রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > রোকেয়া পদক প্রদান ॥ নারী উন্নয়নে সরকারের ২৫ উদ্যোগ

রোকেয়া পদক প্রদান ॥ নারী উন্নয়নে সরকারের ২৫ উদ্যোগ

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ঢাকা: সরকার ২৫টি ক্ষেত্রে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে নারীদের ব্যাপক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সময় ক্ষমতায় আসার পর নারী উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এসব উদ্যোগের ফলে নারীরা আত্মকর্মসংস্থান প্রক্রিয়ায় স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।

বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন ও রোকেয়া পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ বিষয়গুলো তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় তিনি এ বছরের রোকেয়া পদকে ভূষিত দুই কৃতি নারী বিবি রাসেল এবং তাইবুন নাহার রশীদের হাতে রোকেয়া পদক ও সম্মাননা তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ বাস্তবায়ন করছে।পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে তাতে কিছু পরিবর্তন আনে। এরপর আমরা আবার ক্ষমতায় এসে যৌক্তিক দাবিগুলো রেখে নতুন করে পরিবর্তন আনি।

আমরা কেবল নারীদের অবস্থানই শক্ত করিনি, মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ পূর্ণ গড় বেতনে ৪ মাস থেকে ৬ মাসে বর্ধিত করা হয়েছে। সন্তানের পরিচয়ের ক্ষেত্রে পিতার নামের পাশাপাশি মায়ের নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে ৫০ এ উন্নীত করা হয়েছে। নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং নারীকে সুরক্ষার জন্য পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ এবং পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা-২০১৩ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। শিগগির তা বাস্তবায়ন করা হবে।

‘গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে ডিএনএ আইন-২০১৪ কার্যকর হয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যুগব্যাপী জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৩-২০২৫) প্রণয়ন করা হয়েছে।’

‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৪ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে। যৌতুক নিরোধ আইন-১৯৮০ সংশোধন করে যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৫ প্রণীত হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪০ লাখ নারী শ্রমিক গার্মেন্টসে কাজ করে। দু’দফায় তাদের বেতন সর্বসাকুল্যে শতকরা ২১৯ ভাগ বাড়িয়ে ১৬শ’ ৬২ টাকা থেকে ৫ হাজার ৩শ’ টাকা করেছি।

মহিলা উদ্যোক্তারা পুরুষ উদ্যোক্তাদের থেকে ৫ থেকে ৬ শতাংশ কম সুদে ঋণ পাচ্ছেন।

‘দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করছে। ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল থেকে গার্মেন্টসে কর্মরত দুগ্ধদায়ী ও গর্ভবতী মা’কেও ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের নিবন্ধনকৃত ১৭ হাজার ৬শ’ ৩৯টি সমিতিতে সরকার অনুদান দিচ্ছে।’

‘খাদ্য ও জীবিকা নিরাপত্তা (এফএলএস) প্রকল্পের মাধ্যমে নাটোর, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ২২টি উপজেলায় বিশেষ প্রকল্প কার্যক্রম চলছে। সেগুনবাগিচায় ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মহিলা ও শিশু ডায়াবেটিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৪০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জেন্ডার বাজেটিং রিপোর্ট প্রণয়ন করা হয়। সরকার ৮টি কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল পরিচালনা করছে।

‘দেশের ৬৪টি জেলায় ৪৮৯টি উপজেলার ৪ হাজার ৫শ’ ৪৭টি ইউনিয়নে দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচি চালু রয়েছে। গাজীপুরে শহীদ শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব মহিলা প্রশিক্ষণ একাডেমি ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ২৩ হাজার ৮শ’ ৮৮ জন নারীকে সেবা প্রদান করেছে। ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল জানুয়ারি ২০১৩ সাল হতে সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ১৬ হাজার ১শ’ ৭৯ জন নির্যাতনের শিকার নারীকে সহায়তা প্রদান করেছে।

‘সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে মোট ৩ হাজার ২শ’ টি মামলার ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে। দেশের ৮টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে প্রাক্তন ভিকটিমদের নিয়মিত মাসিক ফলোআপ সভা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার ১০ হাজার ৯শ’ ২১ জন যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও বাল্য বিবাহ বন্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। জাতীয় মহিলা সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল’র কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ন্যাশনাল সেন্টার অন জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো, বাংলাদেশের মানুষকে উন্নত করে তুলতে চাই। গ্রামের মানুষও যেন উন্নত জীবন পেতে পারে, নাগরিক সুবিধা পেতে পারে, আমরা সেই চেষ্টা করছি। আশা করি, আমাদের মা-বোনরা সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হবে।