সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > রংপুরে আড়াই হাজার কোটি টাকার সবজি উৎপাদন

রংপুরে আড়াই হাজার কোটি টাকার সবজি উৎপাদন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
রংপুর: ‘কয়েক বছর আগেও আমার সংসার চলতো ধার-দেনা করে। এখন নানারকম শাক- সবজি চাষ করে সংসারের অভাব দূর হয়েছে। এখন কারো কাছে ধার-কর্জ করা লাগে না। ছেলেমেয়েকেও নিয়মিত স্কুলে পাঠাতে পারছি। আমার দিন ভালই চলছে।’

শাক-সবজি চাষ করে ভাগ্য পরিবর্তনের কথা এভাবেই তুলে ধরেন মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্ধ ইউনিয়নের চাষি তারেক মিয়া।

তিনি জানান, এবার ৫০ শতক জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মুলাসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি চাষ করেছেন।

একই ইউনিয়নের আলী, সাত্তার, আনিছুর, রংপুর সদর উপজেলার আমিনুল, রহমান, পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের খালেক, ছাত্তার, আলী, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নজরুল হক, হামিদ, আবু তাহের, ওসমান আলী, আব্দুল মতিনসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার কৃষকরা শাক-সবজির চাষ করে তাদের সংসারের অভাব দূর করেছেন।

কৃষকরা জানান, শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করে তাদের আয় ভালো হচ্ছে। এদিয়ে তাদের সংসারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ ফিরে এসেছে।

তারা জানান, এখন তাদের শাক-সবজি বিক্রির জন্য হাটেও যেতে হয় না। ব্যাপারিরা বাড়িতে এসে শাক-সবজি কিনে নিয়ে যান।

ব্যাপারিরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে সবজি সরবরাহ করে বলে জানান চাষিরা।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, শীত মৌসুমে এই বিভাগের ৮ জেলায় শাক-সবজির আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে।

প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ১৬ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে শুধু শীত মৌসুমেই উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন।

প্রতিকেজির বাজার মূল্য ২০ টাকা ধরা হলেও বর্তমান বাজারে এসব সবজির মূল্য দাঁড়ায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

এছাড়া গত রবি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে প্রায় ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে করলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পুঁইশাক, মুলা, টমেটো, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাক-সবজির আবাদ হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের উৎপাদিত শাক-সবজি এ অঞ্চলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের অভাব মোচনের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ খন্দকার মেজবাহ উল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের সুষ্ঠু মনিটরিং এর ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে শাক-সবজির আবাদ ভাল হচ্ছে।

তবে কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, বোরো, আমন ও আলুর পাশাপাশি শাক-সবজিও এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তবে এ নিয়ে মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের সে ধরনের কোনো মনিটরিং নেই।

শাক-সবজি বলেই অনেক সময় কৃষি পণ্যের তালিকায় স্থান দিতে কৃষি কর্মকর্তারা গড়িমসি করেন। ফলে অনেক সময় কৃষকরা কাঙ্খিত ফলন থেকে বঞ্চিত হয়।