বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ মানবাধিকার কর্মী হিসেবে একসময় যৌনজীবীদের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার কিছু অংশ সামুর ব্লগারদের সাথে শেয়ার করার অভিপ্রায়ে এই লেখাটি লেখছি। লেখার সময় চেষ্টা করেছি সবোর্চ্চ নিমোর্হ দৃষ্টিভঙ্গী ধরে রাখতে। বিষয়ের সার্বিকতা বজায় রাখার জন্য কিছু খোলামেলা আলোচনা করেছি। আশা করি পাঠকেরাও খোলা মন নিয়ে পড়বেন।লেখাটিতে নিজস্ব মতামত বা দৃষ্টিভঙ্গীর ব্যবহার সচেতনভাবেই বাদ দিয়েছি। যতটুকু লিখেছি তার সবটাতেই কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও যৌনজীবীদের মতামতের প্রতিফলন ঘটেছে।
আরেকটি বিষয়, লেখাটির কিছু কিছু অংশ অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযোগী নাও হতে পারে।
যৌনজীবী বলতে কি বোঝায়:
যারা যৌন কর্মের বিনিময়ে অর্থ উপার্যন করে তাদের সাধারীনকৃতভাবে যৌনজীবী বলা হয়। অনেক স্থানে একাডেমিক টার্ম হিসেবে যৌনকর্মী বা (ঝবী ডড়ৎশবৎ) শব্দটি ব্যবহার করা হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতিতে এই শব্দ চয়ন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সাধারন প্রমিত বাংলা ভাষার মত অন্যান্য স্থানেও এদের পতিতা (চৎড়ংঃরঃঁঃব) বলা হয়। প্রচলিত কথ্য বাংলা রূপগুলো উল্ল্যেখ না করলেও চলে। রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে কিংবা ঝগড়া-ঝাটিতে কান পাতলেই এই শব্দের বিভিন্ন প্রতিরূপগুলো শোনা যায় যা হয়তো এই ধরনের লেখায় ব্যবহারের উপোযোগী নয়।
এই লেখায় যৌনকর্মী বা পতিতা বিতর্কে না গিয়ে মাঝামাঝি শব্দ যৌনজীবী ব্যবহার করা হয়েছে।
যৌনকর্মী বনাম পতিতা: হালের বিতর্ক:
যারা যৌন কর্মের বিনিময়ে অর্থ রোজগার করে তাদের কে কি কর্মজীবী নারী বলা হবে নাকি সামাজিক ও পারিবারিক ব্যবস্থার চরম বিরূদ্ধস্রোত হিসেবে পতিত নারী বা পতিতা বলে অভিহিত করা হবে এই নিয়েই বিতর্কের অবতারনা।
-যৌনকর্মী দল:
এটি পৃথিবীর প্রাচিনতম পেশাগুলোর অন্যতম। সরল সমাজগুলো থেকে শুরু করে হালের জটিল আধুনিক সমাজ সব প্রেক্ষাপটেই নারীদের একাংশ যৌনতা বিক্রির মাধ্যমে বেচে থাকার উপকরণ সংগ্রহ করে। শুধু তাই নয় তাদের আয়ের উপর ভিত্তি করে বেচে থাকে নির্ভরশীল অনেক মানুষ। স্থানীয় অর্থনীতিতেও ব্যপক প্রভাব ফেলে এই কাজ। তাই এটি একটি পেশা এবং এই পেশাজীবীদের কর্মী বলাই শ্রেয়।
-পতিতা দল:
এই অংশের মানুষ মনে করেন যৌনতা বিক্রি করা একটি মারাতœক নৈতিক ও সামাজিক অপরাধ। বিবাহ বর্হিভূত যৌনতাকে তারা নৈতিকতার দৃষ্টিতে অন্যায্য বলে বিবেচনা করেন। তাদের যুক্তি হলো যৌনকর্মকে যদি পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় তাহলে চুরি, ডাকাতি কিংবা সামাজিকভাবে অগ্রহনযোগ্য অন্যান্য কাজকেও মেনে নেয়া যায়, কারন চোর-ডাকাতের আয়ের উপর ভিত্তি করেও বেচে থাকে অনেক মানুষ। এই অর্থও স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু সেটা অসম্ভব। তাই যৌনজীবীতা কোন পেশা হতে পারে না বরং এটা মারাতœক একটা সামাজিক স্খলন।
কিন্তু যারা আমরা সাধারন জনতা তাদের ভাষ্য কি হতে পারে? সাম্রাজ্যবাদী ব্যবসাদারী লোকজন কিংবা রক্ষণশীল ভাবাপন্ন জনগোষ্ঠী তারা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গীতে যাই বলুক না কেন, কে কি ভাবে যৌনজীবীদের দেখবে এটা একান্ত নিজস্ব বিষয়।
কয় ধরনের যৌনজীবী আছে:
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যৌনজীবীদের চার ধরন দেখা যায়। যথা:
– পতিতালয়ের যৌনজীবী
– রাস্তার যৌনজীবী
– আবাসিক হোটেলের যৌনজীবী
– বাসা ভাড়া করা আবাসিক যৌনজীবী
এছাড়া সময়ের উপর ভিত্তি করেও ভাগ করা যায়। যেমন:
– পুরা বেলা
– হাফ বেলা
– খ্যাপ মারা
– সময়-সুযোগ পেলেই কাজ করা
– শুধু প্রয়োজনের সময় কাজ করা
যে কারনে নারীরা এই পেশায় আসে:
– নিতান্তই পেটের দায়ে
– ভালো চাকরীর প্রলোভনে প্রতারিত হয়ে
– প্রেম বা বিয়ের মিথ্যে আশ্বাসে পুরুষ সঙ্গী কতৃর্ক প্রতারিত হয়ে
– ব্ল্যাক মেইলড হয়ে
– সংসারের বাড়তি খরচ সামাল দেবার জন্য
– নিজের বাড়তি হাতখরচ মেটানোর জন্য
– প্রেমে ব্যর্থতা কিংবা মানসিক হতাশার জন্য (?)
