লাইফস্টাইল ডেস্ক ॥
ঢাকা: সুন্দর হাসি আমাদের মন ভরিয়ে দেয়। সেই হাসির মাধুর্য আরও বাড়াতে ঠিক রাখতে হবে দাঁতের স্বাস্থ্য। দাঁত রাখতে হবে ঝকঝকে।
ধরুন, দাঁত সুস্থ রাখতে আপনি মিষ্টি জাতীয় কিছু খান না। দিনে দু’বার দাঁত মাজেন। দাঁতের যতœ নিচ্ছেন নিয়মিত। এভাবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরেও নিজের অগোচরে কিছু ভুল হয়েই যায়।
এছাড়া চারপাশে দাঁতের ক্ষতিকারক খাবার ও পানীয় রয়েছে অহরহ, যা দাঁতের এনামেলা, আবরণ ও রং নষ্ট করে দেয়। এতে বয়স বাড়ার আগেই মুখের সৌন্দর্যহানি ঘটতে পারে। যেমন, বেশি শর্করা দাঁতের গর্তের জন্যে দায়ী অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয়, শক্ত বস্তু দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে এবং এমন কিছু তরল খাবার রয়েছে যা মুখ শুকিয়ে ফেলে।
বরফ
এখন জীবন উপভোগের অন্যতম অংশ হয়ে গেছে ঠাণ্ডা জাতীয় কিছু খাওয়া। যেমন, আইসক্রিম, কোল্ডড্রিংকস, ক্রাসার প্রভৃতি। শিশুরা তো বটেই, বড়দের পছন্দের তালিকায়ও আইসক্রিম এগিয়ে। কিন্তু দন্তচিকিৎসকরা বলেন, দাঁত সুস্থ রাখতে হলে যে খাবারগুলো সবার আগে না বলতে হয়, আইসক্রিম সেই তালিকায় সবার আগে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের দাঁতের চিকিৎসক জেনিস ইয়ানি বলেন, আইসক্রিম দাঁতের জন্যে ভালো- এমন ভুল ধারণা পোষণ করার মতো লোকের অভাব নেই।
শুকনো ফল
কিশমিশ, খুবানি বা আলু বোখারার মতো শুকনা খাবার নানা কারণে দাঁতের জন্যে ক্ষতিকর। এগুলো খেলে দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকে এবং মুখের ভেতরে প্রচুর শর্করা ছড়িয়ে দেয়। সব ধরনের ফলমূলেই প্রাকৃতিকভাবে শর্করা থাকে। কিন্তু যেসব ফল দাঁতে আঠার মতো লেগে থাকে বা দৃঢ়ভাবে এঁটে থাকে, সেগুলো প্রচুর অ্যাসিড নিঃসরণকারী জীবাণু বহন করে। আপনার দাঁত নষ্ট করে দিতে এগুলোই যথেষ্ট।
রুটি-চিপস
খাবারের দোকানগুলোতে রুটি ও মিষ্টি- দুটো খাবারই বেশি চোখে পড়ে আমাদের। যখন আপনি রুটি খাচ্ছেন, আপনার মুখের লালা ভেতরের এনজাইম কার্বোহাইড্রেড আলাদা করে ফেলে। তাৎক্ষণিকভাবে তা শর্করায় পরিণত হয়। এভাবে যখন আপনি ক্রমাগত চিবাতে থাকবেন, পাস্তার মতো রুটি ও অন্যান্য কার্বোহাইড্রেড মিষ্টিতে রূপান্তরিত হয়। নরম পেস্টি দাঁতের ফাঁকে এঁটে থাকে। এতে দাঁতে গর্ত তৈরির জন্যে দায়ী জীবাণুর জন্ম হয়। পটেটো চিপসের মতো কচকচ করে চাবিয়ে খেতে হয় এমন খাবারও আপনার দাঁতের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
অ্যালকোহল
দাঁতে ক্ষত তৈরিতে সবচেয়ে বেশি দায়ী অ্যালকোহল। এতে খুব শর্করা বা রঞ্জক থাকে এমনটাও নয়, বরং অ্যালকোহল আপনার মুখ শুষ্ক করে রাখে। ডা. ইয়ানি বলেন, যেসব মানুষ খুব বেশি অ্যালকোহল সেবন করেন, তাদের মুখের লালার প্রবাহ কমে যায়, মুখ শুকিয়ে যায়। এতে দাঁতের ক্ষয় বাড়ে এবং নানা রকম প্রদাহ তৈরি হয়। মুখে সঠিক লালপ্রবাহ দিয়েই মানুষের হজম প্রক্রিয়া শুরু হয়, এতে খাদ্যের কণা ও জীবাণু দাঁত থেকে পেটে চলে যায়। এছাড়া লালাপ্রবাহ প্রদাহ ও সংক্রমণ থেকে নরম কোষকে রক্ষা করে।
কফি, চা ও এনার্জি ড্রিংকসসহ ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় মুখের ভেতরটা শুকিয়ে ফেলে এবং দাঁতে গর্ত তৈরি করতে সহায়তা করে।
টক-মিষ্টি
মিষ্টি জাতীয় খাবার ও দাঁতের গর্ত একই সঙ্গে এগিয়ে চলে। বেশি মিষ্টি খেলে দাঁতে গর্ত হবেই। কিছু কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার আছে, যা খুব শক্ত। যে কোনো টক-মিষ্টিতে অতি উচ্চমাত্রায় অ্যাসিডিক উপাদান থাকে, যেটা দাঁতের এনামেল নষ্ট করে দেয়। যদি আপনি ভাবেন, ভালোভাবে দাঁত মাজলেই সব ঠিক হয়ে যাবে, তবে সেটা আরও বেশি খারাপ হবে। দাঁতের যতœআত্তি নিতে খাবারের ক্ষেত্রেও আপনাকে সচেতন হতে হবে।