শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > যেসব বিবেচনায় বাবা-মা হত্যায় ঐশীর মৃত্যুদণ্ড

যেসব বিবেচনায় বাবা-মা হত্যায় ঐশীর মৃত্যুদণ্ড

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ঢাকা : পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানের ‘ডাবল’ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে যেসব বিবেচনায় বাবা-মা হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন রায়ের আগে তা উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণার আগে ট্রাইব্যুনালে বলেন, আসামি ঐশীর বয়স নিয়ে বিতর্ক ছিল। আসামিপক্ষ ঐশীর বয়স ১৮ নিচে দাবি করলেও তা তারা সাক্ষ্য প্রমাণে আদালতে প্রমাণ করতে পারেনি। সে প্রাপ্তবয়স্ক তা রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য প্রমাণে প্রমাণ করছে।

এছাড়া আসামি ঐশীর হত্যাকাণ্ডের আগে নেশাগ্রস্ত ছিল মর্মে ৮৫ ধারায় সুবিধা দাবি করলেও তা তারা প্রমাণ করতে পারেনি বরং রাষ্ট্রপক্ষ ঐশী পরিকল্পিতভাবে ঠাণ্ডা মাথায় তার মা-বাবাকে হত্যা করেছে তা দালিলিকভাবে প্রমাণ করেছে।

বিচারক সাঈদ আহমেদ আরো বলেন, আসামি ঐশী কর্তৃক তার মা-বাবাকে হত্যার ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। হঠাৎ উত্তেজনার বসে সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়নি।

প্রথমে সে তার মাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ঘটনারদিন পর্যন্ত বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্য তার ছিল না। মাকে হত্যার পর বাবাকে হত্যা না করলে সে বাঁচতে পারবে না ওই কারণে সে তার বাবাকেও হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডটি ছিল নারকীয়। নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ সাজা হওয়াই উচিৎ।

অনেকে আসামি ঐশীর বয়স অল্পের কারণে সর্বোচ্চ সাজা দেয়া নিয়ে সমালোচনা করতে পারেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল তা মনে করে না। নারকীয় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের রায় সর্বোচ্চ হওয়াই উচিৎ। তাই যেহেতু মা এবং বাবাকে হত্যার জন্য পৃথক পৃথকভাবে চার্জ গঠন করা হয় সে জন্য তার মাকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ড এবং বাবাকে হত্যার জন্য পৃথকভাবে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো।

ওই হত্যাকণ্ডের অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি। নাবালক হওয়ায় অন্য আদালতে তার বিচার চলছে। এ মামলায় ঐশীর বন্ধু জনিকে ট্রাইব্যুনাল খালাস দিলেও আশ্রয়দাতা আরেক বন্ধুকে দুই বছরের দণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো একমাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

এ মামলাটিতে ট্রাইব্যুনাল মোট ৪৯ সাক্ষির মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর মো. আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর দিন তাদের মেয়ে ঐশী রহমান রমনা থানায় নিজে আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে সে আদালতে হত্যার অভিযোগ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।