলো হচ্ছে ফ্যাশনের অন্যতম অংশ৷ এবার পরীক্ষায় দেখা গেছে লিপস্টিক এবং লিপগ্লসে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ধাতুর উপস্থিতি রয়েছে৷লিপস্টিকে যে লেড বা সীসা থাকে তা আমাদের প্রায় সবারই জানা। তবে নতুন এক গবেষনায় বের হয়ে এসেছে আরও ভয়াবহ সব তথ্য। জনপ্রিয় সব লিপস্টিক ও লিপগ্লসে আছে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ও ম্যাংগানিজ যা ভয়ানক সব রোগ ও অর্গান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে ইউনিভার্সিটির এনভায়মেন্টাল হেলথ সায়েন্সের অধ্যাপক ক্যাথরিন হ্যামন্ড বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক পরীক্ষায় লিপস্টিক ও লিপগ্লসে ৯ ধরনের ধাতুর উপস্থিতি পেয়েছি। তবে এগুলো উচ্চমাত্রায় নয়। ধাতুর উপস্থিতি স্বল্পমাত্রায় হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে না।’ তবে তিনি ভবিষ্যতে মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশংকা করছেন। তেমনটি হলে যারা এগুলো ব্যবহার করেন তাদের ভয়াবহ কিডনি সমস্যা হতে পারে। এ ব্যাপারে তাদের গবেষণা অব্যহত থাকবে বলেও তিনি মতামত দিয়েছেন। গবেষণা হয়েছে ভিন্ন ব্র্যান্ডের আটটি লিপস্টিক ও ২৪টি লিপগ্লস নিয়ে৷ এগুলোর দাম ৫.৫৯ থেকে ২৪ ডলারের মধ্যে৷ এসব পণ্য সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন সুপার স্টোর এবং প্রসাধনীর দোকান থেকে৷ গবেষণায় দেখা যায়, উচ্চমাত্রার ক্যাডমিয়াম কিডনীতে জমা হয় যা রেনাল ফাংশন বন্ধ পর্যন্ত করে দিতে পারে। এতটা উচ্চমাত্রা যদিও শুধুমাত্র লিপস্টিক এ একা থাকেনা, তবে প্রতিদিনের খাবারে যে পরিমাণ ক্যাডমিয়াম থাকে তার সাথে লিপস্টিকেরটা যোগ করলে আপনি হয়তো বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছে যেতে পারেন। যাদের কিডনী বা অন্য কোন রেনাল সমস্যা আছে, তাদের জন্য লিপস্টিক মারাত্মক বিপদ বয়ে আনতে পারে।
এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রান্ড গুলোর মধ্যে ৭৫% ঢ়ৎড়ফঁপঃ এ লেড আর ৩০% ঢ়ৎড়ফঁপঃ এ ক্রোমিয়াম আছে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি। এক্সপার্টদের মতে লিপস্টিকের ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ম্যাংগানিজ ও এলুমিনিয়ামের মাত্রা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয়। আবার যারা দিনে একাধিকবার লিপস্টিক বা লিপগ্লস লাগান, তারা অতিরিক্ত মাত্রায় ক্রোমিয়াম শরীরে ঢুকাচ্ছেন। এই ভারী ধাতুটি পাকস্থলীতে টিউমার তৈরীর ঝুঁকি বাড়ায়।
সবচেয়ে ভয়ানক এবং চিন্তার বিষয় হলো, এই সব ধাতুগুলোর উপস্থিতি কোন লিপস্টিকের লেবেল-এ লেখা থাকেনা। মার্কিন ও ইউরোপীয় আইন অনুযায়ী কোন পণ্যের গায়ে তার কন্টামিনান্ট বা দূষক পদার্থের নাম লেখার বাধ্যবাধকতা নেই। আর আইনের এই ফাঁক গলেই বের হয়ে যাচ্ছে নামী-দামী সব ব্রান্ড। বাংলাদেশে যেহেতু এসব ব্রান্ডগুলোই বেশী জনপ্রিয়, তাই এদেশের ব্যবহারকারীরাও আছেন সমান ঝুঁকিতে। আর নামী ব্রান্ডগুলোর-ই যেখানে এই অবস্থা, সেখানে ননব্রান্ড প্রোডাক্টে কী আছে তাও ভেবে দেখার বিষয়।