সৈয়দ মুজিবুর রহমান দুলাল, লাকসাম :
কুমিল্লার লাকসামে একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে মঈনুল ইসলাম জাফরী নামে এক ব্যক্তি সাংবাদিক ও সুশীল সমাজকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানাহ রকম অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে। ওইসব মন্তব্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন।
ওইদিন সকাল ১০টায় ইক্বরা মহিলা মাদ্রাসার সামনে লাকসাম পৌরসভা সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সাংবাদিকরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মঈনুল ইসলাম জাফরীসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। মানববন্ধন কর্মসূচিতে লাকসাম প্রেসক্লাব লাকসাম সাংবাদিক ইউনিয়ন লালমাই প্রেসক্লাব লাকসাম বৈষম্য বিরোধি ছাত্র আন্দোলন নিহত সামিয়ার পরিবার ও সহপাঠীসহ ছাত্র জনতা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি লাকসাম পৌর শহরের দৌলতগঞ্জ বাজারের ব্যাংক রোড চত্বরে এসে শেষ হয় এবং সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
এ সময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লাকসাম প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কালের কন্ঠ প্রতিনিধি মোঃ মুজিবুর রহমান দুলাল, প্রেস ক্লাবের আহবায়ক মনির আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক যায়যায়দিন প্রতিনিধি আরিফুর রহমান স্বপন, সদস্য সচিব বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধি ফারুক আল শারাহ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সংবাদ টুডে সম্পাদক আব্দুর রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডেইলি প্রেজেন্ট টাইম প্রতিনিধি সেলিম চৌধুরী হিরা সহ সাধারণ সম্পাদক দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন, লালমাই প্রেসক্লাব সাংগঠনিক সম্পাদক কুমিল্লার কাগজ প্রতিনিধি প্রদীপ মজুমদার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিনিধি প্রমুখ। ঘটনার বিবরণে জানা যায় লাকসাম ইক্বরা মহিলা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। ওই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার অনুসন্ধানে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিতে যায়। এ সময় মাদ্রাসার প্রধান মো জামাল উদ্দিন সংবাদকর্মীদের সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে যান এবং অশালীন আচরণ করেন।
ইক্বরা মাদ্রাসার ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু শিরোনামে ১৯ এপ্রিল দৈনিক কালের কণ্ঠর অনলাইনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার পরিচালক আজিজুল ইসলামের মেয়ের জামাতা জনৈক মঈনুল ইসলাম জাফরী সাংবাদিক সুশীল সমাজ ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ এবং আপত্তিকর মন্তব্য ফেসবুকে তাঁর ভ্যারিফাইড পেইজে প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল দিবাগত রাত ৩টার দিকে ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সামিয়াকে স্থানীয় লোকজন মাদ্রাসার পাশের সড়ক থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে পরদিন শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি ওই শিক্ষার্থী মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাঁচতলা ভবনের একটি জানালার ফাঁক দিয়ে নিচে ঝাঁপ দেয় এবং আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে নিহত শিক্ষার্থী সামিয়ার পরিবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ওই দাবি প্রত্যাক্ষান করেন। তাঁদের অভিযোগ সামিয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন। ১২ বছর বয়সী একজন শিক্ষার্থী পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিচে আরসিসি পাকা সড়কের ওপর পড়লে কি আস্ত থাকবে। একটু রক্তও বের হবে না।