বিনোদন ডেস্ক ॥ গেল সপ্তাহে ভারত জুড়ে মুক্তি পায় যশরাজ ফিল্মস প্রযোজিত ‘গুণ্ডে’ চলচ্চিত্রটি। মুক্তির আগেই আলোচনায় আসা এই চলচ্চিত্রটি মুক্তির এক সপ্তাহ পরও আলোচনার শীর্ষে অবস্থান করছে। প্রায় ৫০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত এই ছবিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই বক্স অফিস থেকে আয় করেছে প্রায় ৫৮ কোটি রুপি। তার মানে ছবিটি ব্যবসায়িক ভাবে সফলতার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তার উল্টো চিত্র দেখা যায়, আইএমডিবি’র রেটিংয়ে। কারণ সর্বনিম্ন স্কোর নিয়ে আইএমডিবি বটম হান্ড্রেডের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করছে ‘গুণ্ডে’ ছবিটি। অর্থ্যাৎ মানের দিক থেকে ছবিটি সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে।
বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করতে পারলেও, ঠিক কি কারণে ছবিটি আইএমডিবি রেটিংয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে তা জানতে হলে চোখ ফেরাতে হবে ভারতের পাশ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশের উপর। কারণ আইএমডিবি রেটিংয়ে ছবিটির এতো খারাপ অবস্থানে থাকার মূল কারণ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীরা।
অনেকে বিষয়টি মানতে নারাজ হলেও, এটাই সত্য। কারণ মুক্তির পরপরই ছবিটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ উঠে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শুরু হয় প্রতিবাদের ঝড়। সেই প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীরা বেছে নেয় আইএমডিবি রেটিং পদ্ধতিকে। তারা একের পর এক রেটিং করে ছবিটিকে সর্বনিম্ন স্কোর প্রদান করতে থাকে। উপায় না দেখে যশরাজ ফিল্মস বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রেমীদের উদ্দেশ্য করে বিবৃতি দিয়ে দুঃখ প্রকাশের পাশাপাশি ক্ষমা প্রার্থনা করে। যদিও ততদিনে ‘গুণ্ডে’র রেটিং ১.২ তে নেমে এসেছে।
এদিকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করলেও, ছবির যে অংশটির বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে, তা বহাল তবিয়তেই প্রচার করে চলেছে যশরাজ ফিল্মস কর্তৃপক্ষ। তাই বাংলাদেশী চলচ্চিত্রপ্রেমীদের দাবি শুধুমাত্র ক্ষমা প্রার্থনা করলেই চলবে না, পাশাপাশি ছবিটির বেশ কিছু অংশ সংশোধন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ছবিটির শুরুর দিকে বলা হয়, ‘১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১, হিন্দুস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় যুদ্ধ শেষ হয়। ৯০ হাজার পাকিস্তানি সেনা হিন্দুস্তানের সেনাদের সামনে আত্মসমর্পণ করেন। জন্ম হয় এক নতুন দেশ, বাংলাদেশ।’ পাশাপাশি ছবিটির বিভিন্ন অংশে বাংলাদেশের মুক্তিযদ্ধের বিভিন্ন ফুটেজ ও ভিডিও দেখানো হয়। এসব ভিডিওতে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানসহ, উদ্বাস্তু শিবিরের বিভিন্ন দৃশ্য দেখানো হলেও, একবারের জন্যেও বলা হয় নি এটা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।