বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হবে-মঙ্গলবার রাতে এ খবরে ঢাকাসহ সারা দেশে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালায় জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এতে গাজীপুরে পেট্রোল বোমা হামলায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মা ও তার শিশুসন্তান নিহত হয়েছে। ফেনীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন এক শিবিরকর্মী। সাতক্ষীরায় এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্য করা হয়।
গাজীপুর সদর উপজেলার ঢাকা-বাইপাস সড়কের মোগরখাল এলাকায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশে পেট্রোল বোমা হামলা চালানো হয়। কাভার্ড ভ্যানে ছিলেন আদম আলী ও তার স্ত্রী সুমি আক্তার (২৮), মেয়ে সানজিদা (৮) ও সাদিয়া (২)। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে কাভার্ড ভ্যানের সামনের আসনে থাকা সুমি ও সানজিদা পুড়ে মারা যায়। আদম আলী ও তার আরেক মেয়ে এবং চালক ও তার সহযোগীও অগ্নিদগ্ধ হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গাজীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ঢাকা বাইপাস সড়কের ভোগড়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অন্তত আট যাত্রী আহত হন।
ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা সড়কে ছাত্রশিবিরের কর্মীরা অবরোধ সৃষ্টি করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় সময় কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ডে সালমান (২০) নামের এক তরুণ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ফেনী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এ কে এম শামসুদ্দিন তাকে শিবিরের কর্মী বলে দাবি করেন। শহরের টিঅ্যান্ডটি কার্যালয়ের সামনে রাখা একটি জিপ ও কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে থাকা একটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে মঙ্গলবার তুলে নিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। বুধবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল হামিদ (৪৮)। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বলাডাঙ্গা গ্রামের জমির আলী বিশ্বাসের ছেলে।
জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা রাজশাহী শহরের রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক চৌধুরীর রাজশাহীর বাসায় বোমা হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে সংঘর্ষ বেধে যায়। শিবির পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
আমাদের খুলনা ব্যুরো জানায়, রাত সাড়ে নয়টায় খুলনার খানজাহান আলী সড়কের পিটিআই ও মডার্ন ফার্নিচার মোড়ে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষ হয়। পিটিআই মোড়ে একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম ও রেল পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ১৫-২০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কাদের মোল্লার ফাঁসির খবর প্রচারের পরপরই এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত সাতটি ককটেল উদ্ধার এবং সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে।
এছাড়া গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।