শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার রায় সোমবার এবার ১৩ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হবে কী?

রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার রায় সোমবার এবার ১৩ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হবে কী?

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় দীর্ঘ ১৩ বছর পর সোমবার রায় ঘোষণা করা হবে। তবে বিচার প্রার্থীসহ অনেকেরেই আশঙ্কা ১৩ বছরের এই প্রতীক্ষার অবসান হবে কী? এই রায়ের অপেক্ষায় আছে পুরো দেশ।

এর আগে গত ১৬ জুন এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য থাকলেও বিচারক কোনো কারণ উল্লেখ না করেই ওইদিন রায় ঘোষণা না করে ২৩ জুন নতুন দিন ধার্য করেন। তবে আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে যে সাক্ষীদের বক্তব্য, যুক্তিতর্ক ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয় পর্যালোচনা শেষ করে রায় প্রস্তুত করতে না পারায় ওইদিন রায় ঘোষণা করতে পারেননি বিচারক।

গত ২৮ মে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ১৬ জুন রায়ের প্রথম দিন ধার্য করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন।

এর আগে গত ৮ ও ১৮ মে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা নিজ নিজ পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। গত ১৮ মে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে দাবি করে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকউটর এসএম জাহিদ সরদার।

অপরদিকে আসামিপক্ষে পাল্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে সব আসামির খালাস চান অ্যাডভোকেট টিএম আকবর।

এর আগে গত ৫ মে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি ইন্সপেক্টর আবু হেনা মো. ইউসুফের পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

গত বছরের ১৪ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু হেনা মো. ইউসুফ প্রথম সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তবে মোহাম্মদপুরের যে বাড়িতে হত্যা পরিকল্পনা হয়েছিল, সে ঘটনাস্থলের মানচিত্র সেদিন তিনি আদালতে উপস্থাপন করেননি। সে জন্য পুনরায় তাকে আদালতে এসে সাক্ষ্য দিতে হয়েছিল।

এ নিয়ে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক হয়েছিল আদালতে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করলে আসামিপক্ষ এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টেও গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো আদেশ নিয়ে আসতে না পারায় শেষ পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তার পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণ আটকাতে পারেনি আসামিপক্ষ।

গত বছরের ১০ নভেম্বর আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন। এ সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

এর আগে গত বছরের ২৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ মামলায় ৮৪ জনের মধ্যে ৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল ১ বৈশাখে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে জঙ্গিদের ভয়াবহ বোমা হামলায় ঘটনাস্থলে ৯ জন এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনসহ মোট ১০ জন নিহত হয়। এছাড়াও আরো বহুলোক কম-বেশি আহত হন।

দীর্ঘদিন ধরে এ মামলাটির সঠিক কোনো তদন্ত করা হয়নি। বহুবার এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন করা হয়।

গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডি পুলিশকে। ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে সিআইডি পুলিশ। চার্জশিট দাখিলের পর ২০০৯ সালের ১৬ এপ্রিল ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত।

মামলার ১৪ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, আরিফ হাসান সুমন, শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আব্দুর রউফ, মাওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া ও মাওলানা আকবর হোসাইন কারাগারে আছেন।

আসামি মাওলানা মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান ও মুফতি আব্দুল হাই পলাতক।