– সময় কাটানোর জন্য
– নেশার খরচ যোগাবার জন্য
– যৌনতা/ বহুগামীতা উপভোগ করার জন্য
কারা এই পেশায় আসে:
– গ্রামের সহজ সরল কিশোরী
– গ্রামের বিধবা
– গার্মেন্টস কর্মী
– শহরের রাস্তা ও উদ্যান ভিত্তিক মহিলা (বিশেষত: কিশোরী)হকার
– বাসা বাড়ীর কাজের ছুটা বুয়া
– ছাত্রী (স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের)
– নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত ঘরের গৃহবধূ
– ফিল্ম বা মিডিয়া লাইন সম্পর্কে উচ্চাকাঙ্খী সহজ সরল রমনী
খদ্দের কারা:
যৌন কাজ করার জন্য যারাই যৌনজীবীদের দ্বারস্থ হয় তারাই খদ্দের। তারা সাধারনত: পুরুষ। নিদির্ষ্ট কোন পেশাজীবী নয় তারা। তারপরও যৌনজীবীদের মতানুসারে যারা সাধারনত বেশী পরিমানে খদ্দের হয় তারা হলো:
– রিক্সাঅলা, ঠেলাঅলা, হকার
– আন্ত:জেলা ট্রাক-বাস ড্রাইভার
– কলেজ ছাত্র
– মাদকাসক্ত ব্যাক্তি
– শিল্প-সংস্কৃতিক/ মিডিয়া লাইনের লোকজন
– স্থানীয় মাস্তান
– আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ ইত্যাদি।
শেষ দুই দল সাধারনত: বিনামূল্যে শমসুর ভূমিকায় অভিনয় করে থাকে।
যে কারনে যৌনজীবীরা সহজে তাদের পেশা ছাড়ে না:
– যৌনজীবীরা পেশা ছাড়ে না কাচা অর্থের ব্যপক ছড়াছড়ির জন্য। যে কারনে চরমপন্থীরা আনসারের চাকরী ছেড়ে আবার চরমপন্থী হয়।
– একবার যখন নষ্ট হয়েই গেছি তখন আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবো না। (তাদের জবানীতে)
– ফিরে গেলে বাবা-মা/ পরিবার গ্রহণ করবে না
– ফিরে গেলে সমাজে টিকে থাকা যাবে না।
– কারো উপর অভিমান থেকে নিজেকে পোড়ানোর জন্য
– প্রতিদিন নতুন নগ্নতা ও নতুন যৌন বৈচিত্রের নেশায়
জেনে রাখা ভাল:
– ৯২% যৌনজীবী কোন না কোন যৌন রোগে আক্রান্ত। যার মধ্যে বেশীরভাই মারাতœক ও দীর্ঘমেয়াদি। বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস ইত্যাদি একজন পেশাদার যৌনজীবীর শরীরকে নিরাপদ পোষক হিসেবে ব্যবহার করে। ক্ষতযুক্ত প্রশস্ত যৌনাঙ্গ যৌনজীবীদের একটা সাধারন বৈশিষ্ট্য। যতই কন্ডম বা অন্যান্য ব্যবস্থা নেয়া হোক না কেন এই সকল জীবাণুগুলো অতি উচ্চমাত্রার সংক্রমক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। কোন লাভ হয় না।
– পেশাদার অনেক যৌনজীবী আতœরক্ষা ও আক্রমনের জন্য জিভের নীচে বিশেষ প্রকৃয়ায় অর্ধেক ভ্লেড লুকিয়ে রাখে যা যেকোন সময়ে মারাতœক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
– অনেক যৌনজীবী যৌন কাজের বদলে ব্ল্যাক মেইল করে আরো অধিক উপার্জনে আগ্রহী হয়। যেমন: রিকসা/ টেক্সীতে উঠে কিংবা সিনেমা হলের অন্ধকারে কিছুটা যৌনতার পর চিৎকার করার হূমকী দিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়। আবার বাপের বাড়ী যাওয়া বৌয়ের খালি বাসা বাড়ী কিংবা মেসে যৌনকর্ম সম্পাদনের পর অবস্থান চিনে পরে যেকোন সময়ে আবার এসে সব ফাস করার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় ইত্যাদি।
– অধিকাংশ পেশাদার যৌনজীবী মারাতœকভাবে মাদকে আসক্ত থাকে। মাদকাসক্তির সাথে যৌন রোগের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।
টুকরো তথ্য:
-যৌনজীবীদের নিজস্ব কিছু সাইন বা ভঙ্গী রয়েছে। আঙ্গুল, চাহনী, বিশেষ হাটার ভঙ্গী, সম্বোধন ইত্যাদির মাধ্যমে তারা খদ্দের ঠিক করে।
-বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক যৌনকর্মীদের গ্রেফতার করা হয় সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলো থেকে অনেক বেশী। শুক্র, শনি বার কোর্ট বন্ধ থাকায় চালান হয় না। তখন আটক যৌনকর্মীদের অবস্থান হয় থানা হাজতে। বাদবাকী নাটকটা পাঠকের বিবেচনা।
-ভাড়া বাসা ভিত্তিক আবাসিক যৌনকর্মীদের এমন কি এপার্টমেন্টে বাসাভাড়া করে থাকতে দেখা যায়। সেখানে একজন সর্দার্নী থাকে। প্রতিবেশীরা জানেও না তাদের পাশের বাসায় কি হয়। প্রতিবেশীদের বলা হয় ভাই বা বোনের মেয়েরা পড়ালেখা/ চাকুরী ইত্যাদি উপলক্ষ্যে তার কাছে থাকে। কিন্তু একজন বাঙ্গালী হিন্দু মহিলার বোনের দুই মেয়ে কিভাবে পাহাড়ী মঙ্গলয়েড হয় তা জিজ্ঞাস করার কৌতুহল মৌচাক মার্কেট সংলগ্ন একটি এপার্টমেন্টের অধিবাসীদের মনযোগ আকর্ষণ করার সময় পায় না।
– যৌনজীবীদের মধ্যে যারা দেখতে শুনতে ভাল আর চালাক চতুর কিংবা উচ্চাকাঙ্খী তাদের একটা স্বপ্ন থাকে বিদেশে গিয়ে এই কাজের মাধ্যমে অধিক আয় করার। মধ্যপ্রাচ্য কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার উন্নততর কিছু দেশ বিশেষত: দুবাইকে তারা এই কাজের স্বর্গরাজ্য মনে করে।
– অধিকাংশ যৌনজীবীদের একাধিক দালাল থাকে। সাধারণত: মোবাইলের মাধ্যমে এরা খ্যাপের (খ্যাপ – যৌনজীবীদের ব্যবহৃত শব্দ। মানে – চুক্তি, কাজ পাওয়া ইত্যাদি) খবর পায়। দালালদের আয়ও অনেক শিক্ষিত চাকুরীজীবী মধ্যবিত্তের চেয়ে অনেক বেশী হয়।
– সমাজের গভীরে অনেক রিক্রুটার চলাফেরা করে যাদেরকে আমাদের মত সাধারন মানুষেরা ঘুর্ণাক্ষরেও সন্দেহ করতে পারবেনা। কারো কারো কথাবার্তা মমতাময়ী মা-খালাদের মত, কারো কারো বেশভূষা বেশ রুচিশীল, রীতিমত শিল্প সম্মত। এরা ঘুরে ফিরে খবর নেয় কারা স্বামীর সাথে বনিবনাহীনভাবে আছে কিংবা যৌনতায় অসুখী, কারা চরমভাবে নিরূপায়ী, কারা উচ্চাকাঙ্খী, কারা যৌনতার দিক থেকে বহুগামীতার প্রত্যাশায় ব্যকুল – ইত্যাদি। সুবিধামত ও বিভিন্ন মেয়াদী মোটিভেশান দিয়ে তারা নারীদের এই পেশায় টেনে নিয়ে আসে।
– বড় বড় মাছের বাজারে পুরাতন কিছু ব্যবসায়ী আছে যারা দূর্লভ কিংবা বড় আকৃতির লোভনীয় কোন মাছ পেলে নির্দিষ্ট কোন কোন ক্রেতাদের খবর দেয় কিংবা সরাসরি বাসায় পাঠিয়ে দেয়। ঐসকল ক্রেতাও দাম-দরের তোয়াক্কা না করে মাছ কিনে নেয়। ঠিক একই ভাবে কিছু খদ্দের আছে যারা নতুন কোন কুমারী মেয়ে এই লাইনে এলে খবর পেয়ে যায়। বিশেষত: কিশোরী বা সদ্য তরুনীদের চাহিদা ব্যাপক বেশী। এরা মেয়েদের কুমারীত্ব ছিন্ন করার বিষয়ে বিশেষভাবে আসক্ত থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে পনের-কুড়ি হাজার টাকাও তারা অবলীলায় খরচ করে ফেলে।
– একটু বয়েসী যৌনজীবীদের চাহিদা বিশেষভাবে হ্রাস পায়। তখন তারা চার-পাচ জন কমবয়েসী মেয়ের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত হয়। এদেরকে সর্দারনী বলা হয়। প্রভাবশালী মহলে এই সব সর্দারনীদের থাকে বিশেষ যোগাযোগ। বেশী বয়েসী যৌনজীবীদের অনেকে দালাল কিংবা রিক্রুটার হিসেবেও কাজ করে।
– একজন পেশাদার যৌনজীবীকে বিশেষ অবস্থায় এক দিনরাতে পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশজন খদ্দের নিতে দেখা গেছে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটা সত্য। অধিক সংখ্যক খদ্দের নেয়ার জন্য তারা কিছু প্রচলিত মন্ত্র জপে, কোমরে বাধে গাছের শিকড়। কি গাছের তা জানা যায় নি। সেটা টপ সিক্রেট। তাদের দৃষ্টিতে খদ্দেররা বস্তা বিশেষ। দুএকটা ব্যাতিক্রম ছাড়া বেশীরভাগ খদ্দের বিপুল বিক্রমে শুরু করলেও দুতিনটা দপাদপি- তারপর কাজ শেষ। যৌনকর্মে যৌনজীবীদের আচরন থাকে পুরোপুরিভাবে নিস্কৃয় ও অসহযোগিতামূলক। ফলে এতো সংখ্যক খদ্দের নিতে তাদের মোটেও বেগ পেতে হয়না।
– সবচেয়ে কম বয়সী যৌনজীবীর বয়স আট আর সবচেয়ে বেশী যৌনজীবীর বয়স ছাপ্পান্ন পর্যন্ত দেখেছি যারা নিয়মিত যৌনকর্ম করে যাচ্ছে।
একটা গল্প বলে লেখাটা শেষ করছি। মনির হোসেন একজন বিদেশ ফেরত ব্যাক্তি। বিদেশে থাকা অবস্থায় যৌনজীবী গমন তার অভ্যাসে পরিনত হয়। দেশে ফেরার পর প্রথম প্রথম হাতে যখন কাচা পয়সা ছিল তখন দুহাতে এই খাতে টাকা উড়াতো। ফলে: বাসা ভাড়া করা আবাসিক এক যৌনজীবী সর্দানীর কাছে সে ছিল আদরের পাত্র। মাঝারি ধরনের মান সম্মত এক ভাড়া করা ফ্ল্যাটে চলতো ঐ সর্দারনীর যৌন বানিজ্য। বাহিরের পেশা ফ্লিমের সহনায়িকা (এক্সট্রা) স্যুটিং স্পটে রিয়াজ-ফেরদৌসের কাধে হাত রাখা কয়েকটি ছবি বড় করে বাধিয়ে বসার ঘরে টাঙ্গানো। কিন্তু একসময় হাত খালি হতে থাকে মনিরের। আস্তে আস্তে শুরু হয় বাকীতে কাজ করার প্রকৃয়া। পুরাতন খাতিরে খালাও (সর্দারনী) তাকে সুযোগ দিত। শুধু তাই নয়, নগদ টাকাও ধার দেয়া হলো বেশ কিছু। তো ধারের পরিমান যখন প্রায় বিশ হাজার আর মনিরের যোগাযোগও কমে গেল তখন ঐ সর্দারনী মনিরকে চাপ দিতে থাকে পাওনা টাকা আদায় করার জন্য।
চাপ যখন প্রচন্ড, তখন মনির একদিন ফোন করলো থানায়। ব্যাস পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঐ এপার্টমেন্ট থেকে সদলবলে গ্রেফতার করলো সর্দানী ও তার পুরো দলকে। তার পরের তিন/ চার মাস ঐ সর্দারনীর থানা-পুলিশ, আদালত, জামিন, নতুন মেয়ে জোটানো, নতুন বাসা নেয়া ৃ. আর মনিরের খবর নেয় কে!
এভাবেই অভাব-প্রাচুর্য, উত্তেজনা-ঝুকি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে গড়িয়ে চলে বাংলাদেশের একজন সাধারন যৌনজীবীর জীবন।