শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > রাজধানী ঘিরে সক্রিয় হিযবুত

রাজধানী ঘিরে সক্রিয় হিযবুত

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ রাজধানী ঢাকার আশপাশে তৎপরতা চালাতে সক্রিয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ৫ হাজার সদস্য। আত্মগোপনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনের ডজনখানেক নেতা। রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর লিফলেট বিতরণের সময় ৩ তাহরীর কর্মীকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এই ধরনের চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে। ধর্মীয় উন্মাদনার নামে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে প্রচারপত্র বিলি করার সময়ে ধরা পড়ে হিযবুত তাহরীর ৩ কর্মী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, রাজধানীর আশপাশে তাদের ৫ হাজারের বেশি কর্মী তৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে আত্মগোপনে থাকা একডজন হিযবুতের কেন্দ্রীয় নেতা।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেফতারকৃত হিযবুত তাহরীর সদস্যরা হচ্ছে নাজমুল (১৯), রাজন (২৫) ও নয়ন (২৯)। ‘উত্তর বাড্ডার হাজীপাড়ায় লিফলেট বিতরণের সময় তাদের আটক করে পুলিশ। তখন তাদের লিফলেট বিতরণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অল্প কয়েকটি লিফলেট পাওয়া গেছে তাদের হাতে। লিফলেটগুলো বিতরণ করা হয়ে গেলে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেত বলে জানিয়েছেন বাড্ডা থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা। পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত ৩ হিযবুত কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, আত্মগোপনে থেকে কেন্দ্রীয় হিযবুত নেতাদের মধ্যে আছেন মাওলানা মামুনুর রশীদ, ড: সৈয়দ গোলাম মাওলা, শেখ তৌফিক, অধ্যাপক মুস্তফা মিনহাজ, সাখাওয়াত হোসেন, মামুনুর রশীদ আনছারী, আহাম্মদ জামান, মনির হোসেন, ডা: গোলাম মোস্তফা, ডা: সাঈদ, মোঃ শাহাজালাল মিয়া ও স্থপতি ফারহানা খানম। পুলিশের চোখে এরা সবাই পলাতক।
হিযবুতের এখন উদ্দেশ্য হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাধাগ্রস্ত করা। এ জন্য তারা নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালানোর তৈরি করা ছক অনুযায়ী তৎপরতা শুরু করেছে। হিযবুত তাহরীরকে সহায়তা করছে জামায়াত-শিবির। তাদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের গোপন যোগাযোগ আছে বলে জানিয়েছে আটক তিন হিযবুত কর্মী।
সূত্র জানায়, জিহাদী বই ও আপত্তিকর লিফলেটসহ নানা ধরনের তৎপরতার সঙ্গে জড়িত গ্রেফতারকৃত হিযবুত তাহরীর কর্মীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, হিযবুতের নেতৃত্বে দেশে অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে। সময় ও সুযোগ হলে তারা পরিস্থিতির সুযোগ নেবে। সরকারকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে পলাতক হিযবুত নেতৃত্ব তাদের মাঠে নামিয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে হিযবুত তাহরীর রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে তৎপরতা চালাচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, হিযবুত তাহরীর গ্রেফতারকৃত সদস্যদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধান করে জানা গেছে, নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীর তৎপরতা চালাচ্ছে খোদ রাজধানীতে। তারা শুধু রাজধানীর বাড্ডা এলাকা নয়, দক্ষিণখান থানা এলাকা হচ্ছে রীতিমতো হিযবুত তাহরীর ঘাঁটি। হিযবুত তাহরীর সদস্যরা এই এলাকাকে নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছে। এর আগে পাঁচ হিযবুত তাহরীর সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারও আগে গ্রেফতার করা হয় আরও ৪ হিযবুত কর্মীকে। গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে কঠোর গোপনীয়তায়। মোহাম্মদ হোসেন ওরফে রনি, কাজী রাশেদুল হক ওরফে রাজিব, সবুজ ওরফে বাবু ও হারেছ—হিযবুত তাহরীরের এই ৪ সদস্য তৎপরতা চালানোর সময়ে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারের পর তারা জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ৫ হাজার হিযবুত কর্মী প্রকাশ্যে তৎপরতা চালাচ্ছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, হিযবুত তাহরীর কর্মীদের বিলি করা লিফলেটে লেখা আছে, ভারত-মার্কিনীর দালালেরা হুঁশিয়ার, খিলাফত রাষ্ট্র গঠনের ডাক দেয়া, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগারসহ সরকার সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাম্প্রাদায়িক উস্কানি দেয়া হয়েছে। জুমার নামাজ শেষে বিভিন্ন মসজিদের সামনে হিযবুতের লিফলেট বিলি করে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে নাশকতা, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উস্কানি দিয়ে চলেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীর। জনকণ্ঠ, বা:মে:, বা:ট্রি:, দ্য :রি: