বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, সরকার নিজেই দেশি-বিদেশি কতিপয় গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে সুন্দরবন তথা বাংলাদেশের জন্য রামপালসহ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে ধ্বংস ডেকে আনছে। রূপপুর প্রকল্প দিয়ে পদ্মা নদীসহ বাংলাদেশের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনছে।
বুধবার জাতীয় কমিটির এক জরুরি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে জাহানারা গার্ডেনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সুন্দরবনের অস্তিত্বের জন্য হুমকি রামপাল প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রাণপ্রকৃতি বিনাশী প্রকল্প নিয়ে সরকারের একগুয়ে তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় বিশ্ব ঐতিহ্য এবং বাংলাদেশের প্রাণ সুন্দরবন রক্ষা ও বিকাশের দাবিতে ১ জুলাই সমাবেশের কথা জানানো হয়।
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সুই থেকে রকেট সবকিছুই আমরা নির্মাণ করতে পারব, চাইলে আমরা আরেকটা তাজমহলও বানাতে পারব কিন্তু এই বিস্তৃত শক্তিশালী সুন্দরবন বানাতে পারব না। বাংলাদেশ ও বিশ্বের জন্য এর গুরুত্বের কারণে ইউনেস্কো সুন্দরবনের একাংশকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। যেখানে বাংলাদেশের জন্য জীবনদানকারী সুন্দরবন রক্ষা ও বিকাশে সরকারের সক্রিয় ভূমিকা থাকার কথা সেখানে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ বিদেশি স্বার্থরক্ষা ছাড়া কিছুই না।
সভাপতির বক্তব্যে প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, একগুয়েমী ও মিথ্যাচার দিয়ে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। শোষক ও লুটেরা শ্রেণির স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে সরকার বাংলাদেশের সর্বনাশ করছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে এগুলো বন্ধের আন্দোলন জোরদার করতে হবে।
সভায় বক্তারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর ভয়াবহ ঋণের বোঝা চাপিয়ে, ঝুঁকি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত না করে, প্রকল্পসংলগ্ন কোটি মানুষকে প্রত্যক্ষ ঝুঁকির মধ্যে ফেলে, পদ্মা নদী এবং সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে মহাবিপদে নিক্ষেপ করে ব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ সম্পর্কে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান।
সভায় সুন্দরবনবিনাশী রামপাল প্রকল্পসহ প্রাণপ্রকৃতি বিনাশী প্রকল্প বন্ধ করে জাতীয় কমিটির প্রস্তাবিত সুলভ পরিবেশবান্ধব খসড়া মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আলোচনা শুরু করতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়। এদিকে সভায় এই দাবিতে ২৮ জুন খুলনায় ও ১ জুলাই ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ সফল করবার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মোশারেফ হোসেন নান্নু, জুলফিকার আলী, নাসির উদ্দিন নাসু, খালেকুজ্জামান লিপন, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, মঈনউদ্দীন চৌধুরী লিটন, মনির উদ্দিন পাপ্পু, রজত হুদা, খোরশেদ আলম প্রমুখ।