সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > রাজধানীতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীরা

রাজধানীতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীরা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
বর্তমান সময়ে রাজধানীতে হঠাৎ করে বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীরা। গত এক সপ্তাহে গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বেশকিছু ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অস্ত্রের মুখে ১২ লাখ টাকা ছিনতাই করে তিন যুবক। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেশ ক-রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোঁড়ে তারা।

সাম্প্রতি এমন বেশকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে । ঢাকা মেডিকেল সূত্র জানাচ্ছে, গত এক সপ্তাহে ছিনতাইকারীর হাতে আহত হয়েছেন অনন্ত ৮ জন।

৫ ফেব্রুয়ারি উত্তরায় দুই জনকে চার জন গুলি করে। ৬ ফেব্রুয়ারি আশুলিয়ায় তিন জনকে চার জন গুলি করে। ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জনকে চার-পাঁচ জন গুলি করে। ৯ ফেব্রুয়ারি কলাবাগানে এক জনকে পাঁচ-ছয় জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। ১০ ফেব্রুয়ারি টিকাটুলী দুই জনকে চার-পাঁচ জন কুপিয়ে দেয়।

ঢাকায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ৭টি আর ফেব্রুয়ারির প্রথম ১০ দিনে হয়েছে পাঁচ মামলা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, রাজধানী ও আশপাশের এলাকাতে ছিনতাইয়ে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১২টি সংঘবদ্ধ চক্র। এছাড়াও এলাকাভিত্তিক ছিনতাইয়ে জড়িত আরো ক’টি গ্রুপ।

নবীনগর, আশুলিয়া, সাভার এলাকায় ছিনতাইয়ে করছে আনোয়ার গ্রুপ। ব্যবসায়ীরাই এদের প্রধান টার্গেট। এদের মধ্যে আনোয়ার গ্রুপের স্থান নবীনগর, আশুলিয়া, সাভার।

গাজিপুর, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জের একাংশসহ রাজধানীর উত্তরায় ছিনতাইয়ে জড়িত সাগর গ্রুপ। সক্রিয় সদস্য ১২-১৫ জন। সাগর গ্রুপের স্থান গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার, উত্তরা। সক্রিয় সদস্য রয়েছে হানিফ, এনামুল, শফিক, মনির, ফারুকসহ বেশ কজন।

যাত্রাবাড়ী, ডেমরাসহ নারায়ণগঞ্জের আরেক অংশে সক্রিয় সুরুজ ব্যাপারী গ্রুপ। কজন নারী সদস্যও রয়েছে গ্রুপটিতে। সুরুজ ব্যাপারী গ্রুপের স্থান যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জ। এদের সক্রিয় সদস্য রয়েছে জয়নুননেসা, মনিরা, নুরুজ্জামান, মনির, আবুল, কাশেম, শরিফ, স্বপন, নয়ন, হোসেনসহ আরও কজন।

রাজধানীর মিরপুর, গাবতলীসহ আশুলিয়া এবং গাজীপুরের একাংশে ছিনতাই করছে বাদল গ্রুপ। এদের সক্রিয় সদস্য ১০-এর বেশি। বাদল গ্রুপের স্থান মিরপুর, গাবতলী, আশুলিয়া ও গাজীপুর। এদের সক্রিয় সদস্য রয়েছে শরীফ, সাঈদ, সেলিম, শাহজাহান মোল্লা, কবির, বিভাস, আক্তারসহ বেশ কজন।

রাজধানীর কলাবাগান, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, ধানমন্ডি এলাকায় সক্রিয় ইলিয়াস গ্রুপ। পিকআপে চেপে ঘুরে বেড়ায় গ্রুপটির সদস্যরা। এরা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার ছিনতাইয়েও জড়িত। ইলিয়াস গ্রুপের স্থান কলাবাগান, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, ধানমন্ডি। এদের সক্রিয় সদস্য রয়েছে ১০- ১২ জন।

রাজধানীর গুলশান, বনানীসহ অভিজাত এলাকায় ছিনতাইয়ে জড়িত কাশেম গ্রুপ। গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করে তারা। কাশেম গ্রুপের স্থান গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ রাজধানীর অভিজাত এলাকা । এদের সক্রিয় সদস্য রয়েছে শাহে আলম, মুন্না, মজিদ, মোসাদ্দেক, সাজু, বাবুল, আফজালসহ আরও বেশ ক’জন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, লালবাগ, তেজগাঁও এলাকায় সক্রিয় আলিম গ্রুপ। এসব এলাকার বাইরেও ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আলিম গ্রুপের স্থান গুলশান, মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, লালবাগ, তেজগাঁ। এদের সক্রিয় সদস্য রয়েছে আনসার, সাগর, ছগির, আলমগীর, রমজান, সাইদুর, উজ্জ্বল, খালেক, ওসমান, জহুরুলসহ আরও ক’জন

এছাড়া বেশকিছু ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় ধর্মীয় উগ্রবাদী সংগঠনের সদস্যদের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায়, এ বিষয়ে আলাদা নজরদারির পরামর্শ অপরাধ বিশ্লেষকদের।

প্রয়োজনে ছিনতাই দমনে আলাদা ইউনিট গঠনের ওপরও জোর দি”েছন অপরাধ বিশ্লেষকেরা। -তথ্যসূত্র : ইনডিপেন্ডেন্ট টিভি