শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > রিলায়েন্সের অবৈধ ব্যয় ৩০ কোটি টাকা

রিলায়েন্সের অবৈধ ব্যয় ৩০ কোটি টাকা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: বিনিয়োগ, ঋণ, অগ্রিম, স্থায়ী-অস্থায়ী সম্পদ, ভ্যাট-ট্যাক্স, চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের সুযোগ-সুবিধা এবং ব্যবস্থাপনার নামে অবৈধ ব্যয় করেছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

এর মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনার নামে ৩০ কোটি টাকা অবৈধ ব্যয় দেখিয়েছে বেসরকারি খাতের বিমা কোম্পানিটি।

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বিশেষ অডিট ফার্ম (বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান) রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ।

গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, বিনিয়োগ, ঋণ, অগ্রিম, স্থায়ী সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদ, গাড়ি, জমি ও বিল্ডিং, নগদ টাকার পর্যালোচনাসহ ওই তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।

বিমা আইন-২০১০ এর ২৯ ধারার ক্ষমতা বলে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়ে চিঠি দিয়েছে আইডিআরএ। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুই মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিমা আইনের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে- ‘আইনের অন্য কোনো বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিমা ব্যবসা পরিচালনাকারী যেকোনো বা সব বিমা কোম্পানির বিমা সংক্রান্ত সব লেনদেন, রেকর্ডপত্র, দলিল দস্তাবেজ, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এক বা একাধিক নিরীক্ষক দিয়ে নিরীক্ষা করাতে পারবে’।

‘এ ধারার অধীনে নিযুক্ত নিরীক্ষক বিমাকারীর বিমা ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ডপত্র, হিসাব বই, রেজিস্টার, ভাউচার, পত্র এবং অন্য সব দলিল পরিদর্শন করতে পারবে এবং এ উদ্দেশ্যে বিমাকারীর যেকোনো পরিচালক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বক্তব্য শুনতে এবং বিমাকারীর কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র ও তথ্য তলব করতে পারবে’।

ধারা অনুসারে, ‘নিরীক্ষা কাজের জন্য নিয়োগ পাওয়া নিরীক্ষক সর্বোচ্চ চার মাসের মধ্যে একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন। প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনের চারটি কপি আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে হবে’।

আইডিআরএ’র কাছে তথ্য রয়েছে, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ব্যবস্থাপনার নামে ৩০ কোটি টাকা অবৈধ ব্যয় করেছে। কোম্পানিটি ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়েছে ১৯৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। অথচ নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা ব্যয় ১৬৮ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে। সে হিসাবে গত সাত বছরে ৩০ কোটি টাকা অবৈধ ব্যয় করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। যা বিমা আইন-২০১০ এর ৬৩ ধারা ও বিমা বিধিমালা-১৯৫৮ এর লঙ্ঘন।

অবৈধ ব্যয়ের মধ্যে ২০০৯ সালে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, ২০১০ সালে ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে ৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং ২০১৫ সালে ৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে কোম্পানিটি।

আইডিআরএ’র সদস্য জুবের আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, বিমা কোম্পানিটিতে নিরীক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খালেদ মাহমুদের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। তবে সাবেক এমডি এ এম এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, পুরনো আইন অনুসারে নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে। কিন্তু সময়োপযোগী আইন করা হলে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ঠিক থাকবে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